উপনির্বাচনে স্তিমিত গেরুয়া ঝড়, আত্মবিশ্বাস বাড়ল কংগ্রেস সহ বিরোধীদের

নয়াদিল্লি, ৩১ মে (হি.স.): লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে, তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারের চার বছরের মাথায় দেশের অধিকাংশ প্রান্তেই স্তিমিত হল গেরুয়া ঝড়| পাশাপাশি উপনির্বাচনে ভালোই ফল করল কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডি ও সমাজবাদী পার্টি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি|
বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকে দেশের ১১টি রাজ্যের ১১টি বিধানসভা আসন (১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন) ও চারটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগণনা শুরু হয়| ১১টি রাজ্যের উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র চোখ সবথেকে বেশি ছিল উত্তর প্রদেশের দিকেই| কিন্তু, উত্তর প্রদেশের কৈরানা লোকসভা কেন্দ্র এবং নুরপুর বিধানসভা কেন্দ্র, উভয় আসনেই পরাজিত হল ভারতীয় জনতা পার্টি| কৈরানা আসনে বিজেপিকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছে রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি)| নুরপুর বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছে সমাজবাদী পার্টি| অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের পালঘর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি| আবার ভাণ্ডারা-গোন্ডিয়া লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছে এনসিপি| নাগাল্যান্ডের নাগাল্যান্ড লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন এনডিপিপি প্রার্থী|
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মহেশতলায় রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ডের গোমিয়ায় ও সিল্লিতে জয়ী হয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা| মেঘালয়ের আমপাতি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস, উত্তরাখণ্ডের থারালি বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে বিজেপি, কেরলের চেঙ্গান্নুর উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে সিপিআই (এম), বিহারে আবার শক্তি বাড়ল লালু প্রসাদ যাদবের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর, জোকিহাট বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে আরজেডি| পঞ্জাবের শাহকোট বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস, মহারাষ্ট্রের পালুস-কাড়েগাঁও বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জয়ী হয়েছে কংগ্রেস| কর্ণাটকের আর আর নগর বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস| মহারাষ্ট্রে পালুস-কোডেগাঁওতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। সবমিলিয়ে ১১টি বিধানসভা আসন (১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন) ও চারটি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়েছে মাত্র দু’টি আসনে| উপনির্বাচনের লড়াই শক্তি বাড়ল বিরোধীরা| বিশেষ করে কংগ্রেসের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়ল|
কংগ্রেসকে পরাজিত করে কেরলের চেঙ্গানুর বিধানসভা আসনটি নিজেদের দখলে ধরে রাখল সিপিআই (এম)। গত ২৮শে মে অনুষ্ঠিত চেঙ্গানুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার ছিল ভোটগণনা। নিকটতম প্রার্থী কংগ্রেসের ডি বিজয়কুমারকে পরাজিত করে জিতে যান সিপিআই(এম)-এর সাজি চেরিয়ান। চেঙ্গানুর বিধানসভা উপনির্বাচনে এবার ত্রিমুখী লড়াই হয়েছে। এই নির্বাচনে ইউডিএফ জোটের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেসের ডি বিজয়কুমার। এলডিএফ জোটের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সিপিআই(এম) প্রার্থী সাজি চেরিয়ান। বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে ছিলেন পি এস শ্রীধরন পিল্লাই। এলডিএফ জোট প্রার্থী সিপিআই(এম)-এর সাজি চেরিয়ার পেয়েছেন ৬৭,৩০৩ ভোট। ইউডিএফ জোট প্রার্থী কংগ্রেসের ডি বিজয়কুমার ঝুলিতে গিয়েছে ৪৬৩৪৭ ভোট। বিজেপি পি এস শ্রীধরণ পিল্লাই প্রাপ্ত ভোট ৩৫২৭০ ভোট। প্রায় ২০৯৫৬ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী ইউডিএফ জোটের কংগ্রেস প্রার্থী ডি বিজয়কুমারকে পরাজিত করে চেঙ্গানুর জিতে যান এলডিএফ জোটের সিপিআই(এম) প্রার্থী সাজি চেরিয়ান। গত জানুয়ারি মাসে চেঙ্গানুর কেন্দ্রে সিপিআই(এম)-এর বিধায়ক কে কে রামচন্দ্রন নায়ারের মৃত্যুর হয়। সেই কারণে আসনটি এতদিন ফাঁকা পড়েছিল। সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক কোদিয়ারি বালাকৃষ্ণণ এই জয়কে পিন্নারাই বিজয়ন নেতৃত্বাধীন সরকারের দুই বছরের সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন কংগ্রেসের নরম হিন্দুত্বের নীতিকে জনগণ বর্জন করেছে।
কর্ণাটকে রাজারাজেশ্বরী নগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জিতে গেলেন কংগ্রেস প্রার্থী মণিরত্ন। প্রায় ৪১১৬২ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী বিজেপির তুলাসি মুণিরাজু গৌড়াকে পরাজিত করে বিধানসভা আসনটি জিতে যান কংগ্রেসের মণিরত্ন। গত ১২ মে রাজ্যের অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রের মতো রাজারাজেশ্বরী বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও এসএলভি পার্ক বহুতলে থেকে ৯৭৪৬ ভোটার কার্ড বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তার জেরে ওই বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন পিছিয়ে দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই কারণে গত ২৮ মে রাজারাজেশ্বরী বিধানসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৪৭১টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়। ভোট পড়ে ৫৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে যায় রাজারাজেশ্বরী কেন্দ্রটি কংগ্রেসের দখলে যেতে চলেছে। অবশেষে ৪১১৬২ ভোটের ব্যবধানে জিতে যান কংগ্রেস প্রার্থী মণিরত্ন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তুলাসি মুণিরাজু গৌড়া। তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেডি(এস) প্রার্থী জিএইচ রামচন্দ্র। রাজারাজেশ্বরী আসনটি জিতে যাওয়ার ফলে রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭৯।
বিজেপির থেকে উত্তরপ্রদেশের নুরপুর ছিনিয়ে নিল সমাজবাদী পার্টি। ৬০০০ এর বেশি ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী বিজেপির অবনী সিংকে হারিয়ে আসনটি জিতে যান সমাজবাদী পার্টির নইমূল হাসান। গত ২৮ মে নুরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিজেপি বিধায়ক লোকেন্দ্র সিং চৌহানের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়ার জেরে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। সমাজবাদী পার্টির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন নইমূল হাসান। নিহত বিধায়ক লোকেন্দ্র সিং চৌহানের স্ত্রী অবনী সিংকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। এই কেন্দ্রে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়ালেও মূল লড়াই হয় বিজেপি বনাম সমাজবাদী পার্টি। ৬০০০-এর বেশি ভোটের ব্যবধানে আসনটি জিতে যান নইমূল হাসান।
বিহারের শাসক দল জেডি(ইউ) থেকে জোকিহাট বিধানসভা কেন্দ্র ছিনিয়ে নিল আরজেডি। ৪০০০০-এর বেশি ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী জেডি(ইউ) মুরশিদ আলমকে পরাজিত করে আসনটি জিতে যান আরজেডির শাহনাওয়াজ আলম। আরারিয়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তগর্ত জোকিহাট বিধানসভা কেন্দ্রটি জেডি(ইউ) শক্তিশালী গড় হিসেবে বিহার রাজনীতিতে পরিচিত ছিল। এবার সেই জোকিহাটে জ্বলল লন্ঠন (আরজেডি)। প্রসঙ্গত, এই কেন্দ্রে বিধায়ক ছিলেন জেডি(ইউ)-র সরফরাজ আলম। জেডি(ইউ) ছেড়ে আরজেডি-তে যোগ দেওয়ায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন সরফরাজ আলম। তার জেরেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আরজেডির তরফ থেকে সরফরাজ আলমের ভাই শাহনাওয়াজ আলমকে টিকিট দেয়। মূলত দলিত এবং মুসলমান অধ্যুষিত এই বিধানসভা কেন্দ্রে আরজেডি এবং জেডি(ইউ) জোর টক্কর হয়। অবশেষে শেষ হাসি হাসে আরজেডি। গত ২৮ মে উপনির্বাচনে ৩৩১টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
পাঞ্জাবে শিরোমণি অকালি দলের গড়ে জোর ধাক্কা দিল কংগ্রেস। উপনির্বাচনে শাহকোট বিধানসভা কেন্দ্রটি শিরোমণি অকালি দল থেক ছিনিয়ে নিল রাজ্যের শাসক দল কংগ্রেস। ৩৮৮০১ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী শিরোমণি অকালি দলের নাইব সিং কোনারকে হারিয়ে জয়ী হন কংগ্রেস প্রার্থী হরদেব সিং লাডি। মাত্র ১৯০০ ভোট পান আম আদমি পার্টির রতন সিং কক্কর কালান। বৃহস্পতিবার ভোটগণনা শেষে কংগ্রেস প্রার্থী হরদেব সিং লাডি পান ৮২৭৪৫ ভোট। শিরোমণি অকালি দলের প্রার্থী নাইব সিং কোনার পান ৪৩৯৪৪ ভোট। ৩৮৮০১ ভোটের ব্যবধানে আসনটি জিতে যায় কংগ্রেসের হরদেব সিং লাডি। এই জয়ের ফলে ১১৭ আসন বিশিষ্ট পঞ্জাব বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়কের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭৮। তার ফলে দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা পেল কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, শাহকোটের পাঁচবারের বিধায়ক শিরমণি আকালি দলের অজিত সিং কোনার প্রয়াত হওয়া কারণে আসনটি এতদিন ফাঁকা পড়েছিল। তাই ২৮ মে শাহকোট বিধানসভা উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
উত্তরাখণ্ডের থারালি বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী বিজেপি প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থী মুন্নি দেবী শাহ তার নিকটতম প্রার্থী কংগ্রেসের জিতারামকে ১৯০০ ভোটের বেশি ব্যবধান পরাজিত করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হয় ভোটগণনা। ভোটগণনা শেষে দেখা গিয়েছে বিজেপি প্রার্থী মুন্নি দেবী শাহ ১৯০০ বেশি ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী কংগ্রেসের জিতারামকে পরাজিত করেছে। এই জয়ের ফলে খুশি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। এই জয়ের জন্য দলীয় কর্মীদের অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, বিধায়ক মগনলাল শাহের মৃত্যুর পরে আসনটি ফাঁকা পড়ে। গত ২৮ মে সেই কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিজেপি নিহত বিধায়ক মগনলাল শাহের স্ত্রীকে টিকিট দেয়।
ঝাড়খণ্ডে উপনির্বাচনে সিল্লি ও গোমিয়া-দুটি বিধানসভা আসনই ধরে রাখল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)। গোমিয়া আসনে জেএমএম প্রার্থী ববিতা দেবী আজসু প্রার্থী লম্বোদর মাহতোকে ১,৩০০ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন। এই আসনে তৃতীয় হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী মাধবলাল সিং। সিল্লিতে জেএমএমের সীমা মাহাতো আজসু প্রধান তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহতোকে ১৩,০০০ ভোটে হারিয়েছেন। দু’টি আসনেই জেএমএমের দখলে ছিল। দুই বিধায়ক যোগেন্দ্র মাহতো ও অমিত মাহতো দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এই দুই আসন শূন্য হয়।
প্রত্যাশা ছিলই, আর প্রত্যাশা মতোই পশ্চিমবঙ্গের মহেশতলা (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দুলাল দাস| পাশাপাশি মহেশতলায় উত্থান হল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র| মহেশতলা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ৬২ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন| ২১ রাউন্ড গণনা শেষে, তৃণমূলের দুলাল দাস পেয়েছেন ১,০৪,২০৬টি ভোট| বিজেপির সুজিত ঘোষ পেয়েছেন ৪১,৮৮২টি ভোট এবং সিপিআই (এম)-এর প্রভাত চৌধুরী পেয়েছেন ৩০,১৮০টি ভোট| বিজেপির দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিজেপি প্রার্থী সুজিত ঘোষ| তবে, প্রথম ও দ্বিতীয়ের মধ্যে ব্যবধান অনেকটাই|
মেঘালয়ের দক্ষিণ গারোপাহাড় জেলার অন্তর্গত ৫৩ নম্বর আমপাতি উপজাতি তফশিলি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী মিয়ানি ডি শিরা তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এনপিপি-র ক্লেমেন্ট জি মমিনকে ৩,১৯১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ১৪,২৫৯ এবং এনপিপি-র ক্লেমেন্টের ঝুলিতে গেছে ১১,০৬৮টি ভোট।
বিজেপির থেকে নুরপুর ছিনিয়ে নিল সমাজবাদী পার্টি। ৬০০০ এর বেশি ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রার্থী বিজেপির অবনী সিংকে হারিয়ে আসনটি জিতে যান সমাজবাদী পার্টির নইমূল হাসান।
গত ২৮ মে নুরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিজেপি বিধায়ক লোকেন্দ্র সিং চৌহানের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়ার জেরে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। সমাজবাদী পার্টির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন নইমূল হাসান। নিহত বিধায়ক লোকেন্দ্র সিং চৌহানের স্ত্রী অবনী সিংকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। এই কেন্দ্রে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়ালেও মূল লড়াই হয় বিজেপি বনাম সমাজবাদী পার্টি। ৬০০০-এর বেশি ভোটের ব্যবধানে আসনটি জিতে যান নইমূল হাসান।
উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জাতীয় রাজনীতিতে শুরু হল জোর তরজা। একদিকে যেমন অবিজেপি দলগুলি বিজেপির নিন্দায় মুখর হয়। তেমনই আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে পাল্টা তোপ দাগে বিজেপি।
নুরপুর ও কৈরানা উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর অখিলেশ যাদব বলেন, জনগণ বিজেপিকে যোগ্য জবাব দিয়েছে। বিভাজনের রাজনীতি যারা করে তাদের পরাজয় হয়েছে। আমি নুরপুর এবং কৈরানার ভোটারদের ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাই। এই জয় দরিদ্র, কৃষক এবং দলিতদের জয়।
উপনির্বাচনের ফল বেরোনোর পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি দলের নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল ট্যুইটে জানিয়েছেন, ‘এই ফলাফল থেকে প্রমাণিত মোদী সরকারের উপর মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। এই পর্যন্ত মানুষ প্রশ্ন করত বিকল্প পথ কি রয়েছে। কিন্তু আজ থেকে মানুষ বলছে মোদীজি বিকল্প হতে পারে না।’ বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগে বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র জানিয়েছেন, ‘কংগ্রেস আজ অন্য দলগুলির জন্য চিয়ার লিডিং করে হাততালি দিচ্ছে। রাজনীতিতে আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছে কংগ্রেস। এখন কংগ্রেসের উচিত আত্মসমীক্ষা করা উচিত।’
জোকিহাটে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়লাভের পর আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বিজেপির জোটসঙ্গী জেডি(ইউ)র বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘নির্বাচনে জিততে তারা টাকা এবং ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। কিন্তু তবুও জিততে পারেনি। রামনবমী উপলক্ষ্যে ২ লক্ষ তলোয়ার বিতরণ করেন। তারই পুরস্কার পেয়েছেন নীতীশকাকু।’ অন্যদিকে পঞ্জাবের শাহকোটে জয়লাভের জন্য নিজের সরকারের জনমুখী নীতিকে বাহবা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং।
উত্তরবঙ্গ সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, যে অঞ্চলে যারা ক্ষমতাবান, তাদেরকে সামনে রেখেই লড়তে হবে। একমাত্র তাহলেই জয় নিশ্চিত করা যাবে। আঞ্চলিক দলগুলি আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ লড়াই পারে কেন্দ্রে বদল আনতে।
যদিও এদিনের ফলাফল নিয়ে মাথা ব্যথা করতে রাজি নয় বিজেপি | বিজেপি দুই কেন্দ্রীয়মন্ত্রী উপনির্বাচনের ফলাফলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, ‘বড় ধরণের লাফ দেওয়ার আগে দুই কদম পেছনো উচিত। ভবিষ্যৎ সেই বড় ধরণের লাফ আমরা দিতে চলেছি।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, এইসব ছোট নির্বাচনকে আপনারা মাপকাঠি হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন। আমি পারব না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কঠোর পরিশ্রম দেশের মানুষকে সাহায্য করছে। আগামী নির্বাচনে এই বিষয়ে অগোচরে থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *