নয়াদিল্লি, ৩০ মে (হি.স.) : প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আরএসএসের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সম্মতি জানানোর পর থেকে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। বুধবার তা অব্যাহত ছিল। এদিন কংগ্রেস নেতা রমেশ চিন্নিথালা জানিয়েছেন, তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছি সেই চিঠিতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে আরএসএসের অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে বিরত থাকর অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন, তার এই প্রাপ্তি স্বীকারে তিনি অবাক হয়েছেন।
অন্যদিকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আরএসএসের অনুষ্ঠিনে যাওয়ার সম্মতি জানানোর কে স্বাগত জানিয়েছেন হরিয়ানার মন্ত্রী অনিল ভিজ। তিনি জানিয়েছেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তটি প্রশংসনীয়। আরএসএস একটি জাতীয় সংগঠন। মানুষের চারিত্রিক বিকাশ করাই আরএসএসের কাজ। দেশের প্রতিটা মানুষের উচিত আরএসএসে যোগ দেওয়া।
প্রসঙ্গত, আরএসএসের অনুষ্ঠানে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির উপস্থিত থাকার সম্মতি জানানোর পর সোমবার আরএসএসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নাগপুরে আরএসএসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানানোর পর গোটা দেশে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শত্রুতা নয়। আলোচনার প্রয়োজন। মঙ্গলবার আরএসএসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘যারা আরএসএসকে জানে এবং বোঝে তাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ আরএসএস সব সময় তাদের অনুষ্ঠানে সমাজের বিশিষ্ঠ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। এবার আমরা প্রণব মুখোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এটা তার মহানুভবতা যে তিনি আমন্ত্রণে সম্মতি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আরএসএসের বিভিন্ন সভায় আহ্বান করা নতুন কোনও বিষয় নয়। ১৯৩৪ সালে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী স্বয়ং মহারাষ্ট্রের ওয়ারধায় আরএসএসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারপর সঙ্ঘের সম্পাদক ডা. হেডগেভর নিজে মহাত্মা গান্ধীর কুটিরে গিয়ে সঙ্ঘের বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেন। এই বিষয়টির উল্লেখ ১৬ সেপ্টম্বর ১৯৪৭ সালে দিল্লিতে একটি জনসভায় বলেছিলেন। আরএসএসের অনুশাসন, উজ্জীবিত করার মতো শক্তি এবং ঐক্যবোধ দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে ছিলেন। ১৯৩০ সাল থেকে সমাজের কৃতী ব্যক্তিদের আরএসএস নিজের শিবিরে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মহাত্মা গান্ধী ছাড়াও আরএসএস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন ভারতে পূর্ব রাষ্ট্রপতি ডা. জাকির হুসেন, বাবু জয়প্রকাশ নারায়ণ। ১৯৫৯ সালে মেঙ্গালোরে আরএসএসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল করিয়াপ্পা। সঙ্ঘের কর্যক্রম আমার হৃদয়ের খুব কাছের। ১৯৬২ সালে ভারত-চিনের যুদ্ধের সময় আরএসএস ভূমিকায় প্রভাবিত হয়ে ১৯৬৩ সালে গণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে যোগ দেওয়ার জন্য আরএসএসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রায় তিন হাজার স্বয়ংসেবক কর্মী গণতন্ত্র দিবসে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তৎকালীন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে আরএসএসের ‘শ্রী গুরুজি’কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ১৯৬৩ সালে বিবেকানন্দ জন্মজয়ন্তী কন্যাকুমারীতে ‘বিবেকানন্দ শিলা স্মারক’ নির্মাণের সময় সকল রাজনৈতিক দলের কাছে আর্থিক সাহায্য জানিয়ে ছিল।