দু’জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/ বিলোনীয়া, ১২ মার্চ৷৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে দু’জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷ পশ্চিম জেলার খয়েরপুরের পঞ্চবটি এলাকায় মঙ্গলবার এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে৷ মৃত গৃহবধূর নাম বুল্টি দে৷ তাঁর স্বামী শেখর দে-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বক্তব্য, বুলটি দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুরোগ সমস্যায় ভুগছিলেন৷ এর জন্য হয়ত অবসাদে আত্মহত্যার করেছেন তিনি৷শেখর দে-র বক্তব্য, আজ তিনি তাঁদের একমাত্র শিশুপুত্রকে সুকলে দিয়ে ফিরে এসে দেখেন স্ত্রী ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গড়ায় ফাঁস জড়িয়ে ঝুলে রয়েছেন৷খবর পেয়ে খয়েরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ খোকনচন্দ্র দাসের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত করে বুল্টির মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়৷ ফাঁড়ি ইনচার্জ খোকন দাসও সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পারিপাশর্িক অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে তাঁদের মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যার ঘটনা৷


তবে বুল্টির বাপের বাড়ির লোকজন তা মানতে নারাজ৷ বাবার বাড়ির অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে৷ যে ঘর থেকে বুল্টির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে এই ঘরের মেঝের একাধিক জায়গায় রক্তের দাগ ও ব্লেড পাওয়া গিয়েছে বলেও তাঁরা জানান৷ তাই তাদের সন্দেহ আরও জোরালো হচ্ছে৷পুলিশ অফিসার ইনচার্জ খোকন দাসকে রক্ত ও ব্লেড পাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন৷ এর পরও কেন ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে ডাকা হল না, জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তাঁরা এর প্রয়োজন মনে করেননি তাই ফরেন্সিক ডাকা হয়নি৷ তাঁর এই বক্তব্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ এলাকাবাসী জানান, বুল্টি অসুস্থ বলে তাঁরা কখনও শুনেননি৷ বুল্টির বাপের বাড়ির তরফে খয়েরপুর ফাঁড়িতে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে৷


এদিকে, জনৈক ইটভাটা শ্রমিকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় শান্তিরবাজার মহকুমার বেতাগার এলাকায় চাঞ্চল্যের সিৃ হয়েছে৷ ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন এ নিয়ে এলাকাবাসীদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধছে৷ কেউ কেউ ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে মেনে নিলেও অনেকে এ ঘটনাকে খুনঘটিত বলে সন্দেহ করছেন৷ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে শান্তিরবাজার মহকুমার অন্তর্গত বেতাগারের বাসিন্দা জনৈক সন্তোষ দাস নামের ইটভাটা শ্রমিকের গলায় ফাঁস জড়িয়ে ঝুলন্ত মৃতদেহ তারই বাড়ির একটি গাছ থেকে উদ্ধার হয়৷ঘটনার খবর যায় থানায়৷ থানা থেকে পুলিশ এসে প্রাথমিক তদন্ত করে সন্তোষের মৃতদেহ উদ্ধার করে তার ময়না তদন্ত করতে জেলা সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷


অন্যদিকে, প্রাথমিক তদন্ত শেষে সন্তোষবাবুর ছেলে ও স্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন৷ মাথা ব্যথায় প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন৷ সম্ভবত অশয্য মাথা ব্যথার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন৷ তবে এই মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনাকে অবশ্য একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ৷ পুলিশ জানিয়েছ, মৃত সন্তোষ দাস ইটভাটায় কাজ করতেন৷ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নিয়ে তারা তদন্তে নেমেছেন বলে জানান পুলিশের তদন্তকারী অফিসার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *