
হোজাই (অসম), ৬ এপ্রিল (হি.স.) : দেশের সুরক্ষার জন্য কংগ্রেস ও আজমল ক্ষতিকারক। দেশ বিভাজনের জন্য দায়ী মুসলিম লিগের সঙ্গে কংগ্রেস কেরলে হাত মিলিয়েছে। কংগ্ৰেসের এ-ধরনের কাজ দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। দেশে কংগ্ৰেস সরকারের আমলে সন্ত্ৰাসবাদীদের বিরিয়ানি খাওনো হত। কিন্তু বিগত লোকসভা নিৰ্বাচনে দেশবাসী বিজেপিকে জয়ী করে নরেন্দ্ৰ মোদীকে প্ৰধানমন্ত্ৰী পদে বসানোর পর সন্ত্ৰাসবাদীরা বন্দুকের গুলি খাচ্ছে। আজ হোজাইয়ের বিহুতলি ময়নানে জেলা সভাপতির পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত বিজেপি নেতৃত্বাধীন মিত্ৰ জোটের বিজয় সংকল্প সমারোহ অনুষ্ঠানে উত্তরপ্ৰদেশের মুখ্যমন্ত্ৰী যোগী আদিত্য নাথ প্রধান বক্তা হিসেবে তাঁর ভাষণে এই মন্তব্য করেন।
বিজয় সংকল্প সমারোহ অনুষ্ঠানে উত্তরপ্ৰদেশের মন্ত্ৰী মহেন্দ্ৰ সিং, অসমের মন্ত্ৰী পীযূষ হাজরিকা, লামডিং কেন্দ্রের বিধায়ক শিবু মিশ্র, হোজাইয়ের বিধায়ক শিলাদিত্য দেব, বিজেপি প্ৰাৰ্থী তথা নগাঁও সদর কেন্দ্রের বিধায়ক রূপক শৰ্মার উপস্থিতিতে এই বিশাল জনসভায় প্রধান বক্তা যোগী আদিত্য নাথ তাঁর ভাষণের শুরুতেই অসমের মহাপুরুষ শংকরদেব, মাধবদেব এবং ভূপেন হাজারিকা-সহ নমস্য ব্যক্তিদের স্মরণ করে শ্ৰদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন। অসম আন্দোলনের বীর শহিদদের প্রতিও শ্ৰদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন যোগী।মুখ্যমন্ত্ৰী আদিত্যনাথ কংগ্ৰেসের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, রাহুল গান্ধী উত্তরপ্ৰদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে কেরলের একটি কেন্দ্রে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাহুলের মনোনয়নের জন্য যে মিছিল বের করা হয়েছে সেই মিছিলে একটিও জাতীয় পতাকা, একটিও কংগ্ৰেসের পতাকা দেখা যায়নি। বরং শুধু মুসলিম লিগের চাঁদ-তারার ছবি-সহ সবুজ পতাকা দেখা গেছে। যে মুসলিম লিগ ভারত বিভাজনের জন্য দায়ী ছিল, যে মুসলিম লিগের জন্য ভারতে লক্ষাধিক নিৰ্দোষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, সেই মুসলিম লিগের সঙ্গে কংগ্ৰেসের জোটবন্ধন হয়েছে। একই অবস্থা অসমের ক্ষেত্ৰেও দেখা যাচ্ছে। অসমের দুরবস্থার জন্য দায়ী বদর উদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে কংগ্ৰেস জোট করে দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরির কাজ করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
কংগ্ৰেস দেশ তথা জনসাধারণের সুরক্ষা নিয়ে খেলা করছে। কংগ্ৰেসের এ ধরনের কুৎসিত নীতির উপযুক্ত জবাব দেবার সময় হল নিৰ্বাচন, এই নিৰ্বাচনে ভোটের মাধ্যমে বিজেপিকে জয়ী করে কংগ্ৰেসকে শিক্ষা দেবার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্ৰী যোগী আদিত্যনাথ।তিনি বলেন, যাঁরা দেশের নিরাপত্তাকে অস্থির করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে, রাজ্যের সুরক্ষাকে অস্থির করতে চাইছে, অসমের স্বাৰ্থ বিরোধী কাজ করছে কংগ্ৰেস তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। অসমে কংগ্ৰেস এবং আজমলের ভাষা একই। আজমলের সঙ্গে জোট গড়ায় কংগ্ৰেসকে প্ৰাৰ্থী খুঁজে হয়রান হতে হচ্ছে। অসমে তরুণ গগৈ মন্ত্ৰিসভায় মন্ত্ৰী হিসেবে থাকার পরও রাজ্যের জন্য, নিজের কেন্দ্রের জন্য উন্নয়ন করতে ব্যর্থ এবং বিধানসভা নিৰ্বাচনে পরাজিত কংগ্ৰেস প্ৰাৰ্থী প্ৰদ্যুত বরদলৈ নগাঁও সংসদীয় কেন্দ্রের জন্য কী কাজ করবেন বলে প্ৰশ্ন করেন তিনি।
এদিকে মোদী সরকারের পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে তিনি বলেন, কেন্দ্ৰে পূৰ্ববর্তী কংগ্ৰেস নেতৃত্বাধীন মিত্ৰ জোট ইউপিএ সরকারের আমলে নেতৃত্বের দুৰ্বলতার জন্য পাকিস্তানি সেনা ভারতীয় জওয়ানের মুণ্ড কেটে নিয়ে যাওয়ার পরও কোনও প্ৰত্যুত্তর দিতে সক্ষম হয়নি মনমোহন সরকার। কিন্তু নরেন্দ্ৰ মোদীর সবল নেতৃত্বের জন্য উরির ঘটনাই হোক বা পুলওয়ামার ঘটনাই হোক, মোদী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্ৰাসবাদীর শিবির ধ্বংস করে দেওয়ায় পাকিস্তান ভয়ে কম্পমান হয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভারত যে কোনও মুহূৰ্তে আক্ৰমণ করতে পারে বলে দোহাই দিয়ে পাকিস্তানকে বিপদের সময় সাহা্য্য করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভারতের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানকেই দোষারোপ করছে। যে সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাকিস্তানক দোষী করছে সেই সময় কংগ্ৰেসের নেতারা পাকিস্তানের সন্ত্ৰাসবাদী শিবিরে আক্ৰমণ করা ঠিক নয় বলে শোরগোল তুলছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্ৰী আদিত্যনাথ।ডোকলাম বিবাদের সময় চিনের সৈন্যবাহিনীকে প্রথম বারের জন্য পিছিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। এটা শুধু প্ৰধানমন্ত্ৰী মোদীর সবল নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে। আজ মোদীর সবল নেতৃত্বের জন্য ভারতীয় সৈন্যবাহিনী নিজেদের ইচ্ছা অনু্যায়ী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে। ভারতে কংগ্ৰেস সরকারের আমলে কংগ্ৰেস সন্ত্ৰাসবাদীদের বিরিয়ানি খাওয়াতো, কিন্তু মোদী বন্দুকের গুলি খাওয়াচ্ছে বলে তিনি ভাষণে বলেন। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্ৰ ও ইজরায়েল অন্য রাষ্ট্ৰের ভেতরে ঢুকে সন্ত্ৰাসবাদীদের হত্যা করেছিল। এখন ভারতবৰ্ষ তৃতীয় দেশ হিসেবে পরিগণিত হল যে দেশ অন্য রাষ্ট্ৰের ভেতরে ঢুকে সন্ত্ৰাসবাদীর ঘাটি ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।
কংগ্ৰেস সরকারের আমলে দেশের অৰ্থনৈতিক ঘাটতির হার ১১ শতাংশ ছিল, গত পাঁচ বছরে মোদীর শাসনে ৬ শতাংশ হয়েছে এবং নিৰ্বাচনের পর মোদীর নেতৃত্বে সরকার গঠন হলে দেশের আর্থিক ঘাটতি ৩ শতাংশে নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।সভায় অসমের মন্ত্ৰী পীযূষ হাজরিকা সরকারের উপলব্ধির কথা বলেন। তিনি প্ৰদ্যুত বরদলৈকে অন্ধকারের রাজা বলে আখ্যা দেন। মাৰ্ঘেরিটাবাসী প্রদ্যুত গত বিধানসভা নিৰ্বাচনে প্ৰায় ২৪,৬০০ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। সেই হেরো প্ৰদ্যুতকে নগাঁও লোকসভা কেন্দ্রের ভোটাররা কখনও গ্ৰহণ করবেন না বলে মন্তব্য করেন পীষূষ। বিজেপি প্ৰাৰ্থী রূপক শৰ্মা বৰ্তমান নগাঁও সদর কেন্দ্রের নিৰ্বাচিত বিধায়ক এবং প্ৰদ্যুত বরদলৈ কংগ্ৰেসের প্রত্যাখ্যিত প্ৰাৰ্থী বলে অভিহিত করেন তিনি। সভায় স্থানীয় বিধায়ক শিলাদিত্য দেব, জেলা সভাপতি অৰ্জুন মজুমদারও ভাষণ দেন।