কুড়ি বছর ধরে নিয়োগ নেই, চাকরির দাবীতে ধরনা হোমিও ডিগ্রিধারীদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ আগস্ট৷৷ চাকরির দাবিতে ধরনা কর্মসূচি পালন করলেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা৷ টানা ২০ বছর চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে না, এমন-কি শূন্যপদ পূরণ করছে না ত্রিপুরা সরকার৷ তাই, অনির্দিষ্টকালের ধরনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হোমিও চিকিৎসকরা৷ কিন্তু পুলিশের অনুমতি না মেলায় আজ বিকেল পর্যন্ত ধরনা প্রদর্শন করেন তাঁরা, জানালেন অল ত্রিপুরা বিএইচএমএস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ডা. দীপঙ্কর পাল৷ তাঁর অভিযোগ, ভুয়ো চিকিৎসকে ছেয়ে গিয়েছে গোটা ত্রিপুরা৷ অথচ, রাজ্য সরকার সঠিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কোনও উদ্যোগই নিচ্ছে না৷ তাই আজ ধরনা তুলে নেওয়া হলেও, দাবি না মানা হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করার হুমকি দিয়েছেন তিনি৷


হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পরিষেবা ত্রিপুরায় মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েছে৷ কারণ, সরকারি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে প্রয়োজনের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম চিকিৎসক রয়েছেন৷ এই দাবি তুলে সংগঠনের সম্পাদক ডা. দীপঙ্কর পাল বলেন, ২০০০ সাল থেকে ত্রিপুরায় কোনও হোমিও চিকিৎসক নিয়োগ করা হচ্ছে না৷ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে কিছু সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ করা হলেও, গত কয়েক বছর ধরে কোনও নিয়োগ হচ্ছে না৷ তাঁর বক্তব্য, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক নিয়োগ করা হলেও, কোনও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়নি৷


তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় হোমিও চিকিৎসকের ৫৮টি শূন্যপদ রয়েছে৷ কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে ওই শূন্যপদ পূরণ করা হচ্ছে না৷ উপরন্তু, গত কয়েকবছরে বেশ কয়েকজন হোমিও চিকিৎসক অবসরে যাওয়ায় শূন্যপদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরায় ৩৬০ জন বেকার ডিগ্রিধারী হোমিও চিকিৎসক রয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে শুধু আগরতলায় রয়েছেন ১৫০ জন হোমিও চিকিৎসক৷ তাঁদের কর্মসংস্থানের কোনও উপায় বের হচ্ছে না৷ তার বদলে প্রতি বছরই সরকারি কিংবা বেসরকারি কলেজ থেকে হোমিওপ্যাথি ডিগ্রিধারী চিকিৎসক পাশ করে বের হচ্ছেন৷


ডা. পাল বলেন, এই সমস্যাগুলি নিয়ে ইতিপূর্বে একাধিকবার ত্রিপুরা সরকারের সাথে আলোচনা হয়েছে৷ শূন্যপদ পূরণে প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, এখন পর্যন্ত একজন চিকিৎসকেরও নিয়োগ করেনি ত্রিপুরা সরকার৷ তাঁর অভিযোগ, সারা ত্রিপুরায় ভুয়ো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকে ছেয়ে গিয়েছে৷ ফলে, মানুষ ভুল চিকিৎসা পাচ্ছেন৷ তাঁর মতে, সাড়ে পাঁচ বছর সময় নিয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ডিগ্রি অর্জন করে সেই চিকিৎসার সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ ফলে, ত্রিপুরার মানুষ প্রকৃত হোমিও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷ তার বদলে ভুয়ো চিকিৎসায় প্রতারিত হচ্ছেন৷ তাই আমরা ধরনায় বসতে বাধ্য হয়েছি, আক্ষেপ করে বলেন তিনি৷


তাঁর সাফ কথা, আজ ধরনা তুলে নেওয়া হচ্ছে ঠিকই৷ কিন্তু কাল থেকে ডেপুটেশন, বিক্ষোভ প্রদর্শন লাগাতার চলবে৷ তার হুঁশিয়ারি, দাবি মেনে না নেওয়া হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করা হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *