নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জুন৷৷ সন্ত্রাস নিয়ে জোট শরিক বিজেপি-কে আজ আবারও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছে আইপিএফটি৷ সাংসদ রেবতিকুমার ত্রিপুরার বাড়িতে কোনও হামলা হয়নি, বরং বিজেপি কর্মীরা আইপিএফটি কর্মীদের ওপর ক্রমাগত হামলা চালিয়েছেন৷ বাড়ি ভাঙচুর, অগ্ণিসংযোগেই থেমে থাকেননি তাঁরা, বিজেপি কর্মীদের আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন দলের ১৬ জন নেতা ও কর্মী৷

সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে এভাবেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন আইপিএফটি-র সহ-সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল দেববর্মা৷ তাঁর কথায়, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই আইপিএফটি কর্মীরা নানা সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন৷ জোট শরিক হয়েও বিজেপি কর্মীরাই আইপিএফটি কর্মীদের মেরেছেন৷ তবে, বিজেপি এই আচরণ শীঘ্রই না বদলালে চুপ করে বসে থাকবে না আইপিএফটি৷ প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে ঝাঁপাবে দল, হুঁশিয়ারি দেন তিনি৷
মঙ্গল দেববর্মা আজ বলেন, জোট শরিক হয়েও আইপিএফটি-র প্রতি বিজেপির আচরণ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷ বিভিন্ন সময়ে আইপিএফটি-কে হেনস্থা হতে হচ্ছে৷ তিনি বলেন, বিধানসভা ভোটে জিতে বিজেপি মনে করছে এই কৃতিত্ব তাদের একার৷ কিন্তু, তারা ভুলে যাচ্ছে, আইপিএফটি-কে বাদ দিয়ে ত্রিপুরায় বিপুল জয় কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না৷ তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, বিজেপি চাইছে ত্রিপুরা থেকে মুছে যাক আইপিএফটি৷ এককভাবে ক্ষমতাভোগ করাই এখন তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য৷ তাই, প্রতিদিন নানা অজুহাতে আইপিএফটি কর্মীদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে৷ এখানেই থেমে যাচ্ছে না বিজেপি৷ ত্রিপুরার বিভিন্ন স্থানে আইপিএফটি কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে ফাঁসানো হচ্ছে৷
তাঁর দাবি, গন্ডাছড়ায় সাংসদ রেবতিকুমার ত্রিপুরার বাড়িতে হামলা হয়েছে এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু এই হামলার অজুহাতে গন্ডাছড়ায় আইপিএফটি-র ধলাই জেলা সভাপতি প্রেমসাধন ত্রিপুরার ওপর আক্রমণ চালিয়েছে বিজেপি৷ তিনি বলেন, গত ১৪ জুন রাতে প্রেমসাধন ত্রিপুরার বাড়িতে হামলা করে থেমে যাননি বিজেপি কর্মীরা৷ পরের দিন পুণরায় তাঁর বাড়িতে আক্রমণ করেছেন বিজেপি কর্মীরা৷ তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, বিজেপি কর্মীরা প্রেমসাধন ত্রিপুরার বাড়িতে ওইদিন আগুন লাগিয়ে দিয়েছে৷ তাতে তার বাড়ি ও একটি গাড়ি পুড়ে গিয়েছে৷ তিনি আরও জানান, আইপিএফটি-র সহ-সাধারণ সম্পাদক জীবনজয় রিয়াং, দলীয় কর্মী কৃপাজয় রিয়াং, উত্তম মগ, হেরেন্দ্র ত্রিপুরা তিজেন্দ্র ত্রিপুরা এবং বিশ্বজয় ত্রিপুরা বিজেপি-কর্মীদের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছেন৷ তাঁর দাবি, গত ১৫ এবং ১৬ জুন বিজেপির আক্রমণে ১৬ জন আইপিএফটি কর্মী সমর্থকদের আহত হয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানিয়েছেন৷
মঙ্গল দেববর্মার বক্তব্য, বিজেপি-র এই আচরণ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না৷ মন্ত্রিসভার দুই সদস্য আইপিএফটি-র এনসি দেববর্মা এবং মেবারকুমার জমাতিয়া ও ছয় বিধায়ক বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে এই পরিস্থিতি নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক করবেন৷ তাতে সুরাহা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷ তাই, জোট ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, জানালেন তিনি৷