পঃবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে, রাজ্যপালের মন্তব্যে পাল্টা মমতা, সব পদেরই সাংবিধানিক সীমা থাকে

কলকাতা, ১১ জুন ৷৷ বিদ্যাসাগরের মূর্তি উন্মোচন করার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতার রোষের মুখে পড়তে হল স্বয়ং পঃবঙ্গের রাজ্যপালকেও৷ পঃবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে, রাজ্যপাল কেশরিনাথ ত্রিপাঠি মন্তব্যে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, সব পদেরই সাংবিধানিক সীমা থাকে৷ তাই, রাজ্যপালের রাজনৈতিক বক্তব্যকে সমর্থন করি না৷ পাশাপাশি, বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙ্গার জন্য দায়ি করেছেন পঃবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী৷

প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে যে নির্বাচনোত্তর অশান্তি হয়েছে তাতে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে দেখা করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি৷ সেখানে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা হয়৷ বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি প্রতিস্থাপন করে তিনি বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ আর রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে সেটাকে বাড়িয়ে ১২ বললেন৷ তার মানে বাকি গুলোও ভরাট করবে ওরা’’৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘রাজ্যপালের ভাষণ রাজনৈতিক৷ রাজ্যপালকে সম্মান করি৷ ওনার ভাষণকে সম্মান করি না’’৷

মমতা বলেন, ‘‘কিন্তু প্রত্যেক পদেরই একটা সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা আছে৷ বাংলাকে অবমাননা করা হয়েছে৷ বাংলাকে বাঁচাতে চাইলে, বাংলার সংসৃকতিকে বাঁচাতে চাইলে একজোট হন৷ বাংলা গুজরাট নয়৷ বাংলাকে গুজরাট বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে’’৷

একইসাথে এদিন মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন মমতা৷ তিনি বলেন ‘‘যেকোনও মৃত্যুই দুঃখের৷ আমি তৃণমূলের পাশাপাশি মৃত বিজেপি কর্মীদের পরিবারকেও সাহায্য করব৷ আমি নিজের জন্য করি না, আমি মানুষের জন্য করি৷’’

এদিকে, ‘‘বর্তমানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই দায়ী বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙ্গার জন্য৷ ওরা আমাদের সংসৃকতি ভেঙে দিতে চায়’’৷ ২৭ দিনের মাথায় বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি প্রতিস্থাপন করে এমনটাই অভিযোগ করে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার হেয়ার সুকলে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন তিনি৷এরপর পদযাত্রা করে মূর্তি নিয়ে যাওয়া হয় বিদ্যাসাগর কলেজে৷ মিছিলের পুরোভাগেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

এদিন মূর্তির প্রতিস্থাপন করে তিনি বলেন, ‘‘আজ যিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁর জন্যই ভেঙেছে বিদ্যাসাগর মূর্তি৷মূর্তি ভেঙেছে তাও কোনও আফসোস নেই ওদের৷ আগে মানবিক হও, আগে শিক্ষা সংসৃকতি জানো৷ তারপর রাজনীতি করবে৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলা গুজরাট নয়৷ আমরা গুজরাটবাসীদের ভালবাসিঊ দাঙ্গাবাজদের ভালবাসিনা’’৷

তিনি এদিন হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, ‘‘আমি বাংলাকে গুজরাট করতে দেবনা৷ তাতে আমায় জেলে যেতে হয় যাবো৷ বাংলার মাটিতে থেকে বাংলাকে অপমান করা যাবে না, আমি প্রাণ দিয়ে লড়বো৷’’

মমতার বক্তব্য, ‘‘গান্ধীজি গুজরাটে যে সন্মান পাননি, বাংলায় পেয়েছেন৷ বিদ্যাসাগর ভেঙে দিয়ে বর্ণপরিচয়কে মন থেকে ভোলানো যাবে না৷ আমাদের সংসৃকতির মননে আঘাত করে বাংলাকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *