BRAKING NEWS

বিক্ষিপ্ত ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে পালিত অসম বনধ-এর মিশ্র প্রভাব

গুয়াহাটি, ৩ নভেম্বর (হি.স.) : বৃহস্পতিবার সন্ধ্যারাতে উজান অসমের সৈখোয়াঘাটের খেরবাড়িতে সংঘটিত নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বাঙালি ষুবছাত্র ফেডারেশন-সহ বাঙালি যৌথ সমন্বয় সমিতি আহূত ২৪ ঘণ্টার বনধ-এর আংশিক প্রভাব পড়েছে নিম্ন অসমে।
আজ শনিবার সকালে জেলা সদর ধুবড়ি-সহ বিলাসীপাড়া, সাপটগ্ৰাম, গৌরীপুরে বনধ সফল করতে রাস্তায় নামেন শতাধিক পিকেটার্স। তবে তাদের বেশিরভাগকেই আটক করা হয়েছে। এই খবর লেখা পর্যন্ত ধুবড়ি জেলার প্রায় ৩০০-এর বেশি বনধ সমৰ্থকরে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আটকদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক যুবতী ও মহিলা রয়েছেন। অবশ্য ধুবড়ি, বিলাসীপাড়া, গৌরীপুরে বনধ সফল বলে জানা গেছে।
জেলার গোলকগঞ্জে সর্বাত্মক হয়েছে বনধ। বাঙালি যুবছাত্ৰ ফেডারেশনের স্থানীয় কর্মকর্তা-সদস্যরা এক প্ৰতিবাদী মিছিলও বের করেছেন। অসম বনধ-এর সমৰ্থনে রাজপথে শতাধিক জনতার ঢল নেমেছে। তাদের মুখে ছিল সরকার-বিরোধী নানা স্লোগান। প্রতিবাদকারীরা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অবস্থান করে উত্তাল করে তুলেন।
এদিকে বনধ-এর নামে নগাঁও জেলায় কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। জেলার আমনিতে গাড়ির কাঁচ ভাঙা হয়েছে। অন্যদিকে, ওরাঙে বনধ সার্থক করতে গিয়ে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টিকারী ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নগাঁও জেলার কলিয়াবরে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ গড়লে সেখানেও বাঙালি যুবছাত্র ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খলতার অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় সড়কে কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালাতে গেলে বিপত্তির সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ও আধাসেনা বাহিনী।
হোজাইতেও বিক্ষিপ্ত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আজ সকালে জবরদস্তি দোকানপাট বন্ধ করাতে গিয়েছিলেন কতিপয় পিকেটার্স। দোকান বন্ধ করানোকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী ও পিকেটার্সদের মধ্যে প্রথমে বচসা পরে মারামারির সৃষ্টি হয়। এতে দুই বনধ-সমৰ্থক আহত হয়েছেন। এদিকে জেলার লংকা এলাকার ভালুকমারিতে ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশি হস্তক্ষেপে বেশি সময় টেকেনি অবরোধ।
মরিগাঁও জেলার জাগিরোডেও বনধ সমৰ্থক এবং সাধারণ জনতার মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। রাজপথে বনধ সমৰ্থকদের সঙ্গে পথচলতি জনতার মধ্যে আক্ৰমণ-প্ৰত্যাক্ৰমণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে কয়েকজন অল্পবিস্তর আহতও হয়েছেন। বনধের বিরোধিতা করে একাংশ স্থানীয় জনতা রাস্তায় নামলে সৃষ্টি হয় সংঘাত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্ৰণে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। উভয় পক্ষের সংঘাতে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাতের সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, জাগিরোডে সরকারি ও বেসরকারি অফিস-কাছারি, ব্যাংক, দোকান-পাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিমা কাৰ্যালয়ের কাজকর্ম স্বাভাবিক ছিল। জেলার বুক চিড়ে যাওয়া ৩৭ এবং ৩৯ নম্বর জাতীয় সড়কও ছিল স্বাভাবিক।
অন্যদিকে, নিম্ন অসমের বরপেটারোড থেকেও বিক্ষিপ্ত হিংসাত্মক ঘটনার খবর এসেছে। সেখানে বিবাহযাত্ৰীর বাসে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে। সরভোগ থেকে শিবসাগরের দিকে যাচ্ছিল বিবাহযাত্ৰীর বাসটি। এছাড়া স্কুলে নিজের পুত্রসন্তানকে দিতে গেলে বনধ সমৰ্থকদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন অভিভাবক। বরপেটারোডে ৩৬ জন বনধ সমৰ্থককে আটক করেছে পুলিশ। অসম বনধ-এ গোলাঘাটত জেলায়ও জনজীবন স্বাভাবিক ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। জেলার তিন মহকুমাও ছিল স্বাভাবিক ছন্দে।
এদিকে উজান অসমের ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, শিবসাগর, লখিমপুরও ছিল সচল। তিনসুকিয়ায় আজ কোনও বনধ পালন করা হয়নি। বাঙালি যুবছাত্র ফেডারেশনের স্থানীয় জনৈক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল ১২ ঘণ্টার বনধ স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালেন করেছেন জেলার সর্বস্তরের মানুষ। তাই আজ আর তিনসুকিয়ায় বনধ কর্মসূচি পালন করার কোনও মানেই হয়না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *