BRAKING NEWS

বিজেপি ঝড়ে ধূলিসাৎ কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি

নয়াদিল্লি, ২৩ মে (হি.স.) দেশজুড়ে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে গেল কংগ্রেস। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ইতিমধ্যেই ৩৩৮টি  আসনে জয়লাভ করে ফেলেছে। পাশাপাশি এগিয়ে রয়েছে আরও ১৬টি আসনে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট জয়ী হয়েছে ৮৬তে। এগিয়ে ৪টিতে। নক্ষত্রপতন কংগ্রেসের। জয়ের জন্য দেশবাসীকে শুভেচ্ছা নরেন্দ্র মোদীর। স্বাগত জানিয়েছে আরএসএস। 

লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের নক্ষত্র পতন। পরাজিত শতাব্দী প্রচীন দলের হেভিওয়েট নেতা।
কর্ণাটকে চিক্কাবল্লাপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এম বীরাপ্পা মইলি পরাজিত। প্রায় ১,৮২,১১০ ভোটে বি এন বাচে গৌডার কাছে পরাজিত হতে হয় মইলিকে। গৌডা পান ৭,৪৫,৯১২ ভোট। বীরাপ্পা মইলি পান ৫,৬৩,৮০২ ভোট।  ২০১৪ সালে এই গৌডাকে হারিয়েছিল মইলি। কিন্তু এবার সেই ফলাফলের আর পুনরাবৃত্তি হল না। 

কর্ণাটকের গুলবর্গা লোকসভা আসন থেকে পরাজিত হন আরও এক হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খারগে। পরাজয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মল্লিকার্জুন খারগে বলেন, জনগণের এই রায় মেনে নিলাম। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী আমরা। যে ভুলগুলি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। 

মধ্যপ্রদেশের ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রে সাধ্বী প্রজ্ঞা কাছে হারলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং। পরাজয়ের পর দিগ্বিজয় সিং বলেন জনাদেশ মেনে নিলাম। রাজ্যের গুনা লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। অন্যদিকে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে ভোজপুরী তারকা তথা বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি কাছে হারতে হয় শীলা দীক্ষিতের। নয়াদিল্লি লোকসভা কেন্দ্রে মীনাক্ষী লেখির কাছে হারতে হয়েছে অজয় মাকেনকে। 

কেরলের ওয়ানাড লোকসভা কেন্দ্র নিজের দখলে রাখতে পারলেও আমেঠিতে স্মৃতি ইরানির কাছে হারতে হয় রাহুল গান্ধীকে।

লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভাবে জয়যুক্ত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানালেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। পাশাপাশি বিহারের ৪০টি লোকসভা আসনে আরজেডি-কংগ্রেস জোটকে চূর্ণ করে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। এখনও পর্যন্ত ৩৯টি আসনে এগিয়ে র‍য়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। বক্সরে বিজেপি প্রার্থী অশ্বিনীকুমার, বেগুসরাইয়ে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গিরিরাজ সিং চৌহান, পাটনাসাহিবে রবিশঙ্কর প্রসাদ, পূর্ব চম্পারণ থেকে বিজেপির রাঁধা মোহন সিং, সারন থেকে রাজীব প্রতাপ রুডি জয়যুক্ত হয়েছে। 

জোটের এই সাফল্যের পর জেডি(ইউ) নেতা তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বলেন, দেশজুড়ে যে বিপুল সমর্থন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন তার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানাই। জনগণ স্পষ্ট জনাদেশ দিয়েছে। ফলে আমাদের উপর অনেক দায়িত্ব এসে পড়েছে। নির্বাচনের সময় পরিস্থিতি হিংসাত্মক করে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল। কিন্তু জনগণ তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

লোকসভা নির্বাচনে কেউ যদি প্রকৃত ভাবে জয়যুক্ত হয় তবে তা ভারত। দেশের গণতন্ত্র জয়ী হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য করে দেওয়া ভাষণে এমনই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষ এই ফকিরকে ঝুলি ভর্তি করে দিয়েছে। দেশের ১৩০ কোটি মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানাই। এই জয়কে দেশবাসীর প্রতি উৎসর্গ করছি। দলমত নির্বিশেষে সমস্ত জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই। চলতি নির্বাচনে সেকুর্লারিসমের মুখোশ পরে জনগণকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে কয়েকটি দল। ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে ভারতীয় গণতন্ত্রকে অন্য উচ্চতাই নিয়ে গিয়েছে। 

গীতা শ্লোক তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদী বলেন, মহাভারতের যুদ্ধের পর কৃষ্ণ বলেছিলেন যে তিনি কারও পক্ষে নন। তিনি হস্তিনাপুরের পক্ষে। একই ভাবে চলতি নির্বাচনে কৃষ্ণের ভূমিকা পালন করেছে দেশের নাগরিকেরা। দেশবাসী জাতীয় স্বার্থকে সব চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। নতুন ভারত গড়ার জনাদেশ দেশবাসী দিয়েছে। 

এদিন দলীয় কার্যালয়ে নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানান বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, শিবরাজ সিং চৌহান, রামলাল, সুষমা স্বরাজ।

এর আগে ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ভারতবাসীদের ধন্যবাদ জানাই। যে ভাবে দেশবাসী আস্থা দেখিয়েছেন তাতে আরও বেশি কাজ করে যাবে সরকার। একাগ্রতা, কঠোর পরিশ্রমের জন্য বিজেপি কর্মীদের কুর্নিশ জানাই।


আরএসএস তরফ থেকে বিজেপির এই বিপুল জয়কে স্বাগত জানানো হয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির জয় হয়েছে বলে আরএসএসের তরফে দাবি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার আরএসএসের সরকার্যবাহ সুরেশ (ভাইয়াজি) জোশী বলেন, ভারতীয়রা ভাগ্যবান যে তারা ফের স্থায়ী সরকার পেতে চলেছে। এতে জাতীয়তাবাদী শক্তির জয় হয়েছে। গণতন্ত্রের এই বিপুল জয়ে যারা যোগদান করেছে তাদের অভিনন্দন জানাই। ভারতীয় গণতন্ত্রের আদর্শ এবং স্বতস্ফূর্ততা গোটা বিশ্বে প্রমাণিত হয়েছে। নতুন সরকার দেশবাসীর আশা-আকাঙ্খাকে পূরণ করবে। নির্বাচনের আগে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, তার অবসাণ হবে। 
১১ কোটি বিজেপি কর্মী এবং ১২৫ কোটি দেশবাসীর জন্য এই জয় সম্ভব হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে সামনে কর্মী এবং সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে এমনই দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এই জনাদেশ থেকে স্পষ্ট দেশবাসী পরিবারতন্ত্র, জাতপাত এবং তোষণের রাজনীতিকে খারিজ করে দিয়েছে। বিজেপি কর্মীরা সফল ভাবে সবকা সাথ সবকা বিকাশের দর্শনকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে সফল হয়েছে। 
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে অমিত শাহ বলেন, দেশের ২১ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে খাতাই খুলতে পারেনি কংগ্রেস। এদিন নিজের ভাষণে যেমন কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে মোদী সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের জন্যই এই সাফল্য বলেও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, স্বাধীনতার পর এটাই সবচেয়ে বড় জয়। তাই এটা সকলের জন্য গৌরবময় বলেই তিনি দাবি করেছেন। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মোদী ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। এনডিএ পেয়েছিল ৩০০-র বেশি আসন। বিজেপি পেয়েছিল ২৮২টি আসন। যদিও এর পর একাধিক উপ-নির্বাচনে হারতে হয়েছে বিজেপিকে। সব মিলিয়ে বিজেপির আসন সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ২৭২-এ।

ফলে এবার জল্পনা ছিল বিজেপি কেমন ফল করে তার উপর। রাজনৈতিক মহলের একটা অংশের দাবি ছিল, শক্তি কমিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি। মোদীর দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া অসম্ভব ছিল বলেই ওই মহলের দাবি ছিল। 
বাঙ্গাল কী অন্দর, বাঙ্গাল কী অন্দর, বাঙ্গাল কী অন্দর…। এক বার নয়, বারবার একই কথা উচ্চারণ করলেন অমিত শাহ। আর কর্মী সমর্থকদের মধ্য থেকে উঠে এল উল্লাশ ধ্বনী। আর সেই উল্লাস ধ্বনীকে উস্কে দিতে বাক্য শেষ করার আগে ‘ভারত মাতা কী জয়’ ধ্বনী তুললেন অমিত শাহ। তৈরি করলেন এক নাটকীয় পরিবেশ। আর তার পরেই তাঁর গলা থেকে শোনা গেল বাংলার বিধানসভা দখলের হুঙ্কার।

পশ্চিমবঙ্গের ফল নিয়ে উল্লসিত বিজেপি। ২ থেকে ১৮ আসনে পৌঁছে যাওয়ার উল্লাস খোদ দিল্লিতে। খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর গলায়। এদিন গোটা দেশের ফল প্রকাশের পরে সদর দফতর থেকে কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন অমিত। আর তাতে বাংলার জন্য আলাদা করে সময় দিলেন বিজেপি সভাপতি।

এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও ওই বিজয় সমাবেশে হাজির ছিলেন বিজেপি সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। আর হাজির ছিল হাজারে হাজারে বিজেপির কর্মী সমর্থক। আর তাদের সামনেই অমিত শাহ অন্ধ্র প্রদেশে সরকার গঠনের জন্য জগন রেড্ডি, ওড়িশায় নবীন পট্টনায়ক, সিকিমের পবন চামলিং এবং তাদের দলকে অভিনন্দন জানালেন। কিন্তু তার জন্য সব মিলিয়ে যে সময় তিনি খরচ করেছেন তার থেকে বেশ সময় দিলেন বাংলাকে। বুঝিয়ে দিলেন বাংলা বিজেপির কাছে অন্য কিছু হয়ে উঠেছে নির্বাচনের এই ফলে।

এদিন অমিত শাহ বলেন, লোকসভায় ১৮টি আসন আর বিধানসভা উপনির্বাচনে পাঁচটি আসন জয় বুঝিয়ে দিয়েছে এবার বাংলার ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বিজেপি। সেই সঙ্গে এই রাজ্যে ৮০ জন বিজেপি কর্মীর কথাও স্মরণ করেন অমিত শাহ
পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসায় যে ৮০ জন বিজেপি কর্মীদের খুন করা হয়েছে, তাও উল্লেখ করেন বিজেপি সভাপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *