গকুলপুরের গৃহবধূকে আত্মহত্যার প্ররোচনা, গ্রেফতার দুই

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ আগষ্ট৷৷ উদয়পুর গকুলপুরের গৃহবধূ জয়া দেবনাথের আত্মহত্যার ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে উদয়পুর মহিলা থানার পুলিশ। প্রসঙ্গত এই আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ছয়জনের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের নাম পিন্টু দেবনাথ (২৭) এবং অপরজন টুটন দাস (২৭)। বাকি চার অভিযুক্ত পলাতক।জানা গেছে, উদয়পুর মহিলা থানার পুলিশ ছয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪, ৪৪৭, ৩২৩ এবং ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই অন ক্যামেরায় নিজের মৃত্যুর কারণ জানিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন এক গৃহবধূ। গৃহবধূ জয়া দেবনাথ তাঁর ভিডিও রেকর্ডিঙে জানিয়েছিলেন কেন তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সামাজিক অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ তিনি বেছে নেন। মৃত্যুর আগে তিনি সবকিছু ক্যামেরার সামনে বলে যান, কারা তাকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচনা দিয়েছে। গৃহবধূ জয়া দেবনাথ যে গ্রামে থাকতেন সেই গ্রামের কিছু বাসিন্দা তাঁকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচনা দিয়েছিল। তাদের নামও এই মহিলা ক্যামেরার সামনে বলে গেছেন।এই ঘটনায় মৃতার বাবা রাধাকিশোরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। কিন্তু জয়ার বাবা এই ঘটনার জন্য জয়ার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেননি। বরঞ্চ স্বামীর নামে প্রশংসা করেছেন মৃতার বাবা। উল্লেখ্য, জয়ার স্বামী হরেকৃষ্ণ দেবনাথ একদিন বাড়ি ফেরার পথে তার এক বন্ধুকে সঙ্গে করে নিয়ে যান। সেখান থেকে শুরু ঘটনার সূত্রপাত। স্বামীর বন্ধুকে বাড়ি নিয়ে আসার ঘটনাকে মোটেই ভালো চোখে দেখেননি স্থানীয় কিছু লোক। জয়ার স্বামী হরেকৃষ্ণ দেবনাথ বন্ধুকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার পর এলাকার কয়েকজন লোক ওই লোক এবং জয়ার নামে নানান কুৎসা রটনা করেছেন বলে অভিযোগ। শুরু হয় জয়াকে অপবাদ দেওয়া। এমন-কি তাকে চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া জয়া চরিত্রহীনাও বলা হয়েছিল। অভিযোগে ইন্ধন জুগিয়েছে জয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। জয়ার উপর চারিত্রিক আক্রমণ এখানেই শেষ হয়নি। অপবাদ দেওয়া হয় জয়া নাকি চরিত্রহীনা, তিনি প্রতিনিয়ত পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত থাকেন ইত্যাদি। শুধু তা-ই নয় শেষের দিকে গ্রামের কিছু শিক্ষিত অথচ বিকৃত চিন্তার লোক জয়ার প্রাণনাশের হুমকিও দেন। দিনের পর দিন এত অপমান সহ্য করতে না পেরে জয়া আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *