চোখের জলে বিদায়, পঞ্চভূতে বিলীন সাংবাদিক সুদীপের নশ্বর দেহ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ নভেম্বর৷৷ সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিক হত্যাকান্ডের পর রাজ্যজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে৷ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে৷ বুধবার সকাল থেকে জিবি হাসপাতালের মর্গের সামনে প্রয়াত সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিকের আত্মীয় পরিজন, বন্ধু-বান্ধব এবং সহকর্মীরা ভিড় জমাতে থাকনে৷ বহিঃরাজ্যে পাঠরত সুদীপের পুত্র ফিরে আসার পর মরদেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ সেখান থেকে কড়া পুলিশ প্রহারার মধ্য দিয়ে মরদেহ নিয়ে আসা হয় প্রয়াতের বাড়িতে৷ সেখানে প্রায়াতের মা, স্ত্রী এবং কন্যা কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ অকস্মিক ঘটনায় কার্যত বিব্রত, হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন প্রয়াতের পুত্র৷ রাজ্যে এসেই আজ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে৷ নির্বাক পুত্রকে একটু কাঁদানোর জন্য সব প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে৷ পরবর্তী সময়ে সুদীপের মৃতদেহ বাড়ি থেকে বের করে স্থানীয় একটি সামাজিক সংস্থার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জিবি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ের সামনে৷ সেখানে ব্যবসায়ীদের তরফে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়৷ ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল করে আগরতলা প্রেস ক্লাবে মরদেহ নিয়ে আসা হয়৷ এখানে সাংবাদিকবর্গ ছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ৷ মরদেহ সেখান থেকে প্রায়াতের কর্মস্থল স্যন্দন পত্রিকায় কার্যালয়ে আনা হলে তাঁর সহকর্মী সাংবাদিক, অ-সাংবাদিক কর্মীরা চোখের জলে তাঁকে শেষ বিদায় জানান৷ এরপর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় টিভি চ্যানেল ভ্যানগার্ডের সামনে৷ এই টিভি চ্যানেলেও তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন৷ সেখান থেকে মরদেহ বটতলা মহাশ্মশানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়৷ পথেই ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সরকারি আবাস৷ সেখানে আচমকা প্রয়াত সুদীপ দত্ত ভৌমিকের সহকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়ে হাজির হন৷ ঘিরে ফেলা হয় রাজপথ৷ মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে৷ সেখানে সাংবাদিকরা মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন৷ পরে পুলিশের তরফে দেওয়া সাংবাদিকদের নিরাপত্তা জ্যাকেট পুরানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেই৷ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করে রাখা হয়৷ জনসাধারণের সমস্যার কথা বিবেচনা করে পরে অবরোধ মুক্ত করা হয়৷ এরপর সুদীপের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বটতলা মহাশ্মশানে৷ সেখানেও সাংবাদিকবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বুদ্ধিজীবী, সমাজসেবী, মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডটিকে কেন্দ্র করে সারা রাজ্যে অস্থির পরিবেশ বিরাজ করছে৷ রাজধানী আগরলাতেও আতঙ্কের পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে৷