নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ মার্চ৷৷ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে দুটি আসনে প্রার্থী দেবে বামফ্রন্ট৷ তবে, কোন দল নির্বাচনে বামেদের সমর্থন করলে তাদের স্বাগত জানানো হবে৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে একথা সাফ জানিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক গোৌতম দাশ৷ তাঁর সাফ কথা, লোকসভা নির্বাচনে কোনভাবেই রাজ্যে বামেরা অন্য কোন দলের সাথে জোট করবে না৷ তবে, বিজেপিকে হারাতে কোন দল সমর্থন দিলে নিশ্চই গ্রহণ করা হবে৷ এদিকে, রাজ্যে গণতান্ত্রির অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে সিপিএম ডেপুটেশন দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন৷

গৌতম দাশ বলেন, বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে রাজ্যে গনতান্ত্রিক অবস্থাকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যে নির্বাচন করার মতো পরিস্থিতি নেই৷ অবিলম্বে রাজ্যে গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে সিপিআইএম৷ সিপিআইএমের পাঁচ সদস্যক প্রতিনিধিদল দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন৷
তিনি জানান, সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বের সিপিআইএমের প্রতিনিধি দল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ত্রিপুরার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে অবহিত করেছেন৷ প্রতিনিধি দলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন নীলোৎপল বসু, সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী, সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত, সাংসদ ঝর্ণা দাস বৈদ্য এবং সিপিএম ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক গৌতম দাশ৷
তাঁর কথায়, সিপিআইএম প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ত্রিপুরার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেছেন৷ তথ্য সম্বলিত একটি স্মারকলিপিও মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক এর হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ তাঁরা অভিযোগ করেন, ত্রিপুরায় ২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে গণতন্ত্রের পরিবেশকে কলুষিত করা হয়েছে৷ বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই রাজ্যে গণতন্ত্র ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে৷ গণতন্ত্রের অস্তিত্ব নেই৷ সিপিআইএম নেতা, কর্মী, সমর্থকদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে৷ রাজ্যের বর্তমান শাসকদল চায় না বিরোধী দল থাকোক, মত প্রকাশ করুক৷ দেশের সংবিধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে সেই অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ আরো অভিযোগ করা হয়েছে, গত জানুয়ারী মাস পর্যন্ত সিপিআইএমের ৬ জন নেতাকর্মী সমর্থককে খুন করা হয়েছে৷ সংঘবদ্ধ হামলায় ১৫১৫ জন আহত হয়েছেন৷ ২০৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, সিপিআইএম’র ১০৬টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ২৭৭ টি অফিস লুঠ করা হয়েছে৷ ৬৮টি অফিস জবরদখল করা হয়েছে৷ ৫৮টি অফিসে তালা দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ১৪৬ জন সিপিআইএম কর্মী সমর্থকের বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যে অবিলম্বে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে এনে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সিপিআইএম দলের পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানানো হয়েছে৷
লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে এদিন শ্রীদাশ বলেন, রাজ্যে দুটি লোকসভা আসনেই বামফ্রন্ট প্রার্থী দেবে৷ ১৯৫২ সাল থেকে এই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে৷ একাধিক বাম প্রার্থী লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন৷ ফলে, রাজ্যে কোন দলের সাথে জোটে যেতে চায় না বামফ্রন্ট৷ তাঁর কথায়, বিজেপিকে হারানো মূল লক্ষ্য৷ তাই, কোন দল বামফ্রন্টের প্রার্থীকে সমর্থন দিলে সাদরে তা গ্রহণ করা হবে৷