নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা ৫ মার্চ৷৷ রাজ্যে বড় ধরনের হামলার ছক করা হয়েছিল নাকি ত্রিপুরাকে প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহার করছে সন্ত্রাসবাদীরা, জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যের গ্রেপ্তারের ঘটনায় এই প্রশ্ণ উঠেছে৷ সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত নাজির শেখ নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আজ আটক করেছে৷ আটক ব্যক্তির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায়৷ সে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত৷ আজ রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানান রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অখিল কুমার শুক্লা৷ তিনি জানান, এই জঙ্গি আটকের ঘটনায় এনআইএকে ডাকা হবে৷

পুলিশ মহানির্দেশক জানান, পুলিশের কাছে খবর ছিলো সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি রাজ্যে রয়েছে৷ এ বিষয়ে কয়েকদিন ধরেই পুলিশ তৎপর ছিলো৷ আজ তাকে আটক করা হয়৷ এই ব্যক্তি আইইডি তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, জামাত-উল-মুজাহিদিন ২০০৫ সালে বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় পর্যায়ক্রমে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলো৷ এই সংগঠনটি ভারতের কিছু মানুষের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র স্থাপন করেছে৷ তাদের লক্ষ্য ভারতেও সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা চালানো৷ মহানির্দেশক জানান, গত বছর জানুয়ারি মাসে দলাই লামা বুদ্ধগয়া সফর করার সময় তিনটি আইইডি উদ্ধার করেছিলো নিরাপত্তা রক্ষীরা৷ এগুলি বিস্ফোরণ হয়নি৷ এই ঘটনার পেছনেও এই সংগঠনটি যুক্ত ছিলো৷ পুলিশ মহানির্দেশকের কথায়, ওই সন্ত্রাসবাদী ঘটনার সাথে ধৃত জঙ্গীর যোগসাজশ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে৷
প্রসঙ্গত, দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে৷ পুলওয়ামার ঘটনা এখনও আমাদের মন থেকে মুছে যায়নি৷ স্বাভাবিক ভাবেই, জঙ্গী সংগঠনের দেশের অভ্যন্তরে গতিবিধি দুশ্চিন্তার কারণ৷ ত্রিপুরা তিনদিক দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ঘেরা৷ ইতিমধ্যে নেশা কারবারীরিরা ত্রিপুরাকে নেশা পাচারের প্রবেশদ্বার হিসেবে বেছে নিয়েছে৷ বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক মাদক কারবারি পুলিশের জালে ধরা পড়েছে৷ কিন্তু, এখন আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের সদস্যের রাজ্যে ধরা পড়ার ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে৷ ফলে, প্রশ্ণ উঠেছে সাড়া দেশে সন্ত্রাসবাদী গতিবিধি বৃদ্ধি করার জন্য আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ত্রিপুরাকে প্রবেশদ্বার হিসেবে বেঁছে নিয়েছে কিনা? তবে, পুলিশের মহানির্দেশক এ কে শুক্লা রাজ্যবাসীকে নির্ভয়ে থাকতে আশ্বাস দিয়েছেন৷ তাঁর দাবি, সন্ত্রাসবাদী জঙ্গী সংগঠনের সদস্য ধরা পড়লেও নিরাপত্তা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷
এদিন তিনি আরও বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সংকল্প হলো ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত করা৷ গত এক বছরে পুলিশ এ বিষয়ে সাফল্য পেয়েছে৷ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারও ড্রাগ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে৷ তিনি বলেন, ড্রাগ পাচার এবং সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার মধ্যে যোগসূত্র থাকে৷ যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে সে ড্রাগ পাচারের সঙ্গেও যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে৷ তিনি বলেন, সামনেই লোকসভা নির্বাচন৷ রাজ্যে অনেক ভি ভি আই পি আসবেন৷ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তাদের লক্ষ্য করেছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হবে৷ বিভিন্ন প্রশের উত্তরে পুলিশ মহানির্দেশক জানান, রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা কমেছে৷ ২০১৮ সালে সারা রাজ্যে ৬৫ হাজার ৩৬৩ কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে পদস্থ পুলিশ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷