আগেও বহু প্রকল্প শুরু হয়েছে, কিন্তু কাজে গতি এখন এসেছে ঃ বিজয় গোয়েল

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ মার্চ৷৷ দেশে আগেও বহু প্রকল্পের সূচনা হয়েছে৷ কিন্তু, কাজে গতি এখন এসেছে৷ কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার গঠন হওয়ার পরই দ্রুত গতিতে প্রকল্পের কাজে সমাপ্ত হয়েছে৷ রাজ্যে নভেম্বর ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় একটি প্রকল্প শুরু হওয়ার পর এবছর ৩১ মার্চ কাজ সমাপ্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এরই ভিত্তিতে এই দাবি করেন কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান, কর্মসূচী বাস্তবায়ন ও সংসদ বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় গোয়েল৷ তাঁর বক্তব্য, পরিস্থিতি এখন বদলেছে৷ ফলে, কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ে দ্রুত উন্নয়নও হচ্ছে৷

সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান রাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় গোয়েল৷ ছবি-নিজস্ব৷

মঙ্গলবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ভারত সরকার কর্তৃক মঞ্জুরীকৃত ১৫০ কোটি টাকার প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি ৫-৬ মার্চ আগরতলায় পর্যালোচনা করে দেখছেন কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান, কর্মসূচী বাস্তবায়ন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বিজয় গোয়েল৷ সড়ক যোগাযোগ, জাতীয় সড়ক ও নগরোন্নয়ন ক্ষেত্রে এই অর্থ ব্যয় হচ্ছে যা বাস্তবায়িত করছে এনএইচআইডিসিএল ও এইচএসসিএল৷ এই পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকার ও জেলা পর্যায়ের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা, এনএইচআইডিসিএল ও এইচএসসিএল এর কর্মকর্তারা, মন্ত্রকের প্রজেক্ট মনিটরিং বিভাগের অধিকর্তা রবি গুপ্তা৷

তিনি আরো বলেন, পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, দুই লেন বিশিষ্ট আগরতলা-উদয়পুর ৮নং জাতীয় সড়কের ৬.৮০০ কিলোমিটার থেকে ৫৫.০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় ফুটপাত সহ রাস্তার উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণের জন্য এসএআরডিপি-এনই খাতে প্রথম পর্যায়ে মোট ৩৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷

আগরতলা-উদয়পুর সড়কের কাজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে সামান্য দেরিতে চললেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন৷ কেন্দ্রীয় রাজ্যমন্ত্রী এনএইচআইডিসিএল-এর আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কাজটি সম্পূর্ণ করা হয়৷

এইচএসসিএল এর পঞ্চম পর্যায়ের প্রকল্পের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, জমির সমস্যার কারণে অর্থাৎ একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং কিছু বৈদ্যুতিক খুঁটি না সড়ানোর কারণে ১৫৪৬৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজটি পুরোদমে শুরু করা সম্ভব হয়নি৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এইচএসসিএল ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন কাজটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে৷

এইচএসসিএল এর ষষ্ট পর্যায়ের ২০৭.১২ কোটি টাকার প্রকল্পের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, শুরুতে জমি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে(কৃষি/ধান থাকায়) এবং জমি মালিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের একাধিক বৈঠকের পর পরবর্তীতে নিষ্পত্তির কারণে এই কাজটি কিছুটা বিলম্বিত হয়৷ চারটি সড়ক (২০.৯৩৮ কিমি) পূর্ত দপ্তরের হাতে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে দরপত্রের সময়সীমা অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ায়, উচ্চ দর দেয়ায় কিংবা কেউ দরপত্রে অংশগ্রহণ না করায়৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এইচএসসিএল ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই কাজগুলি সম্পূর্ণ করতে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দরপত্র চূড়ান্ত করতে৷

এইসএসসিএলের অষ্টম পর্যায়ের ১৭৫.৫ কোটি টাকার প্রকল্পসমূহের পর্যালোচনায় এটা উঠে এসেছে- জমি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ( কৃষিকাজ/ধান) এবং পূর্ত দপ্তর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে মীমাংসা হওয়ার কারণে শুরুতে এই কাজগুলিও বিলম্বিত হয়েছে৷ একটি রাস্তা (৮.৭৪ কিমি) পূর্ত দপ্তরের হাতে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে উচ্চ দরের কারণে৷ জমি সমস্যার মীমাংসার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং এইচএসসিএল ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে প্রদেয় সময়সীমার মধ্যে দরপত্র চূড়ান্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ করা হয়৷

পর্যালোচনা বৈঠকের সমাপ্তি করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় রাজ্য মন্ত্রী উল্লেখ করেন- রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করা জরুরি৷ প্রকল্পের বাস্তবায়নের ফলে কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ে৷ অতএব রাজ্য সরকার কর্তৃক সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী যাতে পিএসইউগুলি বিলম্বের কারণগুলি কাটিয়ে উঠতে পারে৷

কেন্দ্রীয় রাজ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত সহযোগিতা করা হবে৷ এই প্রসঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় স্থরে প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির (সিএসপিসিসি) বৈঠক ঘন ঘন করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারের পিএসইউগুলির এই প্রকল্পগুলিসমূহের সমস্যা সমাধানের জন্য ত্রিপুরা সরকারের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠিত হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও কর্মসূচী বাস্তবায়ন মন্ত্রকের প্রবীণ আধিকারিকরাও এই শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *