নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ ডিসেম্বর৷৷ অসাধু কাজে লিপ্ত দুই নকল সন্ন্যাসীকে ধরে পুলিশে সমঝে দিয়েছেন উত্তর ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার অন্তর্গত পেঁচারথলের ডেপাছড়ার জনগণ। তাদের একজনের বাড়ি অসমের শিলচর এবং অন্যজনের মহারাষ্ট্রে।
জানা গেছে, আজ রবিবার দুপুর নাগাদ ধর্মনগর থেকে পেঁচারতলের নবীনছড়া বুদ্ধমন্দিরে যাওয়ার সময় স্থানীয় কিছু দর্শনার্থীদের চোখে পড়েন দুই বৌদ্ধভিক্ষু সন্ন্যাসী। তাঁদের গতিবিধি দেখে তীর্থযাত্রী বলে ধারণা করেন স্থানীয়রা। তখনই ঘটে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। চাকমা সম্প্রদায়ের কতিপয় জনজাতি লোক জড়ো হয়ে বহিরাগত দুই সন্ন্যাসীকে আটক করে তাঁদের পরিচয় জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন দুই সন্ন্যাসী তাদের নিজেদের পরিচয়পত্র বের করে দেখাতেই রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠেন আটককারীরা। ততক্ষণে এরা নকল সন্ন্যাসী বলে ধরা পড়ে যায়।
তার পর তাদের নবীনছড়ায় বৌদ্ধমন্দিরে নিয়ে সন্ন্যাসীর বেশভূষণ খুলে নেওয়া হয়। ইত্যবসরে এক চাকমা যুবতী মোবাইল ফোনে জানান যে ওরা দুজন ভণ্ড সন্ন্যাসী। এরা নাকি তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। যুবতীটি আরও জানান, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তারা প্রথমে তাকে শরীরি সম্পর্কের কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ঘোর আপত্তি জানানোর পর তারা ভালোবাসার ম্যাসেজ পাঠাতে শুরু করে। ফোন পেয়ে চাকমা সম্প্রদায়ের জনগণ সন্ন্যাসীদের মোবাইল পরীক্ষা করে যাবতীয় ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পান। সঙ্গে-সঙ্গে দুই ভণ্ড সন্ন্যাসীকে গণধলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে বেধড়ক মার খেয়ে জনতার কাছে ওরা শেষে স্বীকার করেছে নিজেদের কুকর্মের কথা। তারা জানায়, তাদের একজনের নাম বান্তেনবজ্যেতি ধর, বাড়ি অসমের শিলচরে এবং অপরজনের বাড়ি মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। নাম সুভূতি ওরফে সঞ্জয় ভাংড়ে। দুজনেই নকল সন্ন্যাসী সেজে বৌদ্ধধর্ম প্রচারের উদ্দেশে বেরিয়েছে বলে অকপটে স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত আধারকার্ডও নকল বলে ধরা পড়েছে। তাদের একজন আবার নিজেকে নিউ অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সদস্য বলেও নাকি পরিচয় দিয়েছে। দুজনকেই গত কিছু দিন ধরে ওই এলাকায় ধর্মপ্রচারের নামে ভিক্ষাবৃত্তি করতেও দেখা গেছে।
এদিকে ধৃত দুই প্রতারক সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে পেঁচারতল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
2018-12-03