ঢাকা, ১৯ মে(হি.স.) : রোহিঙ্গাদের আটকানো যাচ্ছে না। পুলিশ এবং কোস্ট গার্ড সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় শুক্রবার রাতে ৮৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে। এদের মধ্যে ৬৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ এবং ১৭ জনকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড। কক্সবাজারের টেকনাফ এবং পেকুয়া থেকে আটক করা হয়। সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে গত ছ’মাসে দুশ’রও বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করেছে নিরাপত্তাবাহিনী। এক সপ্তাহ আগে ঢাকা থেকে ২৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছিল। ক্যাম্প থেকে বিভিন্ন উপায়ে বের হয়ে মালয়েশিয়া যেতে উদগ্রীব রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে অন্য জায়গায় যেতে না পারে সেজন্য উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও নানা উপায়ে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আসছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্ট এড়িয়ে পাহাড়-জঙ্গলের ভেতর দিয়ে এলাকা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়া যেতে রোহিঙ্গাদের আগ্রহকে পুঁজি করছে মানব পাচারকারীরা। তিনি বলেন, তারা এখন স্থানীয় ভাষা শিখে গেছে। পোশাক স্থানীয়দের মতো পরছে। চেকপোস্ট দিয়ে দুই-চারজন যারা আসছে তারা স্পষ্টভাবে বলছে যে ঐ জায়গায় যাব। এটা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া যাবার চেষ্টা কালে বিভিন্ন সময় যেসব রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী। শুক্রবার যে ৮৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৩৮।
উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নারীদের নিয়ে কাজ করেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী শিউলি শর্মা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের অনেকেই মালয়েশিয়া গিয়ে বিয়ে করার স্বপ্নে বিভোর। তারা মনে করে যে মালয়েশিয়া যেতে পারলে তাদের ভালো বিয়ে হবে। এ ধারণা থেকেই তাদের অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী। শিউলি আরও বলেন, রোহিঙ্গা নারীরা মনে করে বিয়েটাই সবকিছু। তারা মনে করে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে নিজেদের মতো করে একটা জীবন তৈরি করে নেবে। আর মালয়েশিয়া যেতে উদগ্রীব রোহিঙ্গাদের এমন মানসিকতাকে পুঁজি করছে মানব পাচারকারীরা। স্বাভাবিকভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে এখন মানব পাচারকারীদের তৎপরতাও বেড়েছে। তাছাড়া কিছু রোহিঙ্গা আছে যাদের স্বজন মালয়েশিয়া অবস্থান করছে । তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত স্বজনদের মালয়েশিয়া যাবার জন্য যোগাযোগ করে। এক্ষেত্রেও মানব পাচারকারীদের সহায়তা নেওয়া হয়।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময় পুলিশ মানব পাচারকারীকের আটক করেছে। শুক্রবার রাতেও পাঁচজন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।