১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন

ঢাকা, ১০ মার্চ (হি.স.) : ছাত্র আন্দোলনের প্রতীক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু’র নির্বাচন হচ্ছে আগামিকাল সোমবার, দীর্ঘ ২৮ বছর পর। কেন এই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন প্রায় তিন দশক বন্ধ রইলো এর উত্তর সহজে মেলে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে দুবার তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আদেশ জারি হয়েছে ডাকসু নির্বাচনের নির্দেশ দিয়ে। ৩ মার্চ তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২৮ বছরের অনিয়ম ভেঙে ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামিকাল ১১ মার্চ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় তিন দশক পরে যেন তারুণ্য ফিরে পেয়েছে। নানা আয়োজনে ক্যাম্পাস মুখরিত। শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দাপটে যেসব ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে আসতে পারেনি দীর্ঘকাল, তারা ফের ফিরেছে ক্যাম্পাসে। মিছিল করছে।

ঐতিহ্যবাহী মধুর ক্যানটিনে (একাত্তরে পাকিস্তানি সেনারা এই রেস্তোঁরার মালিক মধু দে-কে হত্যা করে। কারণ এই রেস্তোরাই ছিল ছাত্রদের আড্ডা ও বৈঠকের কেন্দ্র) বসেছেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। যে শিক্ষার্থী কয়েক দিন আগেও উদাসীন ছিলেন রাজনীতি সম্পর্কে, তিনিও নির্বাচনে দাঁড়িয়ে গেছেন। উৎসাহের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। শুধু ডাকসু নির্বাচন নয়, সব ক’টি সংসদেরও নির্বাচন।ক্যাম্পাসে এখন আওয়ামি লিগের ছাত্র লিগ, বিএনপির ছাত্রদল, বামদের প্রগতিশীল ছাত্র জোট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ কিংবা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, এর মধ্য দিয়েই ডাকসু নির্বাচনের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে, বলেই জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দাপটে আমাদের ছাত্ররা অসহায়। তারপরও প্রায় তিন দশক পর নির্বাচন হচ্ছে এতেই আমার খুশি। কয়েকজন শিক্ষক বললেন, যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে কিংবা হলে প্রবেশে বাধা পেয়েছে এত দিন, সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত না হোক তবু তাঁরা ফিরেছে, এর প্রতীকী মূল্য আছে। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এই ফিরে আসাকে পরিস্থিতির অগ্রগতি বলে মনে করি।এবারের নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ৪৩ হাজার ভোটার। অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি। ভিন্ন দুটি প্যানেল থেকে দুজন নারী প্রার্থী সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তবে ছাত্র লিগ ও ছাত্র দলের প্যানেলে নারী শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *