আশঙ্কাই সত্যি হল, কাঞ্চনপুরে আশ্রিত মিজো শরণার্থীরা সবাই ভোট দিলেন না

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ নভেম্বর৷৷ রিয়াং শরণার্থীরা সবাই মিজোরাম বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিলেন না৷ মোট ভোটার ১২০১৪ হলেও ভোট পড়েছে মাত্র ৫৫ শতাংশ৷ প্রায় ৬৬১৪ জন ভোট দিয়েছেন৷ ফলে, আশঙ্কাই সত্যি হল৷ মিজোরামে গিয়ে অনেকেই ভোট দেবেন না, রিয়াং শরণার্থীরা সেই আভাষ আগেই দিয়েছিলেন৷ হলোও তাই৷ কানমুন গ্রাউন্ডে ভোট কেন্দ্রে বুধবার মামিথ, কানমুন, ডাম্পা এবং হাচেক বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ করা হয়েছে৷ কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রিয়াং শরণার্থীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ ফের ত্রিপুরায় ফিরে এসেছেন৷

দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় বাদে মিজোরামে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেন ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীরা৷ গত বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁরা ভোট দিয়েছিলেন৷ কিন্তু, ওই নির্বাচনে ত্রিপুরায় ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ এবারও একই ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন৷ কিন্তু, মিজোরামের কয়েকটি এনজিও’র প্রতিবাদে ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে গিয়ে ভোট দিতে হয়েছে৷ এই ইস্যুতে মিজোরামের মুখ্য নির্বাচন আধিকারীকের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে এস বি শসাঙ্ককে৷ নির্বাচন কমিশন তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেছে আশীষ কুন্দ্রাকে৷

এদিন সকাল ৭টা থেকে মিজোরামে ভোট গ্রহণ শুরু হয়৷ ছোট-বড় ৪০০টি গাড়িতে ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থী ভোটারদের কানমুন নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ জানা গেছে, পথে চারটি গাড়ি বিকল হয়ে গেলে বিকল্প গাড়ির ব্যবস্থা করে রিয়াং শরণার্থীদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ তাতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় তাঁরা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পথে আটকে দেয় নিরাপত্তা কর্মীরা৷ ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া বিকেল ৪টা পর্যন্ত হলেও বিকেল ৩টায় গেইট বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তা কর্মীরা৷ ফলে, ওই ভোটাররা ভোট দিতে যেতে পারছিলেন না৷ পরবর্তী সময়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে তাঁদের ভোট কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়৷

এদিন ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আসাম পুলিশ, মিজোরাম পুলিশ, বিএসএফ এবং সিআরপিএফ’র জওয়ানরা৷ লঙ্গাই নদীর এপাড়ে ত্রিপুরা অংশে নিরাপত্তার দায়িত্বে ত্রিপুরা পুলিশই নিয়োজিত ছিল৷ কাঞ্চনপুর রিয়াং শরণার্থী শিবির থেকে কানমুন ভোট কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৫০-৬০ কিমি৷ ফলে, শরণার্থীরা আভাষ দিয়েছিলেন তাঁরা অনেকেই ভোট দিতে যাবেন না৷ ভোটারদের মধ্যে, বৃদ্ধ এবং গর্ভবতী মহিলাও রয়েছেন৷ ফলে, ৫০-৬০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি কখনই৷ এদিন ভোট কেন্দ্রে তার প্রতিফলনও হয়েছে৷ কাঞ্চনপুর এবং পানিসাগরে ৬টি শরণার্থী শিবিরে ৩৫ হাজারেরও বেশি রিয়াং শরণার্থী রয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে ভোটার মাত্র ১২০১৪ জন৷ পূর্ব অনুমান অনুযায়ী সমস্ত রিয়াং শরণার্থী ভোটার এদিন ভোট দেননি৷ প্রায় ৬৬১৪ জন ভোটার শতকরা হার ৫৫ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন৷ কাঞ্চনপুর রিয়াং শরাণার্থী শিবিরের দায়িত্বে থাকা জনৈক আধিকারীক জানিয়েছেন, রিয়াং শরণার্থীরা গত নির্বাচনের মতো এবারও ত্রিপুরায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে আরো বেশি ভোট পরত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *