কারৌলি (রাজস্থান), ৩ মে (হি.স.): কেন্দ্রে যখন কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় ছিল, সন্ত্রাসবাদী হামলা তখন নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল| কংগ্রেসের শাসনকালে ভারতের কোনও শহরই নিরাপদ ছিল না| শুক্রবার রাজস্থানের কারৌলির জনসভা থেকে পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে খোঁচা দিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী| এদিন জনসভায় বক্তব্য রাখার শুরুতেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আজ আমরা সবাই এখানে মিলিত হয়েছি| ঠিক একই সময় ভারতের পূর্ব এবং দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবর্তী এলাকায় মানুষজন শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করছেন| ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরি সরকারের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার|’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘অফিসারদের থেকে সমস্ত আপডেট নিয়েছি আমি| বৃহস্পতিবারই পর্যালোচনা বৈঠক করা হয়| ওই দিনই সংশ্লিষ্ট সরকারকে প্রাথমিকভাবে এক হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে| সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে এনডিআরএফ, ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনা| দুর্গত মানুষদের প্রতি আমার আশ্বাস দেশবাসী এবং কেন্দ্রীয় সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে|’
আন্তর্জাতিক নিষিদ্ধ জঙ্গি তালিকায় জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মাসদু আজহারের নাম অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দু’দিন আগেই, ভারতের বৃহত্তর শত্রু, জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহারের নাম আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয়েছে| এই জঙ্গি নেতা, পাকিস্তানে বসে ভারতে একের পর এক আঘাত হেনেছে|’ সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী হামলায় রাজস্থানের বহু মা তাঁদের বীর সন্তানদের হারিয়েছেন| কিন্তু, এখন পাকিস্তানেও সন্ত্রাসীরা আরাম উপভোগ করতে পারছে না| সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক এবং এখন পাকিস্তান, সন্ত্রাসবাদী এবং জঙ্গি নেতাদের উপর বৃহত্তর আন্তর্জাতিক স্ট্রাইক|’
পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে তুলোধনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কেন্দ্রে যখন কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় ছিল, সন্ত্রাসবাদী হামলা তখন নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল| তাঁদের শাসনকালে কোনও শহরই নিরাপদ ছিল না| সবারই জানা, ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদীরা কীভাবে হামলা চালিয়েছিল| মুম্বইয়ে সেই সময় যে হামলা হয়েছিল, তা প্রথমও ছিল না শেষও ছিল না|’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে উত্তর প্রদেশের সিআরপিএফ শিবিরে হামলা চালানো হয়েছিল| মে মাসে বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল জয়পুর| জুলাই মাসে বেঙ্গালুরুতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়েছিল| পরবর্তী দিন আহমেদাবাদেও বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল| এরপর সেপ্টেম্বর মাসে, দিল্লিতে দু’বার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছিল| অক্টোবর মাসে গুয়াহাটি, আগরতলা এবং ইম্ফলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়েছিল|’
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘আইপিএল নিয়ে যুবকদের মধ্যে উন্মাদনা তুঙ্গে| কিন্তু, দু’বার ভারতে আইপিএল খেলা হয়নি, খেলা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়| ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে এমনটা হয়েছিল| সেই সময় সন্ত্রাসবাদীদের ভয় পেত সরকার, সেই সরকারের কোনও সাহসই ছিল না| ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে তাঁরা বলেছিল, সামনেই নির্বাচন| পুলিশ অত্যন্ত ব্যস্ত, তাই আইপিএল সম্ভব নয়| অথচ এখন নির্বাচন, নবরাত্রি, রামনবমী এবং হনুমান জয়ন্তীও আছে| কিছুদিন পরই রমজান| অথচ, আইপিএল খেলা চলছে|’
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের সাত দফার মধ্যে ইতিমধ্যেই চার দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে| আগামী ৬ মে উনিশের লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ| ৬ মে পঞ্চম দফায় রাজস্থানের গঙ্গানগর, বিকানের, চুরু, ঝুনঝুনু, সিকার, জয়পুর গ্রামীণ, জয়পুর, আলওয়ার, ভরতপুর, কারৌলি-ঢোলপুর, দৌসা এবং নাগাউর লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ হবে|