কলঙ্ক মাথায় নিয়ে শেষ হল যুব উৎসব

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ নভেম্বর৷৷ দুর্নীতির কলঙ্ক মাথায় নিয়ে শেষ হল উত্তর পূর্বাঞ্চল যুব উৎসব৷ রবিবার রাতে বর্ণাঢ্য নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হল এই উৎসব৷ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছিল যুব উৎসব৷ চারদিন ধরে চলছিল ষষ্ঠ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় যুব উৎসব৷ রবিবার রাতে এই যুব উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ জানা গেছে, অনুষ্ঠান সমাপ্তির আগে সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে৷ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিক৷ স্থানীয় স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে এই সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল৷
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকালে শিশু উদ্যানে এই উৎসবের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমরা দেব৷ প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে চারদিনের এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক শুভ সূচনা করেন৷ যুব উৎসবে আটটি রাজ্যের ১ হাজার ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী যুবক যুবতী অংশগ্রহণ করেছিলেন৷ আটটি রাজ্য যথাক্রমে ত্রিপুরা, অসম, অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম এবং সিকিম৷ চারদিন ধরে চলা যুব উৎসবে আগত আট রাজ্যের যুবক যুবতীরা তাঁদের নৃত্যু, গান পরিবেশিত করেছেন৷
এদিকে, এই যুব উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ আনা হয়েছে ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারীর৷ উৎসবে অংশগ্রহণকারী অতিথিদের খাদ্য সরবরাহ করা থেকে শুরু করে পরিবহণ, থাকার বন্দোবস্ত করা পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে৷ এমনকি সমাপ্তি দিনে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে অলকা ইয়াগ্ণিকের সংগীতানুষ্ঠানে ময়দানে প্রবেশের যে পাস দেওয়া হয়েছে সেনিয়ে সামালোচনা উর্দ্ধে নয় দপ্তর কর্তারা৷ পাসের ব্যবস্থা করলেও তা যৎসামান্য করা হয়েছিল৷ ছিল না পাসের কোন সরকারী স্বীকৃতির কোন ব্যবস্থা৷ তাই অনায়াসে হাজার হাজার জাল পাস তৈরী করে এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গিয়েছেন দর্শকরা৷ যদিও পুলিশ নামকাওয়াস্তে শনিবার রাতে এবং রবিবার সকালে কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়েছে জাল পাস চক্রের পান্ডাদের জালে তুলার জন্য৷ নামমাত্র সাফল্য পেয়েছে৷ কিন্তু, ততক্ষণে বাজারে ছড়িয়ে পড়েছিল জাল পাস৷
এদিকে, রাজ্যে চারদিন ব্যাপী আয়োজিত ষষ্ঠ উত্তর-পূর্বঞ্চল যুব উৎসবের আজসমাপ্তি দিন৷ শিশু উদ্যােনে সমাপ্তি দিনে পুরস্কার বি তরণী অনুষ্ঠানে চারদিন ব্যাপী আয়োজিত যুব উৎসকে সফলরূপ দেওয়ার জন্য উৎসব পরিচালনা কর্মসূচির সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজ্যের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব৷ অনু,টানে তিনি বলেন, রাজ্যে প্রথম এমন জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব হলো৷ এরমধ্যে দিয়ে উত্তর-পর্বের সমস্ত অংশের সংসৃকতির সঙেঙ্গ রাজ্যের মানুষ পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে৷ রাজ্যের মানুষ পরখ করার সুযোগ পেয়েছে ভিন রাজ্যের নানা খাদ্য দ্রব্যের৷ মন্ত্রী স্রীদেব এই যুব উৎসবে অংসগ্রহণকারীদের আবারো এ রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ জানান৷ অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নেহেরু যুব কেন্দ্রের মণিপুরের অধিকর্তা জে কী রুইভাহ৷ বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা সকরের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব সমরজিৎ সিনহা৷ উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা উদয়ন সিনহা৷
অনুষ্ঠানে ৮টি রাজ্যের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার ও শংসাপত্র বি তরণ করা হয়৷ অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷ উত্তর পূর্বাঞ্চল যুব উৎসবে ক্লে মডেলিং এ প্রথম হয়েছে মণিপুরের তুলাচন্দর সিং, দ্বিতীয় অরুণাচল প্রদেশের বি কাশ দাস এবং তৃতীয় হয়েছে ত্রিপুরার সুকান্ত দেবনাথ৷ ফটোগ্রাফিতে প্রথম হয়েছে ত্রিপুরার শুভঙ্কর দাস, দ্বিতীয় আসামের ত্রিনয়ণ জ্যোতি বেরো এবং তৃতীয় হয়েছে মিজোরামের লালদাম পুইজা৷ ইনস্টুমেন্টাল গীটার প্রতিযোগিতায় প্রথম মেঘালয়ের বিজলিয়েল মিয়ো পি ডিখার, দ্বিতীয় হয়েেছ অরুণাচল প্রদেশের বাপু দোলন এবং তৃতীয় হয়েছে নাগাল্যান্ডের নিয়েতসেইলসি লিনজি৷ লোকনৃতে প্রথম ত্রিপুরা, দ্বিতীয় মেঘাল এবং তৃতীয় হয়েছে মিজোরাম৷ লোকসঙ্গীতে প্রথম ত্রিপুরা, দ্বিতীয় মণিপুর এবং তৃতীয় হয়েছে মিজোরাম৷ রকব্যান্ডে প্রথম অরুণাচল প্রদেশ, দ্বিতীয় মেঘালয় এবং তৃতীয় ত্রিপুরা৷ পেইন্টিং-এ প্রথম ত্রিপুরার সংগীতা পাল, দ্বিতীয় সিকিমের প্রহ্লাদ বিশ্বকর্মা এবং তৃতীয় হয়েছে নাগাল্যান্ডের লিপক মেনেন৷ পেইনটিং প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে আসামের ঋতিক রেহান, দ্বিতীয় হয়েছে মণিপুরের লাইসরাম বি পিন সিং এবং তৃতীয় হয়েছে সিকিমের চুজিং লেপচা৷