নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা,৭ এপ্রিল ৷৷ নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসের মাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ রবিবার দুপুর নাগাদ সোনামুড়ার নিদয়া বাজার, রইস্যাবাড়ির তুই চাকমা এবং সিপাহী জলা জেলার নলুয়াতে পৃথক পৃথক রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তাতে স্বশাসিত জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য, পুলিশ অফিসার সহ বেশ কয়েকজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীসমর্থক গুরুরত ভাবে জখম হয়েছেন৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে লাঠি চার্জ করতে হয়েছে৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ রাজনৈতিক সংঘর্ষ এড়াতে এবং জনজীবনে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে এলাকাগুলিতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী ফ্ল্যাগমার্চ শুরু করেছে৷

সবকটি ক্ষেত্রেই পুলিশ পৃথক পৃথক মামলা গ্রহণ করেছে৷ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে৷ তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারের সংবাদ নেই৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোনামুড়া নিদয়া, রইস্যাবাড়ির তুইচাকমা এবং সিপাহীজলার নলুয়া এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ ওইসব এলাকায় ভোট পর্ব কতটা শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হবে তা নিয়ে সন্দেহ ক্রমশ ঘনিভূত হচ্ছে৷
রাজ্য পুলিশের সদর কার্যালয়ে রবিবার বিকালে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত মহা নির্দেশক এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান৷ তিনি বলেন সোনামুড়ার নিদয়া বাজারে দুপুর ১২টা নাগাদ কংগ্রেসের একটি রোড শো চলছিল রোড শোটি সোনামুড়া থেকে নিদয়া বাজারে যায়৷ নিদয়া বাজারে পৌঁছলে রোডশোতে অংশগ্রহণকারী কি ছু সংখ্যক লোকজন নিদয়া বাজারে অবস্থানরত বিজেপি কর্মীসমর্থকদের উপর হামলা চালায় বলে জানান পুলিশের অতিরিক্ত মহা নির্দেশক ৷ তাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে৷ যাত্রাপুর থানার ওসি এবং পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে লাঠি চার্জ করে৷ পুলিশের উপরও পাল্টা আক্রমণ হয়৷ তাতে যাত্রাপুর থানার ওসি এবং ৮জন বিজেপি কর্মীসমর্থক আহত হন৷ এব্যাপারে পুলিশ একটি মামলা গ্রহণ করেছে৷
রইস্যাবাড়ি থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী তুইচাকমা বাজারে দুপুর ১২টা নাগাদ বিরোধীদল সিপিএমের পথসভা চলছিল পথসভার কিছুটা দুরেই শাসক দলের ঘরোয়া মিটিং চলছিল৷ ঘরোয়া মিটিং থেকে এসে বিজেপির কিছু লোকজন সিপিএমের লোকজনদের বলে তাদের উপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে এনিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়৷ কিছুক্ষন পর আরো কিছু বিজেপি সমর্থক সিপিএমের পথসভা স্থলে এসে আক্রমণ চালায়৷ আক্রমণে পুলিশের একজন সাব ইনস্পেক্টর এবং সিপিএমের ২ নেতা গুরুতর ভাবে আহত হন৷ আহতদের মধ্যে রয়েছেন ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য পরিক্ষিত মুড়াসিং এবং দলীয় নেতা সন্তোষ চাকমা৷ এখানেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে৷
এদিকে সিপাহীজলা জেলার নলুয়াতে সিপিএমের পথসভা ছিল পথসভা বানচাল করার লক্ষ্যে কিছু লোকজন সেখানকার রাস্তা অবরোধ করে রাখে৷ পুলিশ অবরোধ কারীদের সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়৷ শেষ পর্যন্ত লাঠি চার্জ করে অবরোধকারীদের সেখান থেকে সরানো হয়৷ নির্বাচনের দোরগোড়ায় সন্ত্রাস যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে নির্বাচন কতখানি অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হবে তা নিয়ে সন্দেহ ক্রমশ ঘনিভূত হচ্ছে৷ নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার জন্যই এধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ৷
আজ পশ্চিম আসনেপোস্টাল ব্যালটে ভোট
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ এপ্রিল৷৷ আগামীকাল ১-পশ্চিম ত্রিপুরা আসনে পোষ্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ ১-পশ্চিম ত্রিপুরা সংসদীয় আসনের জন্য আগামীকাল পোষ্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়া হবে৷ রাজ্যের আটটি জেলারই ফ্যাসিলিয়েশন সেন্টারগুলিতে ভোট গ্রহণ করা হবে৷ আগামীকাল কেউ ভোট দিতে না পারলে পরশু দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনি ভোট দিতে পারবেন৷ এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যারা ভোট দিতে পারবেন না তাঁদের পোষ্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাঠানো হবে৷ আবার ডাকযোগেই তা ফেরৎ আসবে৷ আজ সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শ্রীরাম তরুণীকান্তি এই সংবাদ জানিয়েছেন৷ তিনি জানান, নাগাল্যাণ্ডে টি এস আর-র যে সমস্ত আধিকারিক এবং কর্মী গেছেন তাদের পোষ্টাল ব্যালটও ডাক যোগেই পাঠানো হবে৷ তিনি জানান, পোষ্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ সম্পর্কিত একটি সার্কলার গতকালই জারী করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদেরও অবহিত করা হয়েছে৷ সি ই ও জানান, আজ আমবাসায় ২-পূর্ব ত্রিপুরা সংরক্ষিত আসনের (এস টি) ই ডি সি এবং পোষ্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ সম্পর্কিত ফর্ম ১২ এবং ১২ এ এ’চে’ করা হয়েছে৷ ৯ এপ্রিল ও এই কাজটি করা হবে৷ সি ই ও জানান, ভোটররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ স্পেশাল পুলিশ অবজারভার আজ হেজামারা, জিরানীয়া, মোহনপুর, সদরের বিভিন্ন এলাকায় সারপ্রাইজ ভিজিট করেছেন৷ সাংবাদিক সম্মেলনে বিশেষ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক প্রমথ র’ন ভ-াচার্য, অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক উষাজেন মগও উপস্থিত ছিলেন৷