নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ জুন৷৷ নয়া সরকারের প্রথম বাজেটেই মহার্ঘ হচ্ছে পেট্রোল ও ডিজেল৷ সাথে বাড়বে রান্নার গ্যাসের দামও৷ শুধু তাই নয় পরিবহণ ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি করা হয়েছে কর৷ তাতে মধ্যবিত্তরা কিছুটা অখুশী হবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷ কারণ, রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে হেঁসেলে আগুনের তাপ বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে৷ পাশাপাশি ভবিষ্যতে অটোর পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রেও নয়া সরকার নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ আরোপ করেছে৷
এদিন, বাজেট ভাষণে অর্থমন্ত্রী যিষ্ণু দেববর্মা বলেন, সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরাতে পেট্রোল ডিজেল ও গ্যাসের উপর সবচেয়ে কম কর ধার্য্য করা হয়েছে৷ অর্থমন্ত্রীর কথায়, রাজ্যের পেট্রোল ডিজেল এবং গ্যাসের এই তুলনামূলক নীচু দর প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সাথে বিবেচনা করলে মূল্য বিভ্রাট সৃষ্টি করছে এবং রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলিতে সুযোগসন্ধানকারীরা এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে পরিস্থিতির অপব্যবহার করছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, পূর্বতন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য রাজ্যের কালোবাজারী এবং বেআইনী কার্যকলাপের কারণে প্রকৃত ক্রেতারা চরম সমস্যার সম্মুখীন হতেন৷ অর্থমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের উপর অতি নির্ভরতা থেকে কিভাবে রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থাকে সমৃদ্ধ করা যায় এবং নিজস্ব রাজস্ব সংগ্রহ করে রাজ্যের উন্নয়ন করা যায় সেই দিশাতে হাঁটছে রাজ্য সরকার৷ তাই, পেট্রোলের উপর দুই শতাংশ কর বৃদ্ধি এবং মোট কেনাবেচার উপর দুই শতাংশ সেস আরোপ করার প্রস্তাব রাখেন তিনি৷ ডিজেলের উপরও এক শতাংশ বিক্রয় কর বৃদ্ধি এবং দুই শতাংশ সেস আরোপ এবং গ্যাসের উপর এক শতাংশ বিক্রয় কর বৃদ্ধি এবং দুই শতাংশ সেস আরোপ করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী৷ তাঁর মতে, এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের মাধ্যমে বছরে সরকারের আয় হবে ৪০ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা৷
অর্থমন্ত্রীর কথায় গ্যাসের উপর কর বৃদ্ধিতে প্রতিমাসে পারিবারিক ব্যবহারে মূল্য বাড়বে ৪৪০ টাকা৷ তেমনি প্রতিলিটারে পেট্রোলের দাম ১২০ টাকা এবং ডিজেলে বাড়বে ০৫৫ টাকা৷ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অতিরিক্ত আয় রাজ্যের মানুষের কল্যাণে এবং সেস থেকে যে আয় হবে তা সড়ক উন্নয়নে ব্যবহার করবে রাজ্য সরকার৷
এদিকে, অধিকাংশ শ্রেণির মোটর যানের জন্য ধার্য্য করা রোড ট্যাক্স সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷ দ্বিচক্রযান, চারচাকার যান, কন্ট্রাক্ট পরিবহণ, স্টেজ ক্যারেজ, পণ্যবাহী যান এবং অন্যান্য যানের ক্ষেত্রে রোড ট্যাক্স বাড়তে চলেছে৷ তবে, সাধারণ মানুষের পরিবহেনর চাহিদা মেটানোর কাজে ব্যবহৃত অটোর ক্ষেত্রে কোন কর বৃদ্ধি হচ্ছে না৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভবিষ্যতে রোড পারমিট একমাত্র সেই অটোকেই দেওয়া হবে যার মালিক এবং চালক একই ব্যক্তি৷ অর্থমন্ত্রীর কথায় কোন বড় ব্যবসায়ীকে অটোর পারমিট দেওয়া হবে না৷ তিনি আশা করছেন, তাতে রাজ্য সরকারের ২৪ কোটি ৮৫ লক্ষ আয় হবে বছরে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, সমস্ত ধরনের বৈদ্যুতিন যানের ক্ষেত্রে কোন রোড ট্যাক্স থাকবে না৷ তার মতে, রাজ্যে কার্বন মুক্ত পরিবহণ ব্যবস্থা এবং নির্মল শক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷