এক নবাগতকে প্রার্থী করে মণিনগরে চমক দিতে চায় কংগ্রেস

আহমেদাবাদ, ৩০ নভেম্বর (হি.স.) : তথ্য বলছে গুজরাতের মণিনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি বিজেপির গড়৷ ১৯৯০ সাল থেকে ওই কেন্দ্রে কখনও হারের মুখ দেখতে হয়নি বিজেপিকে৷ মণিনগর কেন্দ্রে কংগ্রেস শেষবার জিতেছিল ১৯৮৫ সালে৷ কিন্তু ওই পর্যন্ত| এর পর থেকে ওই কেন্দ্র পরপর তিনবার জিতেছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর ছেড়ে আসা ওই আসনের উপনির্বাচনে অনাসায়ে জয় পেয়েছে বিজেপি৷
আর সেই কেন্দ্রেই এবার বাজিমাত করতে মরিয়া কংগ্রেস৷ আর সেখানে রাহুল গান্ধী ভরসা রাখছেন সম্পূর্ণ বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে আসা শ্বেতা ব্রহ্মাত নামে এক নবাগতার উপর৷ ওই যুবতীই মণিনগরে ‘জায়েন্ট কিলার’ হবেন বলেই আশা কংগ্রেসের৷ কারণ, বছর ৩৪-এর এই যুবতী বিদেশে পড়াশোনা করেছেন৷ লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টমিনিস্টার থেকে বিবিএ পাশ করেছেন৷ দু’টি ব্যাংকে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হিসেবে কাজ করেছেন৷ এছাড়া আইএমএম-বেঙ্গালুরু থেকে তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ আর এর জন্য তিনি চাকরিও ছেড়ে দিয়েছেন৷
শ্বেতার কথায়, ‘‘চাকরি না পড়াশোনা৷ এক সময় যেকোনও একটাকে বেছে নিতে হত৷ আমি পড়াশোনাকে বেছে ছিলাম৷ আমরা সেখানে ২৬ জন মহিলা ছিলাম৷ আর গুজরাত থেকে আমি একা৷’’ সংসদীয় রাজনীতিতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোই লক্ষ্য নিয়েই এবার নির্বাচনী ময়দানে নেমেছেন কংগ্রেসের এই তরুণ-তুর্কি৷ শ্বেতার বাবাও কংগ্রেসে ছিলেন৷ ২০০০ সালে আমেদাবাদ পুরনির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছিলেন৷ যদিও শ্বেতার দাবি, বেঙ্গালুরুতে পড়ার সময়ই তিনি কংগ্রেস নেতৃত্বের সংস্পর্শে আসেন৷ তার পরই কংগ্রেস সম্পর্কে তাঁর আগ্রহ বাড়ে৷ কংগ্রেস পরিবারের সন্তান হলেও তাঁকে মণিনগরের মত একটা হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে প্রার্থী করা নিয়ে অসন্তোষ ছিল গুজরাত কংগ্রেসের অন্দরমহলে৷ তা সত্ত্বেও তাঁকে প্রার্থী করা হয়৷ রবিবার তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়৷ আর লড়াইয়ের ময়দানে নেমে তাই সেই অসন্তোষের বাতাবরণ সরিয়ে দিতে চাইছেন শ্বেতা৷
বিদেশে পড়াশোনা করে আসা এই যুবতী নিজস্ব ঢঙেই প্রচার শুরু করেছেন৷ প্রচারে বেরিয়ে তিনি বলছেন, সানন্দে তাঁর একটি আইস ক্রিম তৈরির কারখানা আছে৷ সেখানে শুধু মহিলারাই কাজ করেন৷ ওই কারখানার জন্য তাঁকে ঋণের জন্য মন্ত্রীদের দোরে দোরে ঘুরতে হয়েছে বলে শ্বেতার অভিযোগ৷ তাই তাঁর প্রশ্ন, এর পরও স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়ার কি কোনও প্রাসঙ্গিতা থাকে?
ছোট ছোট উদ্যোগপতি তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়ার উপর জোর দিচ্ছেন৷ তাই মোদীর এক সময়ের বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে এগুলোকেই হাতিয়ার করছেন শ্বেতা৷ তাই মণিনগর কেন্দ্রে বিজেপি গত কয়েকটি নির্বাচনে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পেলেও শ্বেতার আশা তিনিই শেষ হাসি হাসবেন৷ গুজরাতের দীর্ঘ ২২ বছর পর সেই মিথই এবার ভাঙতে কেন টিম রাহুল ভরসা করছেন এই নবাগতার উপর, উঠছে সেই প্রশ্নও৷ কংগ্রেস শিবির মনে করছে, শ্বেতার প্রোফাইলই নির্বাচনী যুদ্ধে তাঁকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে৷