নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জুলাই ৷৷ ত্রিপুরার শেষ প্রান্ত সাব্রুম এখন দেশের রেল মানচিত্রে যুক্ত হতে চলেছে৷ কারণ, রেল লাইনের সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ আজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে৷ কারণ, রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার আর কে শর্মা পর্যবেক্ষণ শেষে কোন মন্তব্য না করলেও, রেল লাইন সহ যাবতীয় কোন কিছু নিয়েই তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেননি৷ ফলে, ধারণা করা অস্বাভাবিক নয়, সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবা শুরু হওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা৷
নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী আজ বিলোনীয়া থেকে সাব্রুম রেল লাইনে সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ করেন রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার আর কে সিং৷ তাঁর সাথে পূবর্োত্তর সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক যাদববাবু সহ অন্তত ৩৫ জনের বিভিন্ন আধিকারিকদের টিম উপস্থিত ছিলেন৷ বিলোনীয়া থেকে সাব্রুম পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার পথ ৬টি ট্রলিতে করে তাঁরা সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ করেন৷ তার আগে বিলোনীয়া থেকে ১১টি বগি নিয়ে একটি বিশেষ ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে সাব্রুম পৌছেছে৷
প্রতি ঘন্টায় সবর্োচ্চ ১২০ কিলোমিটার বেগে ওই লাইনে চালানো হয়েছে বলে জনৈক রেল আধিকারিক জানিয়েছেন৷
এদিন রেলের সুরক্ষা পর্যবেক্ষণকে ঘিরে মানুষের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ বিলোনীয়া থেকে সাব্রুম পর্যন্ত মাঝে তিনটি স্টেশন রয়েছে৷ জোলাইবাড়ি, থাইলুকত্রইসা(কলাছড়া) এবং মনুবাজার স্টেশন৷ ওই স্টেশনগুলিতে প্রচুর মানুষ এদিন ভিড় করেছেন৷ সাব্রুম স্টেশনে এদিন মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো৷ তাছাড়াও, বিলোনীয়া থেকে সাব্রুম পর্যন্ত পথে বহু মানুষ রেলওয়ে আধিকারিকদের হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ সাব্রুম স্টেশনে মহিলারা এদিন উলু ধবনি নিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন৷
এদিন সুরক্ষা পর্যবেক্ষণের সময় রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার আর কে সিং রতনপুর ট্যানেলটি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছেন৷ কারণ, ওই পথে রতনপুর ট্যানেলটি সবচেয়ে দীর্ঘ৷ ট্যানেলের মোট দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার৷ ফলে, ট্যানেলের নির্মাণ কাজ, অক্সিজেনের অবস্থা, বিদ্যুতিকারণ সহ যাবতীয় খুটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখেছেন তিনি৷ তাতে, অনেকটা সময় ব্যয় হয়েছে৷ এছাড়া, মনু নদীর উপর হরিনা রেল ব্রীজটিও খুটিয়ে দেখেছেন তিনি৷ এই ব্রীজে ট্রেন যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভার বহন করার ক্ষমতা, কম্পাঙ্ক এবং অতিক্রমের কত সময় প্রয়োজন সবকিছু মেপে নিয়েছেন সেফটি কমিশনার৷ মূলত, যাত্রী নিরাপত্তায় কোন ত্রুটি যাতে না থাকে, সেদিকে বিশেষ নজর দিয়েছেন তিনি৷
এদিন সুরক্ষা পর্যবেক্ষণের টিম সাব্রুম স্টেশনে পৌছাতে সন্ধ্যা ছয়টা বেজে যায়৷ এরপর তাঁরা সেখানো দাঁড়িয়ে থাকা ১১ বগির বিশেষ ট্রেনে করে সন্ধ্যা পৌণে সাতটা নাগাদ আগরতলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন৷ সাব্রুম পৌছানোর ক্ষেত্রে অনেকটা দেরী হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল, বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রী শেড, স্টেশন মাস্টারের রুম যাবতীয় কাজকর্ম সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন সেফটি কমিশনার৷ এদিন, সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি রেলওয়ে সেফটি কমিশনার আর কে সিং৷ তবে, তিনি অসন্তোষও প্রকাশ করেননি৷ ফলে, ১৫ আগষ্টের আগেই সাব্রুম পর্যন্ত যাত্রী রেল পরিষেবা শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷