রাজ্যের ৪৯টি বাগানকে উজাড় করে বহু পরিবারকে বেআইনী পুণর্বাসন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ জুন৷৷ রাজ্যে সরকারি পরিচালনায় বাগিচাগুলির খুবই রুগ্ণ দশা৷ উৎপাদনের বদলে ওই বাগানগুলিতে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে বহু মানুষকে৷ তাও কোন অনুমোদন ছাড়াই পূর্বতন সরকার অধিকাংশ বাগানগুলিতে জনবসতি গড়ে তোলার অনুমতি দিয়েছে৷ উদ্যান ক্ষেত্রে  এই  বাগিচাগুলি বিরাট ভূমিকা নিতে পারত৷ কিন্তু, গাফিলতির কারণে সমস্ত বাগান উজাড় হয়ে গেছে৷ সারা রাজ্যে এমন ৪৯টি বাগান পূর্বতন সরকারের চরম উদাসীনতায় উজাড় হয়ে গেছে৷ সূত্রের দাবি, উদ্যান দপ্তর এবিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে৷

সূত্রের দাবি, অন্তত ৯০ শতাংশ বাগান চাষযোগ্য নয়৷ সরকারি তথ্য অনুসারে, সারা রাজ্যে ৪৯টি বাগান রয়েছে৷ যেগুলি সরকার পরিচালনা করছে৷ ওই বাগানগুলি পরিচর্যার জন্য সরকারি কর্মচারীও রয়েছেন৷ বাগানগুলি গড়ে তোলার সময় বিভিন্ন ফলমূল ইত্যাদি চাষাবাদের লক্ষ্যেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ এই বাগানগুলির অধিকাংশ বাগানে কাজুবাদামের ভালো ফলন হচ্ছিল৷ কিন্তু, কালের বিবর্তনের সাথে সাথেই উৎপাদন ক্রমশ কমেছে৷

সূত্রের বক্তব্য, ওই বাগানগুলিতে অতীতে বছরে প্রায় ১০০ কেজি কাজুবাদাম  এবং ২৫ কুইন্টাল চাল উৎপাদন হত৷ ৪৯টি বাগানের জন্য বর্তমানে ২৪ জন সরকারি কর্মচারী এবং অফিসার নিয়োজিত রয়েছেন৷ তারাই বাগানের পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করে থাকেন৷ সূত্রের কথায়, পূর্বতন সরকার ওই বাগানগুলিতে ৩২ পরিবারকে কোন অনুমতি না নিয়েই পুনর্বাসন দিয়েছে৷

সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় দক্ষিণ জেলার আমলী ঘাটে একটি পর্যটনস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ফেরার পথে সরকারি বাগিচা ঘুরে দেখেন৷ ৩৬৭৮ হেক্টর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা বাগিচা উজাড় হয়ে রয়েছে, তা প্রত্যক্ষ করেছেন কৃষিমন্ত্রী৷ সূত্রের দাবি, বাগানে কর্মচারী থাকলেও কোন ফল উৎপাদন হচ্ছে না৷ এই বিষয়ে কর্মচারীরাও কৃষিমন্ত্রীকে কোন যুক্তি সংগত সাফাই দিতে পারেননি৷ সূত্রের খবর, কৃষিমন্ত্রীর সফরের ঠিক একদিন আগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে বাগানে পুনর্বাসন পাওয়া এক পরিবারের ঘর থেকে ২০০ কেজি কাজুবাদাম উদ্ধার হয়েছে৷ তাতে ধারণা করা হচ্ছে, বাগানে উৎপাদন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু তা পাচার হয়ে যাচ্ছে৷ সূত্রের খবর, কৃষিমন্ত্রী যতনবাড়ি এবং করবুকের মাঝামাঝি স্থানে আরো একটি বাগান ঘুরে দেখেছেন৷ ওই বাগানেরও একই অবস্থা৷

সূত্রের দাবি, কৃষিমন্ত্রী রাজ্যে সরকারি পরিচালনায় যতগুলি বাগান রয়েছে সবগুলির রিপোর্ট চেয়েছেন৷ পাশাপাশি ওই বাগানগুলিতে কিভাবে কোন পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে সেই তথ্যও তিনি চেয়েছেন৷ সূত্রের কথায়, বেআইনিভাবে বাগানগুলিতে পুনর্বাসন দেওয়া সমস্ত পরিবারকে সেখান থেকে উঠে যাওয়ার নোটিশ দেবে কৃষি ও উদ্যান দপ্তর৷ সূত্রের আরো দাবি, এই সমস্ত বিষয় কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ রাষ্ট্রমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকে  জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *