ঘাটতি বাড়ল পুর বাজেটে, আয় বাড়াতে সম্পত্তি কর আদায়ে জোর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ সেপ্ঢেম্বর৷৷ প্রতিবছরের মতই ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ঘাটতি রেখেই বাজেট পেশ করল পুর নিগম৷ তবে, এবছর

বৃহস্পতিবার ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করেন পুর নিগমের মেয়র ডা প্রফুল্লজিৎ সিনহা৷

ঘাটতির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে৷ পুর নিগম আয় বাড়াতে এ বছর বাজেটে সম্পতি কর আদায়ে বিশেষ জোর দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার আগরতলা পুর নিগম ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের জন্য ২১৮কোটি ৭১ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকার বাজেট পেশ করেছে৷ তাতে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৯৬ লক্ষ ৭১ হাজার টাকার৷ আয় বাড়াতে পুর নিগম ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে সম্পত্তি কর আদায়ের ৪২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করেছে৷ পুর নিগমের মেয়র ডা প্রফুল্লজিৎ সিনহার মতে, সম্পত্তি কর আদায় আশানুরূপ হচ্ছে না৷ তাই, টিম গঠন করে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে সম্পত্তি কর আদায়ের জন্য৷

এদিন বাজেট পেশ করার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুর নিগমের মেয়র ডা সিনহা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর বাজেট বরাদ্দ কমেছে৷ প্রায় ১৪১ কোটি টাকা বাজেটে কম বরাদ্দ করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে তাঁর যুক্তি, বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অর্থ পুর নিগমের জন্য বরাদ্দ না হওয়ায় বাজেটে কম ধরা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে৷ তাই এই খাতে কোনও অর্থ পাওয়া যাবে না৷ তাছাড়া, আমরুট প্রকল্পটি এখন সম্পূর্ণই রাজ্য সরকারের তত্বাবধানে রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, স্মার্ট সিটি প্রকল্পটিও বেসরকারী সংস্থা গঠন করে রূপায়িত হচ্ছে৷ ফলে, ওই প্রকল্পগুলির অর্থ পুর নিগমের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে না৷ তাই, বাজেটে বরাদ্দ কম করা হয়েছে৷

তবে, উন্নয়নের কাজে ব্যয় বরাদ্দ একই রয়েছে বলে দাবি করেন পুর নিগমের মেয়র৷ নির্দিষ্ট ওই প্রকল্পগুলি ছাড়া আর কোনও খাতেই বরাদ্দ কমানো হয়নি৷ তাঁর কথায়, বাজেটের ৭০ শতাংশ অর্থ উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, বাজেটে আয় ধরা হয়েছে ২১৭ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা৷ সেই তুলনায় ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৮ কোটি ৭১ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা৷ স্বাভাবিক ভাবেই ঘাটতি থাকছে ৯৬ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা৷ এদিন উন্নয়নের কাজ নিয়ে পুর কমিশনার সৈলেশ কুমার যাদবের দাবি, উন্মুক্ত স্থানে মল ত্যাগ মুক্ত করতে শৌচালয় বানানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে ১২ হাজার টাকা দিচ্ছে তার সাথে পুর নিগম আরও ৩ হাজার টাকা যোগ করছে৷

পুর নিগমের আয় বাড়াতে এবার বাজেটে সম্পত্তি কর আদায়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে৷ ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সম্পত্তি কর সংগ্রহ হয়েছে ১৯ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা৷ তবে, এই সংগৃহীত অর্থ আশানুরূপ নয় বলে দাবি করেন পুর নিগমের মেয়র৷ তাঁর কথায়, এবছর বাজেটে ৪২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সম্পত্তি কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, পুর এলাকার বাসিন্দারা সঠিক ভাবে সম্পত্তি কর দিচ্ছেন না৷ পুর নাগরিকরা সম্পত্তির যে হিসাব উল্লেখ করে কর দিচ্ছেন তা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক নয়৷ পুর নিগমের মেয়রের কথায়, সেন্ট্রাল জোনে যে পরিমাণ সম্পত্তি কর আদায় হওয়ার কথা ছিল তার ধারেকাছেও আদায় হচ্ছে না৷ তাই, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিশেষ টিম গঠন করে প্রত্যেক জোনে সমীক্ষা করা হবে৷ পুর নাগরিকদের বিবরণ প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে খতিয়ে দেখবে ওই টিম৷ বিবরণে ভুল তথ্য দেওয়া হলে জরিমানা আদায় করা হবে৷ পুর কমিশনারের মতে, প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে বিবরণ পরীক্ষা করার যথেষ্ট পরিকাঠামো রয়েছে৷ ফলে, সম্পত্তি কর আদায় এবছর বাড়ানো হবেই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *