নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ মে৷৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭তম জন্মজয়ন্তী রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠান উদযাপনের কর্মসূচিতে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের উদ্যোগে আজ থেকে আগরতলায় তিন দিনব্যাপী শ্রদ্ধঞ্জলি অনুষ্ঠান শুর হয়েছে৷ এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে আজ সন্ধ্যায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে প্রথম প্রেক্ষাগৃহে মূল অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী কমল বরণ চক্রবর্তী ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশিষ্ট লেখক রবীন্দ্র কিশোর দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট লেখক নন্দকুমার দেববর্মা৷ অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ত্রিপুরার নিবিড় সম্পর্ক ছিলো৷ তাঁর লেখা গান, কবিতা, উপন্যাস ত্রিপুরা রাজ্যের একটি ঐতিহ্য৷ এই ঐতিহ্যকে আগামী দিনে আরও বেশি করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করে তোলা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ ত্রিপুরার সাথে কবিগুরুর যে নিবিড় সম্পর্ক ছিলো তা আমাদেরকে খুবই গর্বিত করে তোলে৷ তিনি রাজ্যের সাত বার এসেছিলেন৷ তাঁর বিভিন্ন লেখায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ৷ তিনি বলেন, আজকে এই দিনে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এই দিবসটি পালিত হলেও আমাদের রাজ্যের ক্ষেত্রে এই দিবস পালনের এক অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য রয়েছে৷ কারণ কবিগুরুর সঙ্গে ত্রিপুরার সম্পর্ক ছিলো প্রাণের সম্পর্ক, হৃদয়ের সম্পর্ক৷ উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেববর্মা রবীন্দ্রনাথের সাথে তার পরিবারের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে বলেন, মহারাজা বীরচন্দ্র মাণিক্যের আমলে ত্রিপুরার সাথে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক শুরু হয়েছিলো, যা পরবর্তীতে আরও প্রস্ফুটিত হয়৷ তিনি আরও বেশি করে রবীন্দ্র চর্চা ও এর প্রসারে সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান৷
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট লেখক রীবন্দ্র কিশোর দেববর্মা কবিগুরুর সাথে ত্রিপুরার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের উল্লেখ করে রবীন্দ্রনাথের সাহিত, কবিতা, গান ইত্যাদি স্থানীয় ভাষায় আরও বেশি করে অনুদিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ এক্ষেত্রে ককবরকের পাশাপাশি মগ, চাকমা ইত্যাদি ভাষায়ও আরও বেশি করে অনুদিত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷ বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী কমল বরণ চক্রবর্তী রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় যাতে এই গানের মৌলকতা নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে দায়িত্ব সহকারে এগিয়ে আসতে হবে৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা বিষ্ণুপদ দাস৷ অনুষ্ঠানে শুরুতে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা সহ উপস্থিত অতিথিগণ কবিগুরুর মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন৷ রাজ্য ভিত্তিক তিনদিনের এই অনুষ্ঠানের আজকের ভাবনা পূজা পর্যায় ও আনুষ্ঠানিক পর্যায় হিসেবে পালন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিল্পীগণ মনোজ্ঞ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন৷ এই অনুষ্ঠানে প্রচুর সংখ্যক রবীন্দ্র অনুরাগী দর্শক শ্রোতাগণ উপস্থিত ছিলেন৷