সাংবাদিক খুনের দায়ে ধৃত টিএসআর কমান্ডেন্ট ও জওয়ান পুলিশ রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ নভেম্বর৷৷ টিএসআরের দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডেন্ট তপন দেববর্মাকে সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিক

টিএসআর ২য় ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডেন্ট তপন দেববর্মা ও জওয়ান নন্দু রিয়াংকে বুধবার আদালতে তোলা হয়৷ ছবি নিজস্ব৷

হত্যাকান্ডের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ আগেই কমান্ডেটের দেহরক্ষী নন্দু রিয়াংকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সোয়া দশটা নাগদ তপন দেববর্মাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ গতকাল ঘটনার পর থেকেই তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে গোপন আস্তানায় রাখে পুলিশ৷ আজ তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়৷ গতকালই তার দেহরক্ষী নন্দু রিয়াংকে গুলি চালানোর দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়৷ গুলি চালানোর কাজে ব্যবহৃত হাতিয়ারটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ তাছাড়া দুজনকে এদিন আদালতে তোলা হলে বিচারক দশ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন৷ বর্তমানে অভিযুক্ত কমান্ডেন্ট তপন দেববর্মাকে রাখা হয়েছে এনসিসি থানায়৷ অন্যদিকে বোধজংনগর থানায় রাখা হয়েছে জওয়ান নন্দু রিয়াংকে৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে৷
পরিকল্পনা মাফিক ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয় সাংবাদিক সূদীপ দত্ত ভৌমিককে৷ মধ্য রাতে বিষয়টি সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়া গেলেও অভিযুক্ত কমান্ডেন্টকে গভীর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়৷ কড়া সুরক্ষার মধ্যে তাকে রাখা হয়েছে অন্যদিকে, প্রয়াত সাংবাদিকের গায়েব করে দেওয়া মোবাইল ফোনটি এখনও পাওয়া যায়নি৷ রাত প্রায় আড়াইটা নাগাদ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য প্রশাসনের এক আই জি স্তরের আধিকারিক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে ফোন করে টিএসআরের দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ানের সদর দপ্তর আরকে নগরে ফোন করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিককে৷ যথারীতি সেখানে যাবার পর সুদীপ দত্ত ভৌমিকের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথাও হয়৷ এরই মধ্যে একটি খাম হারিয়ে যাবার সূত্র ধরে সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিককে একে একেবারে গায়ে ঠেকিয়ে সিরিজ রাইফেল থেকে গুলি করা হয়৷ ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিক৷ কিন্তু, গুলি করার পর প্রায় দুই ঘন্টা ধরে সুদীপের মৃতদেহ ব্যাটেলিয়ান হেড কোয়ার্টারের ভেতরে ফেলে রাখা হয়৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, সাংবাদিক অভিযোগ সত্য৷ দীর্ঘ সময় নিহতের দেহ ব্যাটেলিয়ান হেড কোয়ার্টারের ভেতরেই ফেলে রাখা হয়৷ এই সময়ের মধ্যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টাও করা হয়৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকলেও একফোঁটা রক্তের চিহ্ণ দেখা যায়নি পরে৷ এমনকি কমান্ডেন্টের রুমেই সাংবাদিককে গুলি করা হলেও তার দেহ প্যারেড গ্রাউন্ডে পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়৷ হত্যার পর সাংবাদিকের দেহ লোকানোর চেষ্টা চলছিল৷ এ কারণেই দেহ টেনে হিঁচড়ে প্যারেড গ্রাউন্ডের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে রাজ্যের সাংবাদিকরা আগেই অভিমত ব্যক্ত করেছে৷ কিন্তু ঘটনাটি দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়তেই চাপে পড়ে যায় টিএসআর কমান্ডেন্ট৷ শেষ পর্যন্ত দেহটি প্যারেড গ্রাউন্ডে ফেলে রেখে চিত্রনাট্য তৈরী করে৷ এদিকে, এই ঘটনার পরেই অভিযুক্ত কমান্ডেন্ট তপন দেববর্মাকে দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে আগরতলায় গোপন স্থানে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এনে রাখা হয়েছিল৷ সকালে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ আদালতে নিয়ে যায়ে৷ সাথে নন্দু রিয়াংকেও আদালতে তোলা হয়৷