নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জুন ৷৷ রেশন সপে নিত্যপণ্য সরবরাহের পরিকল্পনা করছে বিজেপি জোট সরকার৷ তাতে, রোজকার ব্যবহার্য্য বিভিন্ন সামগ্রী বাজারের তুলনায় কম দামে কিনতে পারবেন সাধারণ মানুষ৷ এদিকে, গণবন্টন ব্যবস্থায় সরিষার তেল সরবরাহের জন্য কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার৷ আজ টাউন হলে চিনি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে খাদ্য মন্ত্রী মনোজ দেব এই কথা জানিয়েছেন৷

খাদ্য ও জনসংভরণ মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, পশ্চিম জেলার সদর মহকুমায় ১০০টি রেশন সপে পরীক্ষামূলক নিত্যপণ্য সরবরাহ শুরু হবে৷ তাতে, সফলতা মিললে সারা রাজ্যে রেশন সোপে নিত্যপণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, গণবন্টন ব্যবস্থায় সরিষার তেল সরবরাহে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের কাছে সরিষা চেয়েছি৷ অনুমতি মিললে রাজস্থান থেকে সরিষা কিনে রাজ্যে তেল উৎপাদন করে গণবন্টন ব্যবস্থায় সরবরাহ করা হবে৷
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় কংগ্রেস আমলেই সমবায় আন্দোলন শুরু হইয়াছিল৷ তাতে জোর পায় বাম আমলে৷ মূলত, মহাজনী শোষণ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্যই এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল৷ তাতে, সাফল্যও হাতে এসেছিল৷ রাজ্যে বামফ্রন্টের শাসনে শহর এলাকার জন্য ল্যাম্পস এবং গ্রামীণ এলাকায় প্যাক্স গঠন করা হয়েছিল৷ তাছাড়া, জন্ম হয়েছিল আইতরমা নামক একটি বিপনী সংস্থার৷ সেখানে নিত্যপণ্য ছাড়াও বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রয় হতো বাজারের তুলনায় কম দামে৷ বেশ কয়েকবছর ল্যাম্পস, প্যাক্স এবং আইতরমার সুযোগ সাধারণ মানুষ নিলেও দলতন্ত্র ও দূর্নীতির কারণে এই সমবায়ের গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়৷
নানাহ দূর্নীতির ঘটনায় কার্য্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাম আমলের ওই সমবায় সংস্থাগুলি৷ ওই সমবায়গুলি থেকে মানুষের উপকারের বদলে স্ফীত হয়েছে সুবিধাবাদীদের পকেট৷ রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর পুণরায় সমবায়ের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের সরবরাহের চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে৷
আজ খাদ্য ও জনসংভরণ মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব জানান, সদর মহকুমায় ১০০টি রেশন সপে নিত্যপণ্য বিক্রি করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে৷ তাতে, বাজার থেকে অনেকটাই কমদামে রেশন সপ থেকে সরবরাহ করা হবে৷ তাঁর কথায়, পরীক্ষামূলকভাবে ওই রেশন সপগুলিতে নিত্যপণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ তিনি বলেন, বিগত দিনে রাজ্যের বহু মানুষ রেশনমুখী হতেন না৷ কারণ, রেশনে নিম্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হতো৷ কিন্তু, এখন প্রতিটি মানুষ রেশন থেকে চাল, ডাল ইত্যাদি সামগ্রী সংগ্রহ করছেন৷ তাঁর কথায়, এখন রেশনে চাল, ডাল, লবন, আটা, কেরোসিন এবং চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে৷ আগামী দিনে সরিষার তেল সরবরাহেরও পরিকল্পনা রয়েছে৷ প্রতি কার্ড ১ লিটার করে সরিষার তেল সরবরাহের চিন্তাভাবনা চলছে৷
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকে সরিষা সরবরাহের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে৷ কারণ, খোলা বাজার থেকে সরিষা ক্রয় করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে৷ তাই, কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিলে রাজস্থান থেকে সরিষা সংগ্রহ করে রাজ্যে তেল উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ তিনি জানান, বিভিন্ন তেল প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে সরিষার তেল ক্রয় করে গণবন্টন ব্যবস্থায় সরবরাহ করতে চাইছি না৷ কারণ, এক্ষেত্রে গুনমান বজায় রাখতে জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে৷
এদিকে, রেশন সপে নিত্যপণ্য সরবরাহে কিছু জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য ও জনসংভরণ মন্ত্রী৷ তাঁর কথায়, নিত্যপণ্য বাজার থেকে কম দামে সরবরাহের ক্ষেত্রে জিনিষপত্র ভীষণ কম দামে পেতে হবে৷ তবেই, রেশন শোপে সরবরাহ করা সম্ভব হবে৷ তাছাড়া, নিত্যপণ্য রেশন শোপে বিক্রি করা হলে ব্যবসায়ীদের উপর প্রভাব পড়তে পারে৷ তাই, সমস্ত দিক বিবেচনা করেই এ-বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জানান তিনি৷

