রাজ্যের বহু গ্রন্থাগার পরিচালিত হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী ও নৈশ প্রহরী দিয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মে৷৷ রাজ্যে বিভিন্ন গ্রন্থাগারের করুণ দশার কাহিনি শুনলে আঁতকে ওঠার মত ৷ বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয় গুলিতে গ্রন্থাগার থাকলেও, অধিকাংশ বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক নেই ৷ সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, কিছু গ্রন্থাগার পরিচালিত হচ্ছে গ্রুপ-ডি কর্মী এবং নৈশ প্রহরীদের দিয়ে ৷ এই তথ্য দিয়েছেন অল ত্রিপুরা গভর্নমেন্ট লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশনের কনভেনার দীপঙ্কর ঘোষ৷


শনিবার তিনি জানান, ত্রিপুরার গ্রন্থাগারিকদের স্বার্থে সংগঠন সম্মেলনের আয়োজন করেছে ৷ এই সম্মেলনে গ্রন্থাগারের পেশায় যাঁরা নিয়োজিত তাঁদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা হবে ৷ পাশাপাশি গ্রন্থাগারিকদের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নের বিষয়েও চর্চা হবে ৷


দীপঙ্কর ঘোষের কথায়, ত্রিপুরায় উচ্চ শিক্ষা দফতরের অধীন ২৫টি, ৪,৫০০ বিদ্যালয় এবং ২৪টি ডিগ্রি কলেজ ছাড়াও বিভিন্ন দফতরে গ্রন্থাগার রয়েছে৷ অথচ, প্রচুর সংখ্যায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিকের অভাব রয়েছে৷ তিনি জানান, ৯৯ শতাংশ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক কিংবা গ্রন্থাগার কর্মচারী নেই৷ তাঁর দাবি, উচ্চ শিক্ষা দফতরের অধীন ২৫টি গ্রন্থাগারের মধ্যে ১৫টি গ্রন্থাগারে কোনও গ্রন্থাগারিক নেই৷ আর আশ্চর্যের বিষয়, এই ১৫টি গ্রন্থাগারের মধ্যে ৬টি গ্রন্থাগারে একজনও গ্রন্থাগার কর্মচারী নেই৷ দীপঙ্করবাবুর কথায়, ওই গ্রন্থাগারগুলি গ্রুপ-ডি কর্মী এবং নৈশপ্রহরীরা পরিচালনা করছেন৷
ঘোষ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলি নানা সমস্যায় ধুঁকছে৷

অথচ, কর্মী-স্বল্পতা দূর করার বিষয়েও রাজ্য সরকার ভাবছে না৷ তাঁর বক্তব্য, বামফ্রন্ট সরকারের আমল থেকেই গ্রন্থাগারগুলি ক্রমপর্যায়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে৷ এখন দেখে মনে হচ্ছে, নামকাওয়াস্তে গ্রন্থাগার রাখা হয়েছে৷
দীপঙ্করবাবু গ্রন্থাগারগুলির কর্মী-স্বল্পতা দূর করার বিষয়ে ত্রিপুরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন৷ পাশাপাশি, কর্মরত গ্রন্থাগারিকদের প্রশিক্ষণের বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ত্রিপুরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন৷ সাথে যোগ করেন, সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরায় গ্রন্থাগারিকদের বেতন সবচেয়ে কম৷ তাঁর মতে, একজন ইউডি ক্লার্কের সমতুল্য বেতনক্রম গ্রন্থাগারিকদের৷ তাই দেশের সাথে সাযুজ্য রেখে গ্রন্থাগারিকদের বেতনক্রম বৃদ্ধির বিষয়টিও ভেবে দেখার জন্য ত্রিপুরা সরকারের কাছে আবেদন জানান তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *