নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ মার্চ ৷৷ জনাদেশ মাথা পেতে নিয়েছেন বিরোধীদলনেতা মানিক সরকার৷ তাঁর কথায়, মানুষ এ রাজ্যে পরিবর্তন

এনেছেন৷ কিন্তু রাজ্যের আভান্তরীন পরিস্থিতিকে নির্বাচনের পরে অস্থিরতার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ রাজ্যপালের ভাষণে সরকারের কর্মসূচি রূপরেখা ফুঁটে উঠেছে৷ কিন্তু রাজ্যের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলে যত ভালো কর্মসূচিই নেওয়া হোক না কেন, তার সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না৷ সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপর বিরোধীদের আনা সংশোধনী নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেছেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷
তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপালের ভাষণ জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট৷ উন্নয়নের সাথে সম্পর্কযুক্তও৷ কিন্তু, এখন মূল দেখার বিষয় নতুন সরকার মানুষের কল্যাণে তা কিভাবে বাস্তবায়ন করবে৷ তাঁর কথায় রাজ্যের পিছিয়ে পরা মানুষদের প্রধান্য দিয়ে জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে হবে৷ এক্ষেত্রে বিরোধীরা যদি নেতিবাচক অবস্থান নিয়ে থাকেন তাহলে মানুষ ক্ষমা করবেন না৷ তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, জনগণের কল্যাণে রাজ্য সরকারের কাজে সবরকম সাহায্য করবে বিরোধীদল৷ তবে, কথার সাথে কাজের মিল না হলে বিরোধীরা নিশ্চয় বিরোধীতায় সোচ্চার হবেন৷ কারণ, রাজ্যবাসীর কল্যাণে বিরোধীদেরও দায়িত্ব রয়েছে৷ তাঁর দাবি, গঠনমূলক দৃষ্টি নিয়ে চলবার চেষ্টা করবো৷ জনগণের কল্যাণে রাজ্য সরকার কোনও সহযোগিতা চাইলে বিরোধীরা তাতে এগিয়ে আসবেন৷
এদিন তিনি বলেন, সমস্ত কিছু একসাথে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না৷ কিন্তু, রাজ্যপালের ভাষণে নতুন সরকার যে কর্মসূচির রূপরেখা এঁকে দিয়েছে বাৎসরিক বাজেট দেখে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে৷ তাঁর কথায়, কেন্দ্রে যেহেতু রাজ্য সরকারের মনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল রয়েছে, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সহায়তা আদায় করতে সুবিধা মিলবে৷
বিরোধী দলনেতা এদিন জনাদেশ মাথা পেতে নিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, মানুষ এ রাজ্যে পরিবর্তন এনেছেন৷ তাই বিরোধী আসনে বসেই দায়িত্ব পালন করবো৷ ইতিবাচক ভাবনা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবো৷ তবে, রাজ্যের আভন্তরীন পরিস্থিতিকে অস্থিরতার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে এদিন তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তাঁর কথায়, অস্থিরতা কাজের পরিবেশ পরিমন্ডলকে বিঘ্নিত করবে৷ কারণ, কাজের পূর্ব শর্ত হলো শান্তি, সম্প্রীতি ও সুস্থিতি বজায় রাখা৷ এদিন উদ্বেগের সাথে মানিক সরকার বলেন, সিপিএম পার্টি কার্যালয় সারা রাজ্যে আক্রান্ত হচ্ছে৷ গণসংগঠনের কার্যালয়গুলিও আক্রান্ত হচ্ছে৷ স্থায়ী বাসিন্দারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন৷ তাঁর অভিযোগ, নাগরিকদের উপর আর্থিক বোঝা চাঁপানো হচ্ছে৷ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের চাপ সৃষ্টি করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ তাঁর কথায়, জোড় করে মন জয় করা গেলেও কোন নির্দিষ্ট দলে রাখা যায় না৷ শান্তি, সম্প্রীতি ও সুস্থিতির পক্ষে তা সুখকর নয়৷ তাঁর দাবি, এই পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে৷ সাথে যোগ করেন, এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও সহযোগিতা চাইলে বিরোধীদল নিশ্চয় এগিয়ে আসবে৷ মানিক সরকারের মতে, নাগরিক স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে হবে৷ তা না হলে রাজ্য সরকারের পক্ষে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না৷
বিধায়ক বাদল চৌধুরী আলোচনায় অংশ নিয়ে বলনে, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতির আংশিক প্রতিফলন রাজ্যপালের ভাষণে স্থান পেয়েছে৷ তবে, সন্ত্রাস ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ৷ বিধায়ক তপন চক্রবর্তী বলেন, তারা দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চান৷ সরকারকে গঠনমূলক সহযোগিতা করা হবে৷ সাথে তিনিও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন৷

