পুর ও নগর উপ ভোটে একাধিপত্য বিজেপির

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ ডিসেম্বর৷৷ পুর ও নগর সংস্থার উপনির্র্বচনে বিজেপি একাধিপত্য কায়েম হল৷ একটি মাত্র আসনে জয়ী হয়ে হয়তো মুখ রক্ষা হয়েছে বিরোধী সিপিএম’র৷ বৃহস্পতিবার পুর ও নগর সংস্থার ৬৭ টি আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তাতে ৬৬ টি আসনে বিজেপি জয়ী হয়েছে৷ কংগ্রেস হাত উপনির্বাচনে ফাঁকা রয়েগেছে৷ এদিনের ফলাফলের পর ১৫৮টি পুর ও নগর সংস্থার উপনির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়েছে ১৫৭টি আসনে৷ কারণ, ৯১টি আসনে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে রয়েছে বিজেপি৷ সিপিএম পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের ৭নং ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে৷ নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, রাজ্যে ২০টি পুর পরিষদের মধ্যে ১১টিতে এখন বিজেপি সংখ্যা গরিষ্ঠ৷
আগরতলা পুর নিগমের ৪টি শূণ্য আসনের উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীগণ বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন৷ পুর নিগমের ৪নং ওয়ার্ডে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী সুপর্ণা দেবনাথ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সিপিআই(এম) এর প্রার্থী জবা দেবকে ১ হাজার ৮৪৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন৷ এই ওয়ার্ডে বিজেপির বিজয়ী প্রার্থী পেয়েছেন ২ হাজার ৯৫৮টি ভোট৷ সিপিআই(এম) প্রার্থী পেয়েছেন ১ হাজার ১১৩টি ভোট৷ ৩নং ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী অসিত রায় তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আইএনসির প্রার্থী দিলীপ কুমার রায়কে ৫৮৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন৷ এই ওয়ার্ডে বিজয়ী প্রার্থী রতন চন্দ্র দাস তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআই(এম) এর প্রার্থী দেবতনু রায়কে ২ হাজার ৪০৮টি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন৷ তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৫১০ টি ভোট৷ সিপিআই(এম) প্রার্থী পেয়েছেন ১ হাজার ১০২টি ভোট৷ ৩৫নং ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী ডালিয়া সিনহা তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সিপিআই(এম) প্রার্থী জুয়েল দত্ত চৌধুরীকে ২ হাজার ৬৪৮টি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন৷ তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ২০৮টি ভোট৷ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছেন ৫৬০টি ভোট৷
এদিকে, বিশালগড় পুর পরিষদের ১৫টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে গতকাল উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ আজ এই ১৩টি আসনের ভোট গণনা বিশালগড় মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়৷ ১৩টি আসনেই ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীগণ জয়ী হয়েছেন৷ বিজয়ী প্রার্থীগণ হলেন, ১নং ওয়ার্ডের রিংকু দাস, ২নং ওয়ার্ডে দীপ্তি দাস (দেব), ৩নং ওয়ার্ডে সুশান্ত সেনগুপ্ত, ৪নং ওয়ার্ডে অনিতা দাস(রায়), ৫নং ওয়ার্ডে ভানুলাল কর, ৬নং ওয়ার্ডে জয়ন্তী ভৌমিক, ৭নং ওয়ার্ডে রতন দেব, ৮নং ওয়ার্ডে লক্ষীরানী সাহা, ১০নং ওয়ার্ডে মাম্পী দাস (সাহা), ১২নং ওয়ার্ডে রূপালী দে, ১৩নং ওয়ার্ডে হরিদাস কুমার ভৌমিক, ১৪নং ওয়ার্ডে রিমি ঘোষ এবং ১৫নং ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন অমর সরকার৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিশালগড় পুর পরিষদের ৯ এবং ১১নং ওয়ার্ডে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীগণ পূর্বেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন৷
এদিকে, সোনামুড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় গণনা কেন্দ্রে আজ মেলাঘর পুর পরিষদের উপনির্বান এর ভোট গণনা হয়৷ মেলাঘর পুর পরিষদের ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীগণ ছয়টি আসনেই জয়লাভ করে৷ তের আসন বিশিষ্ট মেলাঘর পুর পরিষদের বাকি সাতটি আসনে বিজেপি প্রার্থীগণ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষিত হন৷ মেলাঘর পুর পরিষদের যে ছয়টি আসনে উপনির্বাচন হয় তাতে ১ নম্বর ওয়ার্ডে তপশিলী মহিাল সংরক্ষিত আসনে বিজেপি প্রার্থী স্বপ্ণা রানী দাস এর প্রাপ্ত ভোট ৫৯৭ এবং আইএনসি প্রার্থী লক্ষী বর্মণ (সরকার) এর প্রাপ্ত ভোট ১২৩৷ ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ আসনে বিজেপি প্রার্থী সুপাষ্ক সরকার এর প্রাপ্ত ভোট ৭৬৯ এবং আইএনসি প্রার্থী জারিক হোসেন এর প্রাপ্ত ভোট ১১৪৷ ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তপশিলী জাতি (মহিলা) সংরক্ষিত আসনে বিজেপি প্রার্থী কল্যাণী দাস এর প্রাপ্ত ভোট ৬০৮ এবং আইএনসি প্রার্থী শিল্পী দাস এর প্রাপ্ত ভোট ২২৯৷ ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ (মহিলা) আসনে বিজেপি প্রার্থী মুকসেদা বেগম এর প্রাপ্ত ভোট ৫৯৮ এবং আইএনসি প্রার্থী সুফিয়া বেগমের প্রাপ্ত বোট ৩৩৫৷ ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ মহিলা আসনে বিজেপি প্রার্থী সুমিত্রা দাসর (সাহা) এর প্রাপ্ত ভোট ৫০১ এবং আইএনসি প্রার্থী লক্ষী বর্মণ (সরকার) এর প্রাপ্ত ভোট ২৪৭৷ ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ আসনে বিজেপি প্রার্থী প্রসেনজিৎ সাহার প্রাপ্ত f৬ এর পাতায় দেখুন ভোট ৭৬০ এবং আইএনসি প্রার্থী আনোয়ার হোসেন এর প্রাপ্ত ভোট ১২৫৷
এদিকে, উদয়পুর পুর পরিষদের উপনির্বাচনেচ ১নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণা আচার্যী বোট পেয়েছেন ৫৩৫টি৷ আইএনসি প্রার্থী নিয়তী বিষ্ণু চৌধুরী (কর) ভোট পেয়েছেন ৩৮৭টি৷ উক্ত ওয়ার্ডে মোট ১৪৮টি ভোট বেশি পেয়ে বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণা আচার্যী জয়লাভ করেছেন৷ অপরদিকে ১৩নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী মানষী চক্রবর্তী ভোট পেয়েছেন ৪৬৭টি৷ আইএনসি প্রার্থী নিয়তী বিষ্ণু চৌধুরী (কর) পেয়েছেন ১৮৬টি ভোট৷ উক্ত ওয়ার্ডে ২৮১ টি ভোট বেশি পেয়ে বিজেপি প্রার্থী মানষী চক্রবর্তী জয়লাভ করেছেন৷ উল্লেখ্য উদয়পুর পুর পরিষদে মোট ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার আগেই নির্বাচিত হয়েছেন৷
এদিকে, কৈলাসহর পুর পরিষদের ৬টি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গতকাল৷ ৬টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতেই বিজেপি প্রার্থীগণ জয়ী হয়েছেন৷ ৩নং ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন বিজেপির কালি চক্রবর্তী৷ তিনি মোট ৪৪৫টি ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের কল্পনা ভট্টাচার্য্যকে ১৫৪ ভোটে পরাজিত করেছেন৷ ৫নং ওয়ার্ডে বিজেপির মধুমিতা দেব ৪৭৫ ভোট পেয়ে সিপিআই(এম) এর প্রার্থী মুক্তা দাসকে ৩০৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন৷ ৭নং ওয়ার্ডের বিজেপির সরজিৎ মালাকার ৪৯৫ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআই(এম) এর শৈলেশ মালাকারকে ৩৬৮ ভোটে পরাজিত করেছেন৷ ১০নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী বুলবুল চক্রবর্তী তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সিপিআই(এম) এর পম্পা বিশ্বাসকে ৩৩০ ভোটে পরাজিত করেছেন৷ বুলবুল চক্রবর্তী পেয়েছেন ৫২১ ভোট৷ ১২ নং ওয়ার্ডে বিজেপির বিধূভূষণ দাস ৬৮৫ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ঋষিকেশ দাসরকে ৩০২ ভোটে পরাজিত করেছেন৷ ১৪নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী ৭৯৯ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্দ্বী কংগ্রেসের পৌলমী মালাকারকে ৪৩৮ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন৷ ১৪নং ওয়ার্ডে বিজেপির জয়ী প্রার্থী হলেন অনিমা মালাকার৷
এদিকে, পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের ১১টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনের ফলাফল আজ ঘোষিত হয়েছে৷ পানিসাগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাগৃহে আজ সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়৷ ১১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টি ওয়ার্ডে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীগণ জয়ী হয়েছেন৷ ১টি আসনে জয়ী হয়েছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী৷ বিজয়ী ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীরা হলেন পাপিয়া দাস, সুবোধ চন্দ্র দাস, স্মৃতি দত্ত, প্রদ্যুৎ নাথ, কেশব দাাস, নমিতা দাস, মীনা নাথ, রিম্পী দাস, অরূপ কুমার পাল ও শুভেন্দু কুমার দাস৷ পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের ১ থেকে ৬নং এবং ৮ থেকে আসনে বিজেপি প্রার্থীগণ জয়ী হয়েছেন৷ পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের ৭নং ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী মৌসুমি দাস৷
এদিকে, শান্তিরবাজার পুর পরিষদের পাঁচটি ওয়ার্ডের উপ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীগণ৷ উল্লেখ্য, ১৩ আসন বিশিষ্ট শান্তিরবাজার পুর পরিষদের ৮টি আসনে বিজেপি প্রার্থীগণ আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন৷ আজ ৩,৫,৬,৯ এবং ১০নং ওয়ার্ডের ভোট গণনা হয়৷ গতকাল এই পাঁচটি ওয়ার্ডের উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ ভোট গণনায় ৩,৫,৬,৯ এবং ১০ নং ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন যথাক্রমে ভারতীয় জনতা পার্টির শ্যামলাল দেবনাথ, দীনদয়াল চৌধুরী, বিশ্বজিৎ দাস, সত্যব্রত সাহা এবং শান্তুনু দাস৷
এদিকে, বিলোনীয়া পুর পরিষদের উপ নির্বাচনে ১৫টি ওয়ার্ডের ফলাফল আজ ঘোষিত হয়েছে৷ ১৫টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা৷ বিলোনীয়া পুর পরিষদের ১ থেকে ১৫নং ওয়ার্ডের বিজীয় প্রার্থীগণ হলেন- কবিতা রানী দাস, জয়া পাল, দিপক মজুমদার, শিখা দেবনাথ, ফুলু রানী দাস, বাবুল ভৌমিক, রীণা দাস, অনুপম চক্রবর্তী, রিঙ্কু বর্ধন (রায়), শায়ন্তন দত্ত, শুক্লা দেব (সরকার), বিশ্বনাথ দাস, স্বপ্ণা চৌধুরী, ঋতুপর্ণা দাস ও লক্ষণ মালাকার৷
এদিকে, কুমারঘাট পুর পরিষদের উপনির্বাচনে পাঁচটি ওয়ার্ডেই বিজেপির প্রার্থীগণ জয়লাভ করেছেন৷ আজ পাবিয়াছড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে ভোট গণনা কেন্দ্রে সকাল ৮টায় গণনার কাজ শুরু হয়৷ এই ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন বিজেপির প্রার্থী রিংকি কর৷ তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআই(এম) এর চুমকি চক্রবর্তীকে ১৬৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন৷ এই ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী রিংকি কর পেয়েছেন ৩৫৫টি ভোট৷ সিপিআই(এম) এর চুমকি চক্রবর্তী পেয়েছেন ১৯০টি ভোট৷ ৯নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস ৩৪১টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন৷ এই ওয়ার্ডে সিপিআই(এম) প্রার্থী দীপক দে পেয়েছেন ৯৪টি ভোট৷ ৬নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী নিবেদিতা দাস ৩৫৯টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন৷ সিপিআই(এম) প্রার্থী নৃপেন্দ্র দাস পেয়েছেন ১৯৬টি ভোট৷ ৩ নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী নিধুভূষণ পাল ৩৮৩টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন৷ এই ওয়ার্ডে সিপিআই(এম) প্রার্থী পরিমল কান্তি ভট্টাচার্য এবং আইএনসি প্রার্থী জগদিশ চন্দ ৮৩টি করে ভোট পেয়েছেন৷ ১০নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী চম্পালাল দেবরায় ২৮৯টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন৷ সিপিআই(এম) প্রার্থী রুমকী চক্রবর্তী ১২৬টি ভোট পেয়েছেন৷
উপনির্বাচনে জিরানীয়া, রানীরবাজার, তেলিয়ামুড়া, খোয়াই এবং কমলপুর পুর পরিষদের সবকটি আসনেই বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *