নয়াদিল্লি, ২৬ মার্চ (হি.স.): সিবিআইয়ের রিপোর্টের জবাব দিতে রাজীবকুমারকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তা ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই । কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ জানিয়ে মুখবন্ধ খামে আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছে সিবিআই । প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আজ নির্দেশ দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে ।

আজ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পাওয়া গিয়েছে তাতে চোখ বন্ধ করে থাকা যায় না । রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সেই বিষয়ে আবেদন জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআইকেও ৷
সারদা চিটফান্ড মামলায় কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার রাজীব কুমারকে সম্প্রতি যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে সিবিআইয়ের দেওয়া নতুন স্টেটাস রিপোর্টে উন্মোচিত কিছু তথ্যকে ‘খুবই গুরুতর’ বলে মঙ্গলবার অভিহিত করে সুপ্রিম কোর্ট ।
সারদা চিট ফান্ড মামলার তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার যে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট তৈরি করেছিল, তার প্রধান ছিলেন রাজীব কুমার । এই বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, এই আবেদন যেন দশ দিনের মধ্যে কোর্টের কাছে জমা দেয় সিবিআই । সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্ট সিল করা কভারে জমা পড়েছে । এবং অন্য পক্ষের বক্তব্য না শুনে আদালত কোনও রায় দিতে পারবে না । তাই, তাঁর বক্তব্যও আদালতে জানাতে পারবেন রাজীব কুমার।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা জমা দিয়ে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, সারদা মামলা সংক্রান্ত নথিপত্রে কিছু ‘অসঙ্গতি’ রয়েছে যা তারা খতিয়ে দেখছে । কিন্তু হলফনামায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাট বা নষ্ট করার অভিযোগের উল্লেখ ছিল না, যার জেরে ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে পুলিশ কমিশনারের বাসভবনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাজির হয় সিবিআইয়ের একটি দল । এর আগে সারদাকাণ্ডের তদন্তে কলকাতার তৎকালীন নগরপাল রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সটান তাঁর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআইয়ের একটি দল । যা ঘিরে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি । যার বিরুদ্ধে ধর্মতলায় ধরনায় বসেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা । সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিলংয়ে টানা পাঁচদিন ধরে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই । জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে রাজীবের জন্য একগুচ্ছ প্রশ্নমালা সাজান তদন্তকারী আধিকারিকরা । দু’দিন রাজীব কুমারের সঙ্গে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষকে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয় । রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে বেশ কিছু তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে বলে জানা যায় । এর আগেই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের প্রমাণ দিয়ে হলফনামা জমা দিতে সিবিআই ডিরেক্টর ঋষি কুমার শুক্লাকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট ।