স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দিল আদালত৷ সাথে আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে৷উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের পূর্ব হুরুয়ায় ২০১৭ সালে স্বামী পরিতোষ নাথ গলা টিপে খুন করেন স্ত্রী পূর্ণিমা নাথকে৷ ওই হত্যাকান্ডের ঘটনায় উত্তর ত্রিপুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গৌতম সরকার খুনের মামলায় অভিযুক্ত পরিতোষ নাথকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দেন৷ সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন৷


এ-বিষয়ে উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে ধর্মনগর থানাধীন হুরুয়ায় পূর্ণিমা নাথ ও পরিতোষ নাথের সামাজিক রীতি মেনে বিয়ে হয়৷ কিন্তু, এক মাস পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়৷ তিনি বলেন, পণের জন্য স্ত্রী পূর্ণিমাকে তাঁর স্বামী অত্যাচার করতেন৷ অভিযোগে জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে তাঁর বাপের বাড়ি থেকে এক লক্ষ টাকা এনে দিতে বলেছিলেন পরিতোষ নাথ৷ কিন্তু পূর্ণিমার বাবা রোহিনী নাথ ২০ হাজার দিতে পেরেছিলেন৷ তাতে, স্ত্রীর উপর অত্যাচার আরো বাড়িয়ে দেন পরিতোষ নাথ৷


ভানুপদ চক্রবর্তী বলেন, ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই ভোর রাত ৪টা নাগাদ স্ত্রীকে গলা টিপে খুন করেন পরিতোষ নাথ৷ ওই ঘটনায় মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ পুলিশ মৃতার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেন৷ তিনি বলেন, ওই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল সহকারী পুলিশ সুপার পারমিতা পান্ডেকে৷ তিনি তদন্তক্রমে আদালতে ভারতীয় দডবিধি ৩০২/৩০৪(বি) / ৪৯৮(এ) ধারায় চার্জশিট জমা দেন৷ এরপর আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷


ভানুপদ চক্রবর্তীর কথায়, সমস্ত সাক্ষ্যবাক্য গ্রহণ করে এবং প্রমাণের ভিত্তিতে আজ উত্তর ত্রিপুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গৌতম সরকার স্ত্রী হত্যার দায়ে পরিতোষ নাথকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেন৷ তিনি ভারতীয় দন্ডবিধি ৪৯৮(এ) ধারায় আসামী পরিতোষ নাথকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন৷ অনাদায়ে ছয় মাসের অতিরিক্ত কারাবাসের সাজা দেন৷ এছাড়া ভারতীয় দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত৷ অনাদায়ে অতিরিক্ত ছয় মাসের সাজা দিয়েছেন উত্তর ত্রিপুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গৌতম সরকার