দেওরিয়া জেলায় হোম থেকে উদ্ধার ২৪ নাবালিকা, গ্রেফতার ২

দেওরিয়া, ৬ আগস্ট (হি.স.) : বিহার পর এবার উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া জেলায় একটি হোম থেকে ২৪ জন মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে । ইতিমধ্যেই হোমের মালিক গিরিজা ত্রিপাঠী এবং তাঁর স্বামী মোহন ত্রিপাঠীকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ। ওই হোমটিও সিল করে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার রাতে ওই হোম থেকে পালিয়ে যায় একটি মেয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে তাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। এরপরেই সামনে আসে আসল ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মেয়েটি তাদের বলে প্রতি রাতে হোম থেকে বেশ কিছু মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। তারপর ভোরবেলা আবার তারা ফিরে আসত হোমে। ওই মেয়েটি এও জানায় যে ওই হোমে যারা থাকতেন তাদের সবারই বয়স ১৫ থেকে ১৮-এর মধ্যে। জোর করে যৌন মিলনে বাধ্য করা হতো এই মেয়েদের। এমনকী ত্রিপাঠী দম্পতি নিজেদের কাজের লোক হিসেবেও খাটাতেন এই মেয়েদের। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছিল হোম থেকে পালিয়ে আসা মেয়েটি।
খবর পেয়ে ওই হোমে রেড চালায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে ২৪ জন মেয়েকে। যদিও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ১৮ জন। উদ্ধার হওয়া মেয়েদের মেডিক্যাল চেকআপের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ। ওই হোমটিও সিল করে দেওয়া হয়েছে। দেওরিয়া জেলার বেসরকারি এই হোমটি লখনও থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
প্রথমে অবশ্য সরকারি অনুদান পেত এই হোম। কিন্তু ২০১৭ সালে সিবিআই তদন্তের পর অ্যাফিলিয়েশন বাতিল হয়ে যায় হোমের। সিবিআই আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, ওই হোমের কাজে বেশ কিছু গন্ডগোল রয়েছে। কিন্তু তারপরেই ওই হোম চালাচ্ছিলেন ত্রিপাঠী দম্পতি। এমনকী পুলিশ ওই হোমে তদন্ত করতে গেলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এই দু’জনের বিরুদ্ধে। সেই সময় প্রথম তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এসপি রোহন পি কানায় জানিয়েছেন, “যে মেয়েটি কাল পালিয়ে এসেছে এই হোমে ও তিন বছর ধরে রয়েছে। মেয়েটি আমাদের জানিয়েছে ওকে বাড়ির কাজের লোক হিসেবেই ব্যবহার করতেন ত্রিপাঠীরা। প্রতি রাতেই হোম থেকে গাড়ি করে মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া হত। আবার ভোরবেলা ফিরিয়ে আনা হত। এমনকী বেআইনি ভাবে দত্তক নেওয়ায় চলত ওই হোমে। আমরা এখন নিখোঁজ মেয়েদের খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছি।”
উত্তরপ্রদেশের মহিলা এবং শিশুকল্যান মন্ত্রী রীতা বহুগুণা যোশী জানিয়েছেন,তদন্তের জন্য দুই সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি পাঠানো হয়েছে দেওরিয়ার ওই হোমে । তারা এদিন সেখানে থাকবেন এবং একটি রিপোর্ট জমা দেবেন, যার পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে । তিনি আরও বলেন, এই হোমটি সম্পূর্ণ বেআইনি। সিবিআই ওই হোমের অ্যাফিলিয়েশন বাতিল করার পর থেকেই হাইকোর্টে এই হোমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে হোমে থেকে মেয়েদের বেআইনি কাজে ব্যবহারের অভিযোগে একটি এফআইআরও দায়ের হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত ত্রিপাঠী দম্পতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেই জানিয়েছেন রীতাদেবী।