লোকসভা নির্বাচনে উন্নয়নই ইস্যু বিজেপির

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ জানুয়ারী৷৷ লোকসভা নির্বাচনে উন্নয়নকেই ইস্যু হিসেবে বেছে নিয়েছে বিজেপি৷ নির্দ্বিধায় একথা জানিয়েছেন খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ নির্বাচনী রণ নিয়ে তাঁর খোলামেলা জবাব, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের অধিকাংশই পূরণ করা হয়েছে৷ সর্বস্তরীয় উন্নয়নের কল্পনা করেছিল বিজেপি৷ সে মোতাবেক জাতিবাদ, পরিবারতন্ত্র এবং তুষ্টিকরণের রাজনীতির সমাপ্তি করে উন্নয়ন সকল স্তরে পৌছে দেওয়া হয়েছে৷ তবে, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি যে অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে তার খন্ডন করতে গিয়ে অমিত শাহ কংগ্রেসকেও নিশানা করেছেন৷ তাঁর সাফ কথা, এখন কংগ্রেসের অভিযোগে মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার সময় সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে৷ তাই, উন্নয়নের গাঁথা নিয়েই লোকসভা নির্বাচনে ঝাপাবে বিজেপি৷ অমিত শাহ’র কথায় তাতে স্পষ্ট, লোকসভা নির্বাচনে হিন্দুত্বের তাস খেলার ঝঁুকি নেবে না বিজেপি৷ এমনকি রাম মন্দির নিয়েও অবস্থান নরম করতে চাইছে দল৷


উন্নয়নই নির্বাচনী ইস্যু, তার কারণ বুঝাতে গিয়ে বিজেপি’র শাসনে দেশে পরিবর্তনের তালিকা তুলে ধরেন অমিত শাহ৷ তাঁর কথায়, গত সাড়ে চার বছরে গণতন্ত্রে পরিবর্তন হয়েছে৷ জাতিবাদ, পরিবারতন্ত্র এবং তুষ্টিকরণের রাজনীতিকে সমাপ্ত করা হয়েছে৷ দেশে উন্নয়নের ধারণাই বদলে গিয়েছে৷ তাঁর দাবি, সর্বস্তরে উন্নয়নের কল্পনা করেছিল বিজেপি৷ সে মোতাবেক সর্ব স্তরের উন্নয়ন করা হয়েছে৷
অমিত শাহ’র মতে, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়েছে মোদি সরকার৷ সাথে চেয়েছি শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক৷ কিন্তু, দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে শান্তি কখনো চায়নি বিজেপি, সাফ জানান অমিত শাহ৷ এদিন তিনি জোর গলায় দাবি করেন, বিজেপির শাসনে সারা বিশ্বে দেশের গৌরব বেড়েছে৷ দেশের অর্থব্যবস্থাকে সঠিক দিশায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ তাঁর বক্তব্য, দেশের আর্থিক ব্যবস্থা এখন দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে৷ এবিষয়ে তিনি তুলনা টানেন ইউপিএ জমানার সাথে৷ তাঁর দাবি, ইউপিএ জমানায় আর্থিক সূচকে ভারতের অবস্থান ছিল ৯ নম্বরে৷ এখন তা ৬ নম্বরে উঠে এসেছে৷
অমিত শাহ এদিন অধিকাংশ নির্বাচনী পৃষ্ঠা প্রমুখদের কাঁধে তুলে দিয়েছেন৷ অবশ্য একই দায়িত্ব তিনি দলীয় কর্মীদেরও কাঁধে তুলে নিতে বলেছেন৷


অমিত শাহ’র নির্দেশ, এখন থেকে লোকসভা নির্বাচনের গণনা পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন৷ বিজেপিকে আরো বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী করার সংকল্প নিয়ে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমে পড়ুন৷ তিনি সাফ বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রে ক্ষমতার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতেই হবে৷
অবশ্য, প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার নানা যুক্তিও এদিন অমিত শাহ তুলে ধরেছেন৷ তাঁর কথায়, কম্যুনিষ্ট গোটা বিশ্বে সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে৷ কংগ্রেসের অস্তিত্ব দেশে সমাপ্তির পথে৷ এরই রেশ ধরে মহাজোটও এদিন অমিতের নিশানায় ছিল৷ তাঁর কটাক্ষ, মহাজোটের অন্যতম দাবিদার মায়াবতি চাইছেন কেন্দ্রের ক্ষমতায় অধিষ্টিত হউক একটি অসহায় সরকার৷ তাঁরা শক্তিশালী সরকার চাইছেন না৷ তবে, মহাজোটের পক্ষে শক্তিশালী সরকার গঠন করাও সম্ভব নয়, বিদ্রুপের সুরে বলেন অমিত শাহ৷ তাঁর দাবি, একমাত্র নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই কেন্দ্রে শক্তিশালি সরকার গঠন সম্ভব৷ অমিত শাহ এদিন মহাজোট সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করেছেন৷ তাঁর দাবি, মহাজোটের নীতি কিংবা নেতা কোনটাই এখনো ঠিক হয়নি৷ তাই, তিনি দেশে শক্তিশালি সরকার গঠনের লক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপির প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *