কলকাতা, ৪ সেপ্টেম্বর, (হি.স.): ফিরে এল পোস্তা উড়ালপুল আতঙ্ক । ভেঙে পড়ল দক্ষিণ কলকাতার প্রায় ৪০ বছরের পুরানো মাঝেরহাট ব্রিজ । মাঝেরহাট উড়ালপুল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১ জনের ঘটনায় আহত হয়েছেন ২০ জন | আহতদের এসএসকেএম ও সিএমআরআই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে | উদ্ধার কার্যে নামল, দমকল, কলকাতা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মকাবিলাবাহিনী । মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী | ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন পাহাড় সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় | তিনি ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন | ঘটনার পরই ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী | যান রাজ্যের একাধিক নেতা-মন্ত্রী |
ফিরে এল পোস্তা উড়ালপুল আতঙ্ক । মঙ্গলবার শহরের বুক কাঁপিয়ে ফের ভেঙে পড়ল সেতু। এ বার দক্ষিণ শহরতলির মাঝেরহাট ব্রিজ। শহরের অন্যতম ব্যস্ত এই সেতুটি আচমকাই ধসে পড়ে মঙ্গলবার বিকেল । সেতুর ভাঙা অংশের সঙ্গে সঙ্গে নীচে পড়ে যায় একটি মিনি বাস, তিনটি প্রাইভেট কার, দুটি অ্যাপ ক্যাব এবং দুটি বাইক। কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সরকারিভাবে ১জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর | তবে বেসরকারিভাবে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে । এদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই । এক জনের মৃত্যু হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে । এই ঘটনায় আহত হয়েছে মোট ২০ জন | ইতিমধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালে ১০ জন আহতকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । সিএমআরআইতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আরও ১০ জনকে। এদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, বাকি তিনজন মহিলা। সেতু ভেঙে পড়ার পর পরই উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন স্থানীয় লোকজন। হতাহতদের নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতাল এবং সিএমআরআই-এ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকাজে নামে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। সরকারি ভাবে ডাকা না হলেও, উদ্ধার কাজে হাত লাগান সেনাবাহিনীর জওয়ানরাও। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে এক জনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। সিএমআরআই-এ ভর্তি করানো হয়েছে ১০ জনকে। ভাঙা সেতুর নীচে একটি টিনের ছাউনির ঘরে কয়েক জন এখনও আটকে আছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ঘটনা ঘটার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নগর উন্নয়ণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । যান বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী লকেট চট্টপাধ্যায় ও একাধিক নেতা । আসেন রাজ্যপাল কেশরিনাথ ত্রিপাঠী | সেতুর হাল দেখে ক্ষোভ জানান রাজ্যপাল। তিনি বলেন, সেতুতে গর্ত ছিল। পূর্ত দফতর এটা জানত না? ওই সেতু দেখভাল করার দায়িত্ব রেল ও পূর্ত দফতরের। সেতুর আরও রক্ষণাবেক্ষণ দরকার ছিল। এর তদন্তের দরকার আছে।
মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিজ কীভাবে ভেঙে পড়ল তার উচ্চপদস্থ তদন্তের নির্দেশ দিলেন দেন । জানান, মুখ্য সচিব মলয় দের নেতৃত্বে এই তদন্ত হবে । বর্তমানে তিনি দাজিলিং-এ রয়েছেন । সেখান থেকেই সব বিষয় নজর রাখছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ, আহতদের হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে ৷ প্রত্যেক চিকিৎসকদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা করার কথা বলা হয়েছে ৷ চিকিৎসা খরচ দেবে রাজ্য সরকার ৷
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙ্গে পরার ঘটনায় তদন্তের দাবি করেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেতা বিমান বসু ৷ মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক ঘটনা ৷ চারজন মারা গেছে ৷ তাদের পরিবারকে সমবেদনা জানায় ৷ কিন্তু ব্রিজ ভাঙল কেন তা তদন্ত করে কারণ অনুসন্ধান করা উচিত’৷
মাঝের হাট ব্রিজ দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় । মঙ্গলবার বিকেলে ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরই তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী এই ব্রিজ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী । ওরা বলছে শহরের সৌন্দর্যায়ন চলছে । কিন্তু, পুরনো জিনিসের সংরক্ষণের কথা কারও মনে নেই’। তাঁর মতে, ‘এই ঘটনার পুরো দায় রাজ্য সরকারের নেওয়া উচিৎ’।
মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, কলকাতায় মাঝেরহাট ব্রিজের একাংশ ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে দুঃখ পেয়েছি। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকে কাতর পরিবার এবং আহতদের প্রতি আমার সমবেদনা এবং প্রার্থনা রইল।
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরই ট্যুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷ ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক বলে ট্যুইট করেন তিনি ৷ লেখেন, ‘কলকাতে ব্রিজের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে৷ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ৷ আহতদের পরিবারের পাশে আছি ৷ যারা আহত তাঁরা দ্রুত সুস্থ হন এই কামনা করি’ ৷
এদিনের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, কলকাতার মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দল ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। আরও একটি দলকে পাঠানো হচ্ছে। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এই প্রার্থনাই আমার রইল। উল্লেখনীয় বিষয় গোটা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গোটা বিষয়টি জানান।
এদিনের দুর্ঘটনার পর বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সম্পাদক রাহুল সিনহাও প্রশ্ন তোলেন রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে । রাহুলবাবু বলেন, ‘রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। কলকাতার আরও কিছু ব্রিজের অবস্থা খারাপ । ব্রিজের ধারণ ক্ষমতার থেকে বেশি ওজনের মাল নিয়ে গাড়ি প্রতিদিন যাতায়াত করছে । প্রশাসন খবর রাখে না । কিছু ব্রিজের অংশ ঝুলে পড়েছে। সাধারণ মানুষের চোখে পড়েছে । প্রশাসনের চোখে পড়ছে না’ । রাহুলবাবু এদিন আরও বলেন, ‘রাজ্য সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের গ্রেফতার করতে বেশি সময় নেয় না। কিন্তু ভাঙাচোরা ব্রিজ সারাই করার কোন ইচ্ছে নেই’। তিনি, ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানান ।
মাঝেরহাট ব্রিজের পাশেই চলছিল জোকা-বিবাদি বাগ মেট্রো রেলের কাজ । ব্রিজ ভেঙে পড়ার পিছনে তার কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে । ব্রিজের নীচেই বজবজ যাবার রেললাইন । নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পের শ্রমিকদের আস্তানা । মাথার উপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল সেতু । বুঝে ওঠার আগেই মৃত্যুর মুখোমুখি তারা । তাদের অনেকেই ব্রিজের তলায় চাপা পরে রয়েছেন । ব্রিজের তলায় আটকে আছে একাধিক অ্যাপ ক্যাব ও একটি মিনি বাস । আশঙ্কা অনেক মানুষ সেখানে আটকে পড়েছেন ৷ উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনাবাহিনী । কিন্তু তাদের উদ্ধারে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের ৷ কারণ তাদের সামনে দুটো চ্যালেঞ্জ ৷ প্রথমত, আলোর অভাব ৷ দ্বিতীয়ত, প্রতিকূল আবহাওয়া ৷ এই মুহূর্তে আলোর অভাব ও বৃষ্টিই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উদ্ধারকারীদের কাছে ৷ তবুও তার মধ্যে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা ৷ আলোর অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যহত যাতে না হয় তার জন্য বিশেষ আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ আনা হয়েছে জেনারেটর ৷ বিশেষজ্ঞ দল ছাড়া কাউকে দুর্ঘটনাস্থলের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ এছাড়া দমকলও সার্চ লাইট জ্বালিয়ে ব্রিজের তলায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে তৎপর হয়েছে ৷ কিন্তু এই আলো যে যথেষ্ট নয় তা মানছেন উদ্ধারকর্মী ও দমকল ৷ যতটুকু আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে তা দিয়েই উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দমকল কর্মীরা ৷ অপরদিকে সেখানে ঝিরিঝিরে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে ৷ প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই থমকে যেতে পারে উদ্ধারকাজ ৷
আচমকাই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে দক্ষিণ শহরতলির এই গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত সেতুটি। মঙ্গলবার বিকাল পৌনে পাঁচটা নাগাদ রেললাইনের ওপর মাঝেরহাট ব্রিজের ১০০ মিটারের বেশি জায়গা ভেঙে পড়ে । ব্রিজের তলা ও উপর দিয়ে গাড়ি যাচ্ছিল, ঘটনার মুহূর্তে দুটি বাসও যাচ্ছিল ব্রিজের ওপর দিয়ে । বহু মানুষ আটকে যেমন পড়েছেন,তেমনই তুবড়ে গেছে বহু গাড়ি । এখনও একাধিক মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে । স্থানীয়রাই প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করেছেন । এটি একটি চালু ব্রিজ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ব্রিজের উপর দিয়ে এবং নিচ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছিল । তাই এই দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে ।
দক্ষিণ কলকাতার সঙ্গে বজবজের যোগাযোগ তৈরি করে এই ব্রিজ। সেই ব্রিজের একাংশই ভেঙে পড়েছে মঙ্গলবার বিকেলে । কর্মব্যস্ত দিনে এই ব্রিজ দিয়ে বহু গাড়ি চলাচল করছিল । সেখানে একাধিক গাড়ি আটকে থাকতে পারে বলে জানা যাচ্ছে । এই ব্রিজের তলা দিয়েই গিয়েছে বজবজ শাখার রেললাইন । মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ার কারণে শিয়ালদহ থেকে বজবজ শাখার সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিল পূর্ব রেল । এর ফলে অফিস টাইমে অফিস যাত্রীদের ভোগান্তির মুখে পরেন ।
প্রতি মুহূর্তের খোঁজ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় ফিরতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । কিন্তু বিমান না থাকায় ফিরতে পারছেন না । তবে পুলিশ আধিকারিকদের কাছ থেকে প্রতি মুহূর্তের খবর নিচ্ছেন । এমনকী সেখানে প্রতিনিধিও পাঠিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জানিয়েছেন, ‘গুরুত্ব দিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে । একজনের মৃত্যু হলেও সেটা দুঃখজনক’। দার্জিলিঙে বসেও সেখানকার খবর নিচ্ছেন তিনি । বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড় থেকে সমতলে নামতে পারছেন না তিনি । তাই ইতিমধ্যেই পুলিশ কমিশনার সহ জনপ্রতিনিধদের উদ্ধারকাজে হাত লাগাতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । পাহাড় থেকে তিনি বলেন, ‘আমার মন পড়ে রয়েছে মাঝেরহাটে । বাংলার মানুষ বিপদে পড়েছেন কিনা তা নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি । ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি পাঠিয়েছি । দ্রুত উদ্ধারকাজ করতে বলেছি । দ্রুত সেখানে পৌঁছনোর চেষ্টাও করছি’। দুর্ঘটনার খবর পেয়েও মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরতে পারছেন না । কারণ, শিলিগুড়ি পৌঁছতেই তাঁর ৪ ঘণ্টা লাগবে। তাছাড়া এখন বাগডোগরা থেকে কলকাতায় ফেরার কোনও বিমানও নেই ।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে । প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজে বার্তা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর । শহরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে । আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিএমআরআই আর এসএসকেএম হাসপাতালে ।
রাত পর্যন্ত ব্রিজের তলা থেকে দেহ টেনে বার করে আনার চেষ্টা চলছে । দুটো বাস, বহু গাড়ি ও বাইক ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে । আপাতত ডায়মন্ডহারবার রোড থেকে মাঝেরহাট ব্রিজে ওঠার রাস্তাটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । ক্রেন দিয়ে ব্রিজের ভাঙা অংশ টেনে বার করা হচ্ছে । ভাঙা অংশের চারদিক লোহার গার্ডওয়াল দেওয়া হয়েছে । গাড়িগুলিকে ক্রেন দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে । ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া বাসটির চাকা ফুটো করে হাওয়া বার করে দেওয়া হয়েছে, যাতে বাসটি গড়িয়ে না যায় । হাওড়া-বেহালা রুটের একটি বাস আটকে রয়েছে । আপাতত বন্ধ বজবজ-শিয়ালদা শাখার ট্রেন চলাচল । বন্ধ রয়েছে ডায়মন্ড হারবার রোডও । তৈরি হয়েছে ব্যাপক যানজট । ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ভেঙে পড়ে পোস্তা উড়াল । ২ বছর পর আবারও কলকাতায় ফিরে এল সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি ।