শিক্ষক নিয়োগে মিলল ছাড়, বিজ্ঞপ্তি জারী করল কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জানুয়ারী৷৷ অবশেষে শিক্ষক নিয়োগে মিলল ছাড়৷ প্রাথমিক স্তরে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএড ও ডিএলএড এককালীন ছাড়ে কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের জারী করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রাথমিকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত টেট ওয়ান এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত টেট টু পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে ডিএলএড এবং বিএড ছাড়াই আবেদন জানানো যাবে৷ তবে, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতায় ৫০ শতাংশ নম্বর সহ দ্বাদশ উত্তীর্ণ অথবা প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্নাতক হতে হবে৷ তাতে রাজ্যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষকের শূণ্যপদ পূরণে জটিলতা কেটে গেছে৷ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই ছাড়ের মেয়াদ হবে দুই বছর দুই মাস সতের দিন৷ এই ছাড়ের সুযোগ নিয়ে যাদের চাকুরী হবে তারা ট্রেইনি টিচার হিসেবে বিবেচিত হবেন৷ এই সময়ের মধ্যে তাদের পেশাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে৷


রাজ্য সরকার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যায় রয়েছে কারণ, এনসিটিই গাইডলাইন মেনে শিক্ষক নিয়োগ করা যাচ্ছে না৷ তাতে প্রধান বাধা হিসেবে উঠে আসছে শিক্ষক পদে আবেদনকারীদের পেশাগত যোগ্যতায় ঘাটতি রয়েছে৷ তাই রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে শিক্ষক নিয়োগ এককালীন ছাড়ের আবেদন জানিয়েছিল৷ সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দিল্লীতে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাবড়েকরের কাছে এই ছাড়ের আবেদনের বিষয়টি পুনরায় তুলে ধরেছিলেন৷ তখন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন শীঘ্রই শিক্ষক নিয়োগে ছাড় দেওয়া হবে৷
রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১০৩২৩ শিক্ষকদের চাকুরীচ্যুতি হয়েছে৷ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ তাদের মেয়াদ সমাপ্ত হয়েছে৷ তাতে অস্নাতক ৪৬১২ জন, স্নাতক ৪৬৬৬ জন এবং স্নাতকোত্তর ১০৪৫ জন রয়েছেন৷ তাঁরা বর্তমানে এডহক ভিত্তিতে শিক্ষকতা করছেন৷ পাশাপাশি রাজ্য সরকার আরও জানিয়েছে এই সময়ের মধ্যে এনসিটিই গাইডলাইন মেনে মাত্র ১৯২০ জন শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব হয়েছে৷ এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার পিছনে রাজ্য সরকার রাজ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছে৷ রাজ্য সরকার জানিয়েছে, রাজ্যে বর্তমানে চারটি ডায়েট কলেজ যার মোট আসন সংখ্যা ৪৮০ এবং দুটি বিএড কলেজ যার মোট আসন সংখ্যা ৬৫০ রয়েছে৷ ফলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পেশাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না৷ রাজ্যে বর্তমানে ১২২২২ টি শিক্ষকের শূণ্যপদ রয়েছে৷ তার মধ্যে শুধু প্রাথমিক স্তরেই অস্নাতক ৬৭২৬টি শূণ্যপদ রয়েছে৷ রাজ্যের এই সমস্ত বিষয়গুলিকে বিবেচনা করেই কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষক নিয়োগে এককালীন ছাড় দিতে সম্মত হয়েছে৷ তবে, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১১ সালের এনসিটিই’র বিজ্ঞপ্তি মেনেই টেট নিতে হবে বলে গেজেট নোটিফিকেশনে উল্লেখ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি টেট উত্তীর্ণ হলেই শিক্ষক পদে নিয়োগ করা যাবে, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী নিযুক্ত শিক্ষকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পেশাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে৷ পেশাগত যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত তারা ট্রেইনি টিচার হিসেবে বিবেচিত হবেন৷ কেন্দ্রের দেওয়া এই ছাড়ে প্রাথমিক স্তরে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগের রাস্তা খুলে গেল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *