নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ ফেব্রুয়ারী৷৷ ভোট বিভাজন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে বিজেপিকে৷ এবং কংগ্রেস বিজেপিকে হারাতে সিপিএমের জয়ে ভোট বিভাজনের কাজ নিপুণভাবে করবে, সেই হিসেব করে ফেলেছে পদ্মশিবির৷ তাই, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কংগ্রেসকে চিনে নেওয়ার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন৷ সাথে তিনি যোগ করেন, বিজেপির ভাবাদর্শে বিশ্বাসী হয়েই সবাই দলে যোগ দিচ্ছেন৷ যাঁরা ভাবছেন বিজেপির ভাবাদর্শের ভিত্তিতে পূর্বোত্তরে সংগঠন মজবুত হচ্ছে না, তাঁদের চিন্তা করার ক্ষমতা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে৷ এই ভাষায় কটাক্ষ করেছেন অমিত শাহ৷ তাঁর কথায়, বিজেপিই একমাত্র দল যারা ভাবাদর্শের ভিত্তিতেই সারা দেশে সংগঠন চালাচ্ছে৷
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেন, এরাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতাসীন সিপিএমের সহায়ক গোষ্ঠী হয়ে কাজ করছে৷ বাম বিরোধী ভোট বিভাজনে ওঁরা সক্রিয় রয়েছে৷ তাই, তিনি কংগ্রেসকে চিনে নেওয়ার জন্য রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তবে, এতে কোন লাভ হবে না বলে তাঁর বিশ্বাস৷ তাঁর কথায়, ৪ মার্চ থেকে এই রাজ্যে নতুন যুগের সূচনা হবে৷ কোনও বিভাজন কিংবা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা সফল হবে না৷
এদিন তিনি দাবি করেন, সংগঠনের ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজ্যে সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে বিজেপি৷ পূর্বোত্তরে আসাম, মণিপুরে একই প্রক্রিয়ায় সরকার গঠন করেছে দল৷ তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা এবং বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মক্ষমতায় জনগণ দলের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন৷ সাথে তিনি যোগ করেন, বিজেপির ভাবাদর্শে বিশ্বাসী হয়েই সবাই দলে যোগ দিচ্ছেন৷ তাঁর কটাক্ষ, যাঁরা এমনটা ভাবছেন তাঁদের ভাবাদর্শ নিয়ে সংগঠন তৈরি হয়নি৷ তাঁর কথায়, বিজেপি ভাবাদর্শ কারোর কাছেই লুকিয়ে নেই৷ ১৯৫২ সাল থেকে জাতীয় রাজনীতিতে একই ভাবাদর্শ নিয়ে সংগঠন চালাচ্ছে বিজেপি৷ তাঁর দাবি, বিজেপি দেশের মধ্যে একমাত্র দল, যা ভাবাদর্শের উপর ভিত্তি করেই গঠিত হয়েছে৷ তাই, যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা সকলেই দলের ভাবাদর্শ জেনেই আসছেন৷ তাঁর কটাক্ষ, যাঁরা ভাবছেন বিজেপি ভাবাদর্শের উপর ভিত্তি করে পূর্বোত্তরে সংগঠন তৈরি হয়নি, তাঁদের চিন্তা করার ক্ষমতা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে৷
এদিন অমিত শাহ রাজনৈতিক সন্ত্রাস ইস্যুতে সিপিএমকে একহাত নিয়েছেন৷ তাঁর বক্তব্য, সিপিএমের নেতা কর্মীরা হতাশায় ভুগছেন৷ এই হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে হিংসার মাধ্যমে৷ তাই, তাঁরা বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা করছেন৷ তাঁর মতে, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস করেও জনমতকে প্রভাবিত করতে পারবে না বামেরা৷ অমিত শাহ’র হুশিয়ারী, বিজেপি হিংসার বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত৷ দলীয় কর্মীদের তিনি ভয় না পাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন৷
অমিত শাহ বলেন, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ পুলিশ যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন তার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে৷ তাঁর কথায়, বর্তমানে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি খুবই খারাপ৷ তাঁর বক্তব্য, পুলিশকে শাসকদলের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ফলে, রাজনৈতিক অপরাধ, খুন, মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের উপযুক্ত বিচার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা৷ রাজ্যের হাল ফেরাতে বিজেপি সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাদি নেবে, আশ্বাস দেন তিনি৷
এদিন শ্রীশাহ রাজ্যে পরবর্তী সরকার বিজেপিই গঠন করবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন৷ তাঁর কথায়, রাজ্যে সিপিএমের বিরুদ্ধে জনরোষ ক্রমশ প্রকট হচ্ছে৷ ২৫ বছর ধরে যে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে তারা উন্নয়নের দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে৷ ফলে, দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্য পেছনের সারিতে গিয়ে ঠেকেছে৷ তাঁর দাবি, যে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে জনগণ সর্বসুবিধা পাচ্ছেন৷ প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুরই সংস্থান করা হচ্ছে৷
অমিত শাহ বলেন, রাজ্যের সমস্ত অংশের জনগণের কথা চিন্তায় রেখেই ভিশন ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছে বিজেপি৷

