টিএমসি’র ফি বৃদ্ধি, গরীব অংশের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস রাজ্য সরকারের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ জুন৷৷ সোসাইটি পরিচালিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ফি বৃদ্ধিতে গরীব অংশের মেধাবি ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াবে

বিধানসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন৷

রাজ্য সরকার৷ শুক্রবার বিধানসভা আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন৷

শুক্রবার বিধানসভায় ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তির ফি বৃদ্ধি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষনী নোটিশ আনেন বিধায়ন সুধন দাস৷ তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে এই নোটিশের বিবৃতি চেয়েছেন৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই নোটিশ সম্পর্কে তৎক্ষনাৎ জবাব দিতে প্রস্তুত হন বলে জানান৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে৷ সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে, প্রত্যেকটি রাজ্য সরকার বেসরকারী কলেজের ফি নির্ধারণে উচ্চ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে একটি কমিটি তৈরি করতে হবে৷ ওই কমিটি কলেজের ফি নির্ধারণ করবে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, প্রত্যেক কলেজই ইচ্ছা থাকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর৷ রাজ্য সরকার ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজকে নানাভাবে আর্থিক সহায়তা করছে৷ তাই এখন কমিটি মেডিক্যাল পড়ুয়াদের জন্য ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাতে গত বছরের তুলনায় এবছর থেকে মেডিক্যালে ভর্তির ফি ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের প্রায় দ্বিগুন বেড়ে গেছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছে, এবছর থেকে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের ৯ লক্ষ ২২ হাজার ৯২০ টাকা দিতে হবে৷ দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বর্ষে ভর্তির জন্য ফি লাগবে ৮ লক্ষ ৭৭ হাজার ৫৩০ টাকা৷ কোর্স সমাপ্ত হওয়ার ছাত্রছাত্রীরা ফেরত পাবেন ৩৫ হাজার টাকা৷ তাছাড়া স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে৷ সেখানেও ফি বেড়েছে৷

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ফি বৃদ্ধির বিষয়টি নিঃসন্দেহে ভীষণ উদ্বেগের৷ তা সোসাইটিও উপলব্ধি করেছে৷ গরীব অংশের মেধাবি ছাত্রছাত্রীরা তাতে ভর্তি হতে পারবেন না৷ তাই ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের সোসাইটি পুণরায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে গরীব অংশের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য ছাড় দেওয়া হবে৷ কিন্তু, তাতেও সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ কারণ, এমন অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছেন যাদের পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকার বেশি হবে, কিন্তু প্রয়োজনীয় খরচ বহন করার সমার্থ তাদের নেই৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি গভীর চিন্তার, তাই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ আগামী ২৫ জুন থেকে ভর্তির জন্য কাউন্সিলিং শুরু হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মেধা তালিকায় যারা স্থান পেয়েছেন এমন একজনকেও মেডিক্যালে পড়া থেকে বঞ্চিত হতে দেওয়া হবে না বলে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ গরীব অংশের মেধাবি ছাত্রছাত্রীদের সোসাইটি ফি ছাড় দেওয়ার পরও যদি আরো অর্থের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার তা বহন করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে৷

কিন্তু, বিরোধীরা এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন৷ গরীব অংশের মেধাবি ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার আর্থিক সহায়তা দেবে তা বিবৃতি দিয়ে জানানোর দাবি জানান বিরোধী উপনেতা বাদল চৌধুরী৷ তাতে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই জটিল সমস্যার সমাধান নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় সমস্ত কথাই বলেছেন৷ রাজ্য সরকার গরীব অংশের মেধাবি ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে খুবই আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবে৷ কোন গরীব অংশের মেধাবি ছাত্রছাত্রী টাকার অভাবে মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন না তার নিশ্চিয়তা রাজ্য সরকার দিচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *