সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে মৃত্যু বাংলাদেশির, তীব্র প্রতিবাদ বিএনপি-র

ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি (হি.স.): চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র গুলিতে দু’জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিরোধী দল বিএনপি। বিএনপির রাজনীতিতে কথিত ‘ভারত-বিরোধিতা’ একটা অন্যতম দিক এমন কথা বলা হলেও, গত কয়েক বছর বিএনপি এ সব প্রসঙ্গে প্রায় নিরব ছিল। কিন্তু, কিছু পরিসংখ্যান অনুযায়ী যখন বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনা কমে গিয়েছে- তখন বিএনপি এ নিয়ে মুখ খুললো কেন? তারা কি নির্বাচনের পর ভারত সম্পর্কে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে- এ সব প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। অনেকদিন পর তারা বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দশকের পর দশক ধরে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার ধারাবাহিকতা এখনও পর্যন্ত পুরোদমে চলছে। এ জন্য তিনি দেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ‘নতজানু পররাষ্ট্র নীতি’ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশিদের হত্যা এবং ধরে নিয়ে নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি। বিএনপিও দীর্ঘ সময় পর এ বিষয়ে মুখ খুললো কেন এই প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগির বলেছেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না এবং তিনি তার নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁও সফরের সময় ওই সীমান্তে গত কয়েকদিনে দু’জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে, সেজন্য তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন,এ হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। কেউ যদি অপরাধ করে বেআইনিভাবে ঢুকে পড়ে, তার জন্য আইন আছে। কিন্তু তাকে গুলি করে হত্যা করার বিষয়টা কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সে কারণেই, যেহেতু আমার জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে আমি এসেছিলাম, তখন ঘটনাগুলি ঘটেছে। সেকারণে আমি মনে করেছি যে, এ সম্পর্কে আমার একটা বিবৃতি থাকা উচিত। এটা আমার দায়িত্ব।

মির্জা বলেন, সরকার সঠিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থগুলিকে প্রতিবেশী বন্ধু দেশের কাছে তুলে ধরছে না এবং এ সবের সমাধানও করছে না। যেমন ধরুন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ছাড়াও তিস্তা-সহ অভিন্ন নদীর জল বণ্টনের সমস্যা আছে, সেই সমস্যাও সমাধান হয়নি। অথচ সরকার দাবি করছে যে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে ভালো। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে,বিশেষ করে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে, বিএনপি ভারতের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছে। নির্বাচনের আগে বিএনপি একটা অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করেছিল যে তারা ভারত-বিরোধী নয়। ভারতের সরকার এবং এমনকি ক্ষমতাসীন বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে বিএনপি-র কয়েকজন নেতাকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। তারা কয়েকবার ভারত সফরেও গিয়েছেন। কিন্তু, ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের বিষয়টি একটি বড় বাধা হয়েছিল। বিএনপির নেতাদের অনেকে মনে করেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *