সংবর্ধনায় অভিভূত রাষ্ট্রপতি, চিত্র উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর (হি.স.): পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নাগরিক সংবর্ধনা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আতিথেয়তায় অভিভূত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ| চলতি বছরের ২৫ জুলাই ভারতের চর্তুদশতম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন রামনাথ কোবিন্দ| রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ সফরে এলেন রামনাথ কোবিন্দ| প্রথমবার কোনও রাজ্য সফরে গেলে রাষ্ট্রপতিকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়| সেই মতো মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে নাগরিক সংবর্ধনা দিল রাজ্য সরকার| সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়|
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের প্রথম বাংলা সফর উপলক্ষ্যে আবেগপ্লুত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আজ বাংলার বড় গর্বের দিন| রাষ্ট্রপতি কলকাতায় আসায় আমরা সম্মানিত| আমি তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম| তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন| সফরের জন্য বাংলাকে বেছে নেওয়াতে আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ|’ অভ্যর্থনা ভাষণে সর্বধর্ম সমন্বয় ও সহিষ্ণুতার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি সকলের অভিভাবক| রাষ্ট্রপতির পদ রাজনীতির ঊর্ধ্বে| রাষ্ট্রপতিকে সংবর্ধনা দিয়ে আমরা গর্বিত|’
এদিন রাষ্ট্রপতিকে নিজের অাঁকা চিত্র উপহার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী| অভিভূত হয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ জানিয়েছেন, ‘বাংলার উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমি অভিভূত| মুখ্যমন্ত্রীর অাঁকা ছবি উপহার পেয়ে আমি খুব খুশি| এই ছবি আমি রাষ্ট্রপতি ভবনে টাঙিয়ে রাখব| শুধু তাই নয়, চিরদিন তা আমার হৃদয়ে থেকে যাবে|’ এদিন ভাষণের শুরুতেই বাংলায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি|’ ইতিহাস স্মৃতিচারণ করে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল| এই রাজ্য রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ভূমি| জাতীয় সঙ্গীতের সৃষ্টি এখানেই| জয় হিন্দ-এর জন্মও বাংলায়| জাতীয়তাবাদের শিক্ষা প্রথমে এখানেই শুরু হয়| শিক্ষাক্ষেত্রে বরাবর পথ দেখিয়েছে বাংলা| সবমিলিয়ে দেশ গড়ার নেপথ্যে বাংলার অবদান অপরিশীম|’ আবেগতাড়িত হয়ে রাষ্ট্রপতি আরও বলেছেন, ‘দেশভাগের গভীর যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে বাংলাকে| তবুও রাজ্যের মানুষের হৃদয় খুব বড়|’ একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আশাপ্রকাশ করেছেন, ২০২২ সালে শক্তিশালী ভারত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বাংলা| সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মুখে উঠে আসে বাংলার প্রশংসা| তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা ছিল বাংলার| এই রাজ্য প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর| সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও উর্বর| সামাজিক উন্নয়নেও অগ্রণী বাংলা| ক্রীড়াক্ষেত্রেও রয়েছে একাধিক সাফল্য|’
মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ কলকাতায় আসেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ| বুধবার জোড়াসাঁকো যাওয়ার কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের| পরে ভবানীপুরে নেতাজির বাড়িতে যাবেন| সকাল ১০টা নাগাদ বোস ইনস্টিটিউটের শতবার্ষিকী উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি| পরে ১১.৪৫ মিনিট নাগাদ যাবেন বেলুড়মঠে| ৩০ নভেম্বর রাজধানী ফিরে যাবেন রাষ্ট্রপতি|