চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নাই তাই নিজের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ এপ্রিল ৷৷ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নেই তাই নিজের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে সারা রাজ্যে চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে৷ তাতে কর্মস্থলে নিজেদের অসুরক্ষিত ভাবছেন তাঁরা৷ এ বিষয়টি নব্য চিকিৎসকদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে৷ তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, চিকিৎসকদের উপর ক্রমাগত হামলা সত্বেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না৷ তাঁরা অবাধে ঘোরাফেরা করছেন৷ তাতে চিকিৎসকদের মনবোল ভেঙে যাচ্ছে৷ স্বাস্থ্য দপ্তরের মন্ত্রি হিসেবে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলে মনে করছি৷ তাই, নিজের নিরাপত্তা রাখা উচিত হবে না বলে স্থির করেছি৷ তিনি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, তাঁর নিরাপত্তায় এসকর্ট প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক৷ তিনি জিবি ও আইজিএম সহ সমস্তা জেলা হাসপাতালে পুলিশী নিরাপত্তা মোতায়েনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন৷

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানানোর পর টেলিফোনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণ জানান, স্বাস্থ্য কর্মীদের উপর আক্রমণ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না৷ প্রতিনিয়ত চিকিৎসকদের উপর আক্রমণ রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করছে৷ তিনি বলেন, চিকিৎসকদের সমস্ত দায়িত্ব দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে আমার উপরই বর্তায়৷ কিন্তু, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি৷ এই দায় স্বীকার করে নিজের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছি৷

স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় গাফিলতির বিষয়টি দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের৷ কিন্তু তাদের উপর দৈহিক নির্যাতন করে আইন হাতে তুলে নেওয়া কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না৷ রোগীদের সুস্থ করে তোলা চিকিৎসকদের যেমন দায়িত্ব, তেমনিই চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাও রাজ্য সরকারের কর্তব্য৷ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, চিকিৎসকদের সমস্ত দাবি রাজ্য সরকার মেনে নেবে৷ ডাঃ দীপঙ্কর দেবনাথকে মারধোরের ঘটনায় অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে৷

স্বাস্থ্য মন্ত্রীর এই ভূমিকাকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বলেই মনে করা হচ্ছে৷ কারণ, মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য হয়েও তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছেন৷