বুলন্দশহর (উত্তর প্রদেশ), ৪ ডিসেম্বর (হি.স.): উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরে গোহত্যা ঘিরে হওয়া হিংসার ঘটনায় পুলিশ ইন্সপেক্টর-সহ দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় পৃথক দু’টি এফআইআর রুজু করল পুলিশ| একটি এফআইআর-এ অভিযুক্ত পশু হত্যাকারীর নাম রয়েছে| অপর এফআইআর-এ হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে| সবমিলিয়ে পৃথক দু’টি এফআইআর-এ মোট ৮৭ জনের নাম (৬০ জন অজ্ঞাতপরিচয়) রয়েছে, এমনই বক্তব্য পুলিশের| মিরাট জোন-এর এডিজি প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে| কি কারণে হিংসার সূত্রপাত, তা তদন্ত করে দেখবে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)| তাছাড়া হিংসার সময় ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমারকে কি কারণে একা রেখে গেলেন অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা, তাও তদন্ত করে দেখবে সিট|
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে| মিরাটের এডিজি জানিয়েছেন, সোমবার সকালে বুলন্দশহরের স্যানা মকুমা এলাকায় মাহু গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গলে কিছু গোরুর দেহাংশ মেলে| এরপরই গুজব রটে যায় গোরুগুলিকে হত্যা করা হয়েছে| ট্র্যাক্টরে করে সেই দেহাংশ এনে চিঙ্গারওয়াথি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কিছু মানুষজন| পুলিশের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা| বিক্ষোভকারীদের একাংশ বুলন্দশহর হাইওয়ে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে আসরে নামে পুলিশ| ঘটনাস্থলে পৌঁছন এসডিএম অবিনাশকুমার মৌর্য্য| তারপরই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে বিক্ষোভ| প্রশাসনিক আধিকারিকদের ঘিরে ধরে ইট-পাথর ছোঁড়া হয়| জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী| তাঁদের মধ্যে ছিলেন স্টেশন হাউস অফিসার সুবোধ কুমার সিং| সেই সময় পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে মৃতু্য হয় সুমিত নামে এক যুবকের| এরপরই বিক্ষোভকারীরা গাড়ি ঘিরে ধরে পাথর মারতে শুরু করে| প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে যান অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা| পরে পুলিশ ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমার সিংকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন|
বিক্ষোভ-হিংসায় পুলিশ ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমার সিংয়ের অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবারের সদস্যরা| বাক্যহারা হয়ে পড়েছেন পরিবারের অনেকেই| বাবার অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সুবোধ কুমারের ছেলে অভিষেক জানিয়েছেন, ‘আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারি| তিনি কখনই হিংসা বরদাস্ত করতেন না| হিন্দু-মুসলিম ঝামেলার কারণে আমার বাবা মারা গেলেন| আগামীকাল কার বাবা জীবন হারাবেন?’


