নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর৷৷ নিজেকে কমিউনিস্ট ভেবে ঘরে বসে থাকলে চলবে না৷ মানুষের কাছে গিয়ে তাদেরকে বোঝাতে হবে৷ সংবিধানের অধিকার রক্ষা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার দাবিতে বৃহস্পতিবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে এই আওয়াজ তুললেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ তিনি বলেন, কমিউনিস্ট হবার আগে হিউম্যানিস্ট হতে হবে৷
বাবরি মসজিদ ধবংসের ২৬ বছর পর দেশের শান্তি-সম্প্রীতি, অখন্ডতা এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার পরম্পারাগত যে ঐতিহ্য তা রক্ষার দাবি জানালেন বিরোধী দলনেতা৷ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ধবংস করা হয়েছিলো অযোধ্যার বাবরি মসজিদ৷ আর এই একই দিনে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা যখন উত্তাল, তখন বিরোধী দলনেতা কাটগড়ায় দাঁড় করাতে ছাড়েননি বিজেপি এবং আরএসএসকে৷ ধর্মের নামে সুড়সুড়ি দিয়ে যারা রাজনীতি করে, তাদেরকে এদিন কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন পলিটব্যুরোর অন্যতম এই সদস্য৷ তিতিন বলেন, এর জবাব মানুষই দেবে৷ মানুষই সর্বশেষ শক্তি৷ বাবরি মসজিদ ধবংসের প্রসঙ্গত নবীন প্রজন্মের কাছে খুব একটা স্পষ্ট নয় বলে বিস্তারিতভাবেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও তুলে ধরলেন তিনি৷
কাকতালীয়াভাবে এদিনই ছিলো দেশের সংবিধান প্রনেতা ড বি আর আম্বেদকরের প্রয়াণ দিবস৷ এই দিনে তিনি বলেছেন, দেশের সংবিধন পর্যন্ত এখন আক্রান্ত হচ্ছে৷ বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করা হচ্ছে৷ এমনকি নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত আক্রান্ত৷ এই দিনে তিনি সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব যেমন নিতে হবে মানুষকে, তেমনি এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্যও মানুষকে সংঘবদ্ধ করার কথা বললেন বিরোধী নেতা৷ বাবরি প্রসঙ্গে এদিন তার স্পষ্ট জবাব, সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধবংস করা হয়েছে মসজিদটি৷ দেশ যেখানে বিপন্ন, সেখানে ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রশ্ণও এদিন স্বাভাবিক ভাবেই টানলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ সেই সাথে বললেন, ধর্ম যার যার দেশ সবার৷ একে রক্ষা করতে হবে আমাদেরই৷
তাঁর কথায়, যারাই এদের বিরুদ্ধে ষরযন্ত্রের জাল বোনার চেষ্টা করবে, মানুষ তাদের জবাব দেবে৷ আপাত দৃষ্টিতে তারা নিজেদেরকে শক্তিশালী বলে মনে করলেও সর্বশেষ শক্তির মালিক কিন্তু মানুষই৷ শেষ বিচারও তারাই করবেন৷ এই উপলব্ধি থেকে তিনি মানুষের মধ্যে যাবার কথা বলেছেন৷ গোটা কাজটিকে তিনি কমিউনিস্ট হবার আগে হিউম্যানিস্ট হয়ে জনগণের সুখ দুঃখে শামিল হয়ে তাদের কাছে গিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করতে বলেছেন৷ অন্যান্যদের মধ্যে সভায় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস ছাড়াও বিজন ধর, সিপিআই, আরএসপি, সিপিআইএম(এল) নেতারাও বক্তব্য রেখেছেন৷
2018-12-07