সুকান্ত জন্মজয়ন্তী পালিত রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ আগস্ট৷৷ বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বুধবার সুকান্ত জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়৷ এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তা সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন৷ অনুষ্ঠানে ব্যাপক সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়৷


সুকান্ত জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে, আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কমবয়সী কবি ছিলেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য৷ তিনি ১৯২৬ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ২১ বছর তিনি জীবিত ছিলেন৷ কবি সুকান্ত বিশ্ব সাহিত্যের একমাত্র কবি, যিনি সবচেয়ে অল্প বয়সে, অল্প সময়ে কবি জীবন অতিবাহিত করেছেন৷ সমাজের সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছেন৷ তিনি অত্যন্ত গরিব ঘরে জন্মেছিলেন৷ দরিদ্রতার কষাঘাতে সুকান্তের পরিবার বিপর্যস্ত ছিল৷ ছাত্র জীবন থেকেই কবি সুকান্ত সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্মজয়ন্তী, নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে৷


বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং হলে ৯৪ তম সুকান্ত জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশনের চেয়ারম্যান এস সি দাস, রাজ্য উচ্চশিক্ষা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ড. অরুণোদয় সাহা এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মধ্যশিক্ষা অধিকারের অথিকর্তা উত্তম কুমার চাকমা৷ আজকের এই অনুষ্ঠানে এবছরের কবি সুকান্ত সম্মাননা দেওয়া হয় কৈলাসহরের রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের রাষ্টরবিজ্ঞানের শিক্ষিকা শান্তশ্রী মজুমদারকে৷ রাজ্যের সাহিত্য ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে এই সম্মাননা দেওয়া দেওয়া হয়৷ সম্মাননা হিসাবে সুকান্ত প্রতিকৃতি, মানপত্র এবং কুড়ি হাজার টাকা দেওয়া হয়৷ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কম আয়ুর কবিদের মধ্যে সুকান্ত ভট্টাচার্য অন্যতম৷

ছাত্রজীবন থেকেই সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি৷ সম্পাদনা করেছিলেন হাতে লেখা দুটি পত্রিকা৷ যা তাঁর অসম্ভব প্রতিভার সাক্ষর বহন করে৷ তিনি আরও বলেন-দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধবিধবস্ত দেশের দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য৷ তাঁর রচিত কবিতায় বারবার ধরা দিয়েছে অত্যাচারিত, নিপীড়িত, শোষিত, মানুষের আত্মগাথা৷ দেশলাই, একটি মোরগের কাহিনী, অবাক পৃথিবী, ছাড়পত্র, মিঠেকড়া তাঁর রচনাগুলোর মধ্যে অন্যতম৷ দে শলাই, একটি মোররে কাহিনী, অবাক পৃথিবী, ছাড়পত্র, মিঠেকড়া তাঁর রচনাগুলোর মধ্য অন্যতম৷ তিনি বলেন, সুকান্তের কবিতা বাস্তব জীবনের মুখোমুখি হতে শেখায়৷ বর্তমান সময়ের আত্মকেন্দ্রীকতা, ব্যক্তিস্বার্থতা, আত্মমগ্ণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সৃজননশীল মনোভাব সৃষ্টি করার জন্য সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আজও প্রাসঙ্গিক৷

বক্তব্যের শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী হলে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের সাথেমত বিমিয়ও করেন৷
ড. অরুণোদয় সাহা বলেন, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যকে সামগ্রিকভাবে জানতে গেলে, তাঁর সমস্ত সৃষ্টি পড়তে হবে৷ পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থায় সকান্তের পূণর্মূল্যায়ণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন৷ এদিনেক অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিরাও সুকান্ত ভট্টাচার্যের সৃষ্ট সাহিত্য ও জীবন দর্শন নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মধ্যশিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা উত্তম কুমার চামকা৷ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি, গান ও নৃত্য পরিবেশন করে৷
স্মৃতিজুবিন ইরানি আরও বলেছেন, তামিলনাড়ু ও ঝাড়খণ্ডের মতো কয়েকটি রাজ্যের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলি ওই রাজ্যের বস্ত্র শিল্পে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদার তুলনায় অনেক কম৷ তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ওই রাজ্যগুলিকে তাদের লক্ষ্যে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, শিল্পের দ্বারা নিযুক্ত নন এমন ব্যক্তিরা মুদ্রা প্রকল্পের আওতায় আর্থিক দিক দিয়ে অতিরিক্ত সুবিধা পেতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য মন্ত্রালয় চেষ্টা করবে৷ তিনি বলেন, ৪ লক্ষ্যেরও বেশি লোকের দক্ষতা বিকাশের সংকল্প একটি বড় পদক্ষেপ এবং এটি অর্জনের জন্য অবশ্যই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা উচিত৷ মন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে তিনি বিভিন্ন রাজ্যে প্রশিক্ষণ সুবিধা দেখতে যাবেন৷


স্মৃতিজুবিন ইরানি আরও বলেন, বস্ত্রশিল্পে নিয়োজিত ৫ শতাংশ শ্রমিক এবং মুদ্রা ঋণের ১০ শতাংশ সুবিধাভোগীই হচ্ছেন মহিলা৷ সাথে তিনি যোগ করেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে অবশ্যই রেশম ও পাট খাতে মনোনিবেশ করতে হবে এবং সামর্থ প্রকল্পের অধীনে দক্ষতার লক্ষ্যগুলি পর্যালোচনা করতে হবে৷


এদিন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রকের সচিব রবি কাপুর বলেন, বিশ্বব্যাপী বাজারে ভারত খুব ছোট খেলোয়াড় এবং বস্ত্র ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে৷ তিনি জানিয়েছেন, বস্ত্র শিল্পে প্রশিক্ষিত দক্ষ শ্রমিকের ১ লক্ষ ব্যবধান রয়েছে৷ তাঁর কথায়, শ্রমিকদের দক্ষতা বিকাশে দক্ষতা স্কিমের উচ্চমান নির্ধারণ করা হয়েছে৷ তাতে, তাঁরা ওই শিল্পের দ্বারা সহজেই চাকরি পেতে পারেন৷ তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের স্তরটি খুব ভাল হতে হবে, যাতে দক্ষ শ্রমিকদের অর্থবহ কর্মসংস্থান দেওয়ার লক্ষ্য পূরণ হয়৷
সামর্থ প্রকল্পের আওতায় দক্ষতা বিকাশের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তাটি আজ অনুষ্ঠানের সময় পাঠ করা ছাডাও এ উপলক্ষে স্কিমের একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রদর্শিত হয়েছে৷ অনুষ্ঠানে একটি স্মরণিকাও প্রকাশ করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *