নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ জানুয়ারি৷৷ রাজ্যে উৎপাদিত উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ আজ ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের মুখ্য কার্যালয় প্রাঙ্গণে নবনির্মিত কর্র্পেরেট ভবনের আনুষ্ঠানিক দ্বারোদঘাটন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যে সমস্ত রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে সেই সব রাজ্যে বিদ্যুৎ পাঠানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে৷ তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সভ্যতার অন্যতম অগ্রদূত৷ উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ এখন সমার্থক৷ উন্নয়নের কাজে এখন বিদ্যুৎ ছাড়া ভাবাই যায়না৷ আগে ডিজেল জেনারেটরের মাধ্যমে আগরতলা সহ অন্যান্য স্থানে বিদ্যুতের সরবরাহ করা হত৷ সেই জায়গা থেকে রাজ্য এখন বিদ্যুতে উদ্বৃত্ত হয়েছে৷ এটা অসাধারণ সাফল্য৷ বর্তমানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশকে ১৪০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে৷ যদিও নিগম ১৬০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ দেওয়ার অবস্থায় রয়েছে৷ কিন্তু বাংলাদেশ তা নিতে পারছেনা৷ তিনি বলেন, রাজ্যের প্রায় ৮৩ শতাংশ পরিবারে বিদ্যুৎ চলে গেছে৷ বাদী ১৭ শতাংশ পরিবারে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে৷ তারপরও রাজ্যে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকবে৷ এই উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ শিল্প কারখানায় ব্যবহার করা হবে৷ তিনি আরও বলেন, রাজ্যে আরও একটি বিকল্প রেল পথ নির্মাণের জন্য দাবী জানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এই বিকল্প রেল পথটি ধর্মনগর, কৈলাসহর, কমলপুর, খোয়াই, আগরতলা, সোনামুড়া হয়ে সাব্রুমে যাবে৷ পাশাপাশি কয়লা বা ডিজেলের পরিবর্তে রাজ্যের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎকে রেল ইঞ্জিন চালানোর কাজে ব্যবহারের জন্য এন এফ রেলওয়েকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ তারা এই প্রস্তাব গ্রহণ করে পরীক্ষা করে দেখার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন৷ এতে নিগমের যেমন লাভ হবে তেমনি পরিবেশেও কোন ধরণের প্রভাব পড়বে না৷ মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সরকার বলেন, বিদ্যুতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাথে চুক্তি হয়েছে৷ ১৩৭২ কোটি টাকার প্রকল্প কার্যকরী হলে লো-ভোল্টেজের সমস্যা থাকবে না৷ তিনি রাজ্যে সরকারের থেকে কোন ধরণের আর্থিক সহায়তা না নিয়ে নিগম তার নিজস্ব উদ্যোগে এই যে সুবিশাল ভবনটি তৈরী করেছে এর জন্য ধন্যবাদ জানান৷ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে বলেন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র৷ বর্তমানে রাজ্যে ৮ লক্ষের উপর বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন৷ আগামী ২-৩ বছরের মধ্যেই সমস্ত এলাকা বিদ্যুতের আওতায় চলে আসবে৷ তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে রাজ্য সরকার এখন পর্যন্ত কোন বিদ্যুতের বিল বাড়ায়নি৷ অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রধান সচিব মনোজ কুমার, নিগমের সি এম ডি জয়ন্ত বরকাকতি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন৷ চারতলা বিশিষ্ট (গ্রাউন্ড ফ্লোর সহ) এই কর্পোরেট ভবন নির্মাণে ১৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে৷
2018-01-03