দিব্যাঙ্গ শিশু সহ ধর্ষিতা দুই, অপহৃতা এক, রাজ্যে নারী সুরক্ষা প্রশ্ণের মুখে

নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, বিশালগড়, বক্সনগর, ২২ জুন ৷৷ রাজ্যে পৃথক স্থানে ধর্ষণ ও এক জনকে ধর্ষণের পর খুনের চেষ্টা হয়েছে৷ দিব্যাঙ্গ শিশু সহ দুই জন ধর্ষিতা হয়েছেন৷ এক জনকে তার প্রেমিক ধর্ষণের পর খুনের চেষ্টা করেছে৷ অপর আরেকটি ঘটনায় এক নাবালিকা ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে৷ একই সাথে রাজ্যে একাধিক ঘটনায় নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ণ উঠেছে৷

ভালোবাসার পরিণতি যে ধর্ষণ এবং শেষ পর্যন্ত খুনের চেষ্টা, তা হয়তো ১৭ বছর বয়সি সেই নাবালিকা মেয়েটি হয়তো বুঝতে পারেনি৷ ঘটনাটি ঘটেছে উদয়পুরের দাতারামে৷ জানা গেছে, ১৭ বছর বয়সি এক নাবালিকা সুকলে যাওয়ার পথে তারই প্রেমিক তাকে তুলে নিয়ে একটি নির্জন ঘরে আটকে রাখে বলে অভিযোগ৷ কিন্তু পরে বিরোধের জেরে মেটিকে বিষ খাইয়ে খুন করারও চেষ্টা করে অভিযুক্ত যুবক সেন্টু মারাক৷ এর পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করে৷ এদিকে মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে মহিলা থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা৷ কিন্তু মেয়েটিকে খোঁজার ব্যাপারে মহিলা পুলিশ সে রকম কোনও আগ্রহ দেখাননি বলে অভিযোগ করে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা৷ অন্যদিকে অভিযুক্ত যুব সেন্টু মারাক টানা ১২ দিন ধরে নাবালিকা মেয়েটিকে আটকে রাখে৷ সে নিজেও সেই ঘরেই ছিল৷ সে মেয়েটিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল৷ কিন্তু তার বাড়ির লোকজন রাজি ছিলেন না৷ কিন্তু পরে অপহৃত মেয়েটিকে বিষ খাইয়ে দিয়ে সেন্টু নিজেও বিষ কেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে৷ পরে তাদের দুজনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদয়পুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, তারা তদন্ত শুরু করেছে এবং সেন্টু মারাকের বিরুদ্ধে ২৯/১৮ ধারা অনুযায়ী ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬, ৩৪৩, ৩৭৬ (২) এবং ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে৷

এদিকে, বিশালগড়ের বাইদ্যাদিঘি এলাকা থেকে ১৪ বছরের এক নাবালিকা ছাত্রীর অপহরণের ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ ঘটনাটি লাভ-জিহাদ বলে এলাকায় প্রচার হয়েছে যদিও পুলিশ ও এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে৷ রাতেই পুলিশ ১৪ বছর বয়সি অপহৃতা নাবালিকাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে৷ ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরতা এক ছাত্রীর অপহরণজনিত ঘটনা ঘটে বিশালগড় বাইদ্যাদিঘি এলাকায়৷ জানা গেছে, ছাত্রীটি সুকল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি মারুতি গাড়িতে তুলে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়৷ পুলিশ পরে অপহরণকারীদের কলমচৌড়া থানা এলাকার পুটিয়া গ্রামের শিমূল, ফখরুল এবং আনামূল হিসাবে চিহ্ণিত করে৷ শিমূল নামে যুবকটির সঙ্গে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় ওই নাবালিকাটির৷ এর পর ক্রমাগত সে মেয়েটিকে ফোনও করতো৷ এমনকি তাকে অপহরণ করার হুমকিও পর্যন্ত দিয়েছিল৷ অপহরণের ঘটনায় নাবালিকা ছাত্রীর বাবা থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির বাবা মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করে এবং রাতে পুলিশ অপহৃতা নাবালিকা ছাত্রীকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়৷ এর পর গ্রেফতার করা হয় অপহরণ-কাণ্ডে জড়িত তিন যুবককে৷

অপরদিকে, সোনামুড়ায় এক দিব্যাঙ্গ শিশু ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে৷ তবে পুলিশ এখনও কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেনি৷ ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, আচমকা দিব্যাঙ্গ শিশুর শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সকলের সন্দেহ হয়৷এ ঘটনায় সাত বছরের শিশুকন্যার পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়৷ প্রথমাবস্থায় তারা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না, কী হয়েছে তাঁদের শিশুকন্যার৷ শিশুর শরীর থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় তাঁরা শিশুটিকে সোনামুড়া হাসপাতালে নিয়ে যান৷ সেখানে সামান্য চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা রোগিণীকে জিবি হাসপাতালে রেফার করে দেন৷ জানা গেছে, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মেয়েটি ধর্ষণের শিকার৷ এদিন মেয়েটিকে জিবি হাসপাতালের চিকিৎসকরা অপারেশন করেন রক্ত বন্ধ করার জন্য৷ হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে চিকিৎসকরা একটি মেডিক্যাল বোর্ড বসান৷ সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মেয়েটিকে অবজারবেশনে রাখা হবে যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসে৷

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মেয়েটি খুবই দুর্বল৷ মেয়েটির চোখের দৃষ্টি কম৷ তার হাঁটাচলার ক্ষমতাও নেই বললেই চলে৷ তারা আরও  জানিয়েছেন, মেয়েটির শারীরিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *