কথার নাম লতা

সুবোধ ঘোষ
কথায় বলে- যত গর্জে তত বর্ষে না৷ শুধু গর্জনেই সার হয়৷ বর্ষণ নাম মাত্র৷ বর্ষার এমন ঘনঘটা রূপ দেখে তাইতো বর্ষণের তেমন আভাস পাওয়া যায় না৷ প্রশাসনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য৷ প্রশাসনের মাথাভারি কর্তাবাবুরা যতই আস্ফালন করেন তত কিন্তু কাজ পালন করেন না৷ করলে রাজ্যস্তরে প্রশাসনিক কাজের যেমন সাবলীল গতি আসতো তেমনই দুর্নীতির চাকাও স্তব্ধ হত৷ কিন্তু তা কি হয়েছে?
রাজ্যে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হল৷ রাজ্যবাসী আশা করেছিল, রাজ্যে অন্ততঃপক্ষে পাচার বাণিজ্য বন্ধ হবে৷ বিশেষ করে গরু পাচারের ফলে রাজ্যে গো সম্পদ বিরাট হুমকির মুখে পড়েছে৷ বিভিন্ন গরুর হাটে পাচারকারীদের দাপট৷ প্রতিটি গরুর হাটে সেই চেনা মুখরা ঘুরে ফিরে আসছে৷ গৃহস্থের পক্ষে গরু কেনা দায় হয়ে পড়ছে৷ পাচারকারীরা অধিক মূল্যে গরু কিনছে৷ এসব গরু ট্রাক বোঝাই করে আনা হচ্ছে সীমান্তে৷ পাচার করা হচ্ছে বাংলাদেশে৷ রাজ্যের নতুন সরকার এ পাচার বাণিজ্য বন্ধে কঠোর ভূমিকা নিলেও কোথাও যেন একটু ফসকা গ্যাঁড়ো রয়েছে৷ রয়েছে একটু ঢিলেঢালা পরিস্থিতি৷ তাইতো গরু বোঝাই গাড়ি আরামসে জাতীয় সড়ক দিয়ে ছুটে৷ অথচ জাতীয় সড়কে কয়েক শত থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে৷
প্রশ্ণটা কিন্তু এখানেও৷ এসব থানা ও ফাঁড়িতে পুলিশ বাবুরা কি করছে? কি করে অবৈধ গরু বোঝাই ট্রাক পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে যাচ্ছে? তবে কি এ ধূলোর পিছনে অর্থের ধান্দা রয়েছে? এ ধান্দা কি পুলিশদেরকে লোভী করে তুলেছে? এমন ভাবনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে৷ এবং এ ভাবনার পেছনে যে যুক্তি রয়েছে তাও অস্বীকার করা যাবে না৷ ফলে জাতীয় সড়ক দিয়ে গরু বোঝাই ট্রাক যেমন নির্বিঘ্নে সীমান্তে চলে যাচ্ছে তেমনই সীমান্ত রক্ষীদের দায়বদ্ধতাও প্রশ্ণের মুখে পড়ছে৷ অতন্দ্র প্রহরী সীমান্ত রক্ষীদেরকে কি করে ধোঁকা দিচ্ছে গরু পাচারকারীরা? সেই সাথে আরও একটা বিষয় অস্বীকার করা যাবে না৷ তা হল গরু পাচারের নিরাপদ করিডর হল সোনামুড়া সীমান্ত৷ তাইতো সরকার যতই কড়া হোক না কেন গরু কিন্তু ট্রাকে করে চড়ে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশে৷ এ যাবার পথ অনেকটা সুগম করে দিচ্ছে আরক্ষা দপ্তরের একাংশ অসাধু রক্ষীরা৷ তারা দেশ সেবার নামে রাজ্যবাসীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে৷ ফলশ্রুতি, রাজ্যের গো সম্পদ হুমকির মুখে পড়েছে৷ এর জন্য গরু পাচারকারীরা কতটুকু দায়ী তার থেকেও কম দায়ী নয় আরক্ষা দপ্তরের রক্ষীরা৷ তারা যেন দুষ্টের পালনে নিয়োজিত৷ তাই গরু সহ বিভিন্ন সামগ্রীর পাচার বাণিজ্য কোনও অবস্থায় বন্ধ করা যাচ্ছে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *