নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও আইপিএফটি জোট লোকসভা নির্বাচনের মতো পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করতে চলেছে৷ বিজেপি আজ ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে৷ শরিক দল আইপিএফটি সভাপতি এন সি দেববর্মা জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েত সব আসনে তাঁর দল প্রার্থী দেবে৷ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচনে আইপিএফটি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছে না৷ এই ঘোষণা কার্য্যত ক্ষমতাসীন দুই দলের কাছে সমঝোতা ও ঐক্যের প্রশ্ণটি নতুন করে সামনে আসতে শুরু করেছে৷

আজ ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়াই হওয়ার প্রশ্ণে অস্পষ্টতা জিইয়ে রেখেছে বিজেপি৷ তবে, আবারও এককভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুতি নিয়েছে বিজেপি, তা দলের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের কথায় অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে৷ এদিন তিনি বলেন, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আইপিএফটি-র সাথে আলোচনা চলছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা নির্বাচনে বিজেপি-কে সহায়তা করবে৷ কারণ, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে সমগ্র আসনেই বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে৷ তবুও তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বিন্দ্বিত করলে সে-ক্ষেত্রে আইপিএফটি-র সাথে আবারও বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে, দাবি করেন রতন লাল নাথ৷
এ-বিষয়ে আইপিএফটি সভাপতি তথা রাজস্ব মন্ত্রী এন সি দেববর্মা বলেন, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুধু গ্রাম পঞ্চায়েতের সমগ্র আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দল৷ পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে কোন আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে না৷ তবে, বিজেপি ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই চাইলে আইপিএফটি’র কোন আপত্তি নেই, বলেন তিনি৷ তাঁর কথায়, লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হয়েছে৷ দুই শরিক দল এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে৷ শুধু তাই নয়, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের উপ-নির্বাচনেও দুই শরিক দল বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করেছে৷ তাতে, জোটে কোন প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করেন এন সি দেববর্মা৷
অবশ্য, আইপিএফটি সভাপতির সাথে দলের সহ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে ফারাক রয়েছে৷ কারণ, আইপিএফটি সহ সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল দেববর্মার কথায়, গ্রাম পঞ্চায়েতের যে সকল আসনে দলের সমর্থক বেশি সেখানেই প্রার্থী দেওয়া হবে৷ তিনি দাবি করেন, কোন কোন আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে তা স্থির করা হয়েছে৷ কয়েকদিনের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে৷
ভারতবর্ষের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে জোটবদ্ধতা নতুন নয়৷ কিন্তু, ক্ষমতাসীন জোট শরিকরা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার ঘটনা বিরল নজীর বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে৷ গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করতে গিয়ে আইপিএফটির আসল শক্তি কতটা তা সামনে এসেছে৷ ফলে, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে আইপিএফটির শক্তি আবারও পরীক্ষিত হবে৷ অবশ্য, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে থাকার সিদ্ধান্ত আইপিএফটির সম্মানরক্ষা করবে বলে মনে করা হচ্ছে৷

